মাত্র ৪৫০ টাকা হাতে পথচলা শুরু। নেপথ্যে ছিল চার বন্ধুর মিলিত উদ্যোগ। আজ ৫০ বছর পেরিয়েছে গোপালপুরের বিখ্যাত জগদ্ধাত্রী পুজোর। প্রথমে শুরু হয়েছিল নেহাতই পাড়ার পুজো হিসেবে। ধীরে ধীরে তা আরও বড় আকার নেয়। স্থানীয় মানুষ সরাসরি যুক্ত হন এই উদযাপনে। সকলে মিলে হাত লাগিয়ে ক্রমশ গড়ে ওঠে গোপালপুরের নিজস্ব জগদ্ধাত্রী পুজো।
সুকুমার অধিকারী, বাদল মণ্ডল, রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল আর ভৈরব গড়াই- এই চার বন্ধুর সম্মিলিত চেষ্টায় ১৯৭২ সালে শুরু হয়েছিল দেবী জগদ্ধাত্রীর এই আরাধনা। একদম অন্য পুজোর আমেজ-অনুভূতির খোঁজে এই পথে হাঁটা। এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সুকুমার অধিকারী প্রয়াত হয়েছেন আগেই। তাঁর পূর্ববর্তী জীবন কেটেছিল কৃষ্ণনগরে। গোপালপুরের এই জগদ্ধাত্রী প্রতিমা তাই বরাবরই তৈরি হয় কৃষ্ণনগরের ধাঁচে। মণ্ডপে মা আসেন সপ্তমীর দিনে। পরবর্তীতে গোপালপুর জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি গঠন করা হয়েছে। দেখতে দেখতে উদযাপনের বয়স দেখতে দেখতে পঞ্চাশ পার। পুজোর বাজেটও বেড়ে হয়েছে লক্ষাধিক টাকার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে জৌলুস ও জাঁকজমক। গোপালপুর এলাকার মানুষের কাছে দূর্গাপুজোর থেকেও এই জগদ্ধাত্রী পুজোর উন্মাদনা অনেক গুণে বেশি। উৎসবের দিনগুলোয় গোটা এলাকা গমগম করে। বিয়ে বা কর্মসূত্রে অন্যত্র চলে যাওয়া মানুষেরা এই সময়টায় ফিরে আসেন নিজের পাড়ায়।
এই পুজোয় নবমীর দিনেই একসঙ্গে হয় সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পুজো।পাড়ার বয়স্কাদের বিশেষ নির্দেশে প্রতিমা বিসর্জন করা হয় দ্বাদশীর দিনে। প্রথম দিকে পুজো উপলক্ষে নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হত। পরবর্তীকালে নানা আর্থিক জটিলতার কারণে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গোপালপুরের এই জগদ্ধাত্রী পুজোয় কোনও রকম চাঁদা তোলার চল নেই। আজও যে যেমন পারেন, স্বেচ্ছার অনুদানে এই পুজো সম্পন্ন হয়। তাতেই দেবীর এই অন্য রকম আরাধনা হয় সাড়ম্বরে।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।