বীরভূমের মাটিতে বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক কালী মন্দির। এর মধ্য়ে জাগ্রত মন্দিরের সংখ্যা নেহাত কম না। লোকমতে তেমনই এক মন্দির হল গুহ্য কালী মন্দির।
বীরভূম নলহাটির আকালিপুরের গুহ্যকালিকা মন্দির। এই এলাকাটি মহারাজ নন্দকুমারের জন্মস্থান বলেই পরিচিত। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এই গুহ্যকালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বয়ং মহারাজ নন্দকুমার।
দেবীর স্বরূপ এখানে খানিকটা অন্যরকমই বটে! এখানে দেবীকে দেখা যায় মন্দিরের গর্ভগৃহের পঞ্চমুন্ডির আসনের উপর সর্পবেদীতে আসীন এবং সর্পের আবরণে ভূষিতা। কষ্টি পাথরের তৈরি এই দেবী মূর্তি নিয়েও রয়েছে অসংখ্য ইতিহাস।
কথিত, জরাসন্ধ নাকি স্বপ্নাদেশে এই দেবী মূর্তি পেয়ে পাতাললোকে নিয়মিত পুজো করতেন। তাঁর মৃত্যুর বহুদিন পরে রানী অহল্যা বাঈ এই মূর্তিটিকে মাটির তলা থেকে খুঁজে পান। পরে তিনি এই মূর্তিটি চৈত সিংহকে দান করেন।
পরবর্তী সময়ে নন্দকুমার মহারাজ পদে আসীন হওয়ার পরে ফের স্বপ্নাদেশ পান। সেই স্বপ্নাদেশেই আকালিপুরের গুহ্যকালিকা মন্দির স্থাপন করেন নন্দকুমার।
মায়ের এই মন্দির নিয়েও বিভিন্ন মত প্রচলিত রয়েছে বীরভূমের বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁদের কাছে এই দেবী এতটাই জাগ্রত যে তিনি কাউকে খালি হাতে ফেরান না।
দেবীর এই মন্দিরটি ইটের তৈরি আটকোণা এবং দক্ষিণমুখী। মন্দিরের গর্ভগৃহের চারদিকে প্রদক্ষিণ করার পথ আছে।
মোট তিনটি প্রবেশদ্বার রয়েছে মন্দিরের। যেগুলি পাথরের তৈরি।
কথিত, এই মন্দির তৈরির সময় দেওয়ালে ফাটল ধরেছিল। পরে তা মেরামত করতে গেলে দেবী স্বপ্নে দেখা দেন ও নির্দেশ দেন যে তাঁর মন্দিরের প্রয়োজন নেই। দেবীর সেই নির্দেশ স্বরূপ এখনও মন্দিরের উত্তর-পূর্ব দিকে দুটি ফাটল দেখা যায়।
প্রতি বছর কালী পুজোর সময়, দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন গুহ্যকালীর পুজো দিতে। অমবস্যার রাতে মহা আড়ম্বরে হয় দেবীর আরাধনা।