পাথরের উপরে পাথর। এমন ভাবে বসানো, দেখলে মনে হবে এক ধাক্কায় বুঝি ভেঙে পড়বে গোটা মন্দিরটাই। মধ্যপ্রদেশের মোরেনা এলাকায় ১৫০ ফুট উঁচু এই মন্দিরের বাসিন্দা দেবাদিদেব মহাদেব। সেই একবিংশ শতাব্দী থেকে তিনিই ঝড়-ঝাপটা থেকে রক্ষা করে চলেছেন এই মন্দিরকে। স্থানীয়দের বিশ্বাস- মানুষ নয়, এর নির্মাণ করেছিল ভূতেরা! তা-ও আবার মাত্র এক রাতের মধ্যেই!ইতিহাস অবশ্য অন্য কথা বলে। এই মোরেনা অঞ্চলে রাজত্ব ছিল খুশওয়া বংশের। রাজা কীর্তিরাজের রানি কাঁকনবতী ছিলেন শিবের পরম ভক্ত।
তাঁরই অনুরোধে রাজা এই মন্দির নির্মাণ করেন। রানির নামে মন্দিরের নাম রাখা হয় কাঁকনমঠ। মন্দিরের গঠনশৈলী যেমন অবাক করা, তেমনই অবাক হতে হয় এর নির্মাণে ব্যবহার করা পাথর দেখলে। আশপাশই শুধু নয় ওই অঞ্চলের কোথাও এই ধরনের পাথরের কোনও অস্তিত্ব নেই। এত ভারী পাথর তবে এল কোথা থেকে! রহস্য এখানেই থেমে নেই।
মন্দিরের অনেক জায়গা লক্ষ করলে দেখা যাবে, সেখানে কাজ অসমাপ্ত রয়ে গিয়েছে। প্রচলিত বিশ্বাস বলে, রাতের অন্ধকার কাটতেই ভূতের দল কাজ বন্ধ করে দেয়। সে কারণেই মন্দির পুরোপুরি তৈরি হয়নি। তার কিছু জায়গা এখনও ফাঁকা। স্থানীয়রা বলেন, ভূত চতুর্দশীর রাতে এই মন্দির থেকে ভেসে আসে কাঁসর-ঘন্টার আওয়াজ। কে বা কারা পুজো করছে, নিঝুম রাতে মন্দিরে গিয়ে দেখার সাহস কখনও হয়নি কারওরই। এমনকি, মন্দিরের অসমাপ্ত কাজে হাত দেওয়ারও সাহস হয়নি কোনও স্থাপত্যবিদের। ইতিহাসও কিন্তু মন্দিরকে ঘিরে থাকা এই রহস্যের সমাধান করতে পারেনি। ভূত চতুর্দশীর গভীর রাতে কে পুজো করেন মন্দিরে? রানি নাকি ভূতেদের দলবল? সেই ধোঁয়াশার চাদরে এখনও ঢাকা কাঁকনমঠ।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।