মহাসরস্বতী বাঁকুড়া
দীপান্বিতা কালীপুজোয় প্রত্যেক বছর সেজে ওঠে বাঁকুড়ার মহাসরস্বতী মন্দির। যে সময়ে গোটা বাংলা মেতে উঠবে কালী-আরাধনায়, সে সময়েই এই মন্দিরে পূজিত হবেন মহাসরস্বতী। এই অনন্য পুজোয় দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ ভিড় জমান। এখানে দেবীর এক বিশেষ মূর্তি দেখা যায়, যা অন্যান্য কালীপুজোর থেকে এই পুজোকে আলাদা করে দেয়।
এই পুজোর মূল দায়িত্বে গ্রামের চৌধুরী পরিবার। পরিবারের সদস্যদের কাছে জানা যায়, অনেক বছর আগে তাঁদের এক পূর্বপুরুষ বিন্ধ্যাচলে গিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি দেবীর স্বপ্নাদেশ পান। গ্রামে ফিরে দ্বারকেশ্বরের তীরে দেবীর মূর্তি স্থাপন করেন তিনি। মন্দির নির্মাণ করে শুরু হয় পুজো।
এখানে মহাসরস্বতী থাকেন সিংহের উপরে। তিনি অষ্টভূজা। বাঁ পায়ের নীচে থাকে অসুর। আবার দেবীর দু’পাশে আছে ডাকিনী-যোগিনী। আছেন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, নারায়ণ, গণেশ এবং দেবীর দুই সখীও। প্রতি অমাবস্যায় এখানে পুজো হয়। তা ছাড়া, দীপান্বিতা কালীপুজোর রাতে এই মহাসরস্বতীর পুজো হয় মহা আড়ম্বরে। পুজো উপলক্ষে চলে মেলা ও যাত্রাপালা।
এই পুজোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল অমাবস্যা তিথি দিনের যে সময়েই শুরু হোক না কেন, মায়ের পুজো রাত ১২টার আগে কখনওই হয় না। আগে মাটির মূর্তিতে পুজো করা হলেও এখন পাথরের মূর্তিতে চলে আরাধনা। তবে পুজোর দিনে এই পাথরের মূর্তিতে ছোঁয়ানো হয় মাটি। আর এই মাটি ছোঁয়ানোর জন্য থাকেন বিশেষ এক জন মানুষ। তিনি অন্য জায়গা থেকে এসে এই রীতি সম্পন্ন করেন। এখানে আগে বলির নিয়ম থাকলেও ২০২০ সালের পর থেকে সেই প্রথা বন্ধ করা হয়েছে। সারা রাত ধরে চলে পুজো। সকালে হয় পুষ্পাঞ্জলি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ