চতুষ্কোণ শঙ্কু আকৃতির মন্ডপ। কৃষ্ণের ত্রিভৃঙ্গমুরারী ভঙ্গিমাধারী মা দুর্গা। গোটা ভাবনার মূল কথা শক্তির ভাবপ্রকাশের সঙ্গে শৈল্পিক বিন্যাসের মেলবন্ধন। সুরে সুরে যার মূর্ছনা মন্ডপের অন্দরের জন্য বেঁধেছেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সুযোগ্যা নাতনি মৌজিশা চট্টোপাধ্যায়।
পৌরাণিক থিম, তার সঙ্গে মানানসই প্রতিমা ও আবহ সঙ্গীত মিলেমিশে সালকিয়া আলাপনি-র ৭৬তম দুর্গা পুজো জমজমাট। এঁদের পুজো কমিটির প্রচার সচিব সায়ন্তন চক্রবর্তী আনন্দবাজার অনলাইন-কে জানাচ্ছেন, সালকিয়া আলপনি-র এবারের ভাবনার শীর্ষক 'বহিরঙ্গা'।
গোটা ভাবনা যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত, এঁদের সেই থিম শিল্পী তুহিন ঘোষের ব্যাখ্যায়, মানুষের ষড়রিপু মানুষকে চালনা করে। ভাল মন্দ বিচারের পথ নির্দেশ করে। অথচ, মানুষের সৃষ্টি পরমেশ্বর করেছেন অন্তরাত্মা থেকে। কিন্তু সেই মানুষ জীবন নির্বাহ করে চলেছে বহিরঙ্গ মারফত- ষড়রিপু দ্বারা। সেই বহিরঙ্গ থেকেই বহিরঙ্গা! আবার জীবন মানে রং। মানুষের আনন্দ-দুঃখ, হতাশা-সাফল্য, শোক-আহ্লাদ, সব যেন একেকটি রঙের প্রতীক। সে জন্য গোটা মণ্ডপটি মূলত বিভিন্ন রঙিন প্রচুর ত্রিভুজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। এখানকার দুর্গা প্রতিমার ভঙ্গিমায় শ্রীকৃষ্ণের ছায়া, কারণ, ব্রহ্মা আমাদের সৃষ্টি করেন, মহাদেব ধ্বংস করেন, কিন্তু জীবনভর লালন করেন বিষ্ণু অর্থাৎ নারায়ণ। কৃষ্ণ নারায়ণের রূপ। মা দুর্গাকে মর্ত্যের কন্যা ভাবা হয়, যিনি শিবের সঙ্গে বিয়ের পর দেবলোক বাসিনী। তাই মর্ত্যবাসীর পালন কর্তা নারায়ণের অবতার শ্রীকৃষ্ণের এক বিশেষ ভঙ্গিমার অনুকরণে এঁদের মা দুর্গা!
ভাবনা : বহিরঙ্গা
ভাবনায় ও প্রতিমা শিল্পী : তুহিন ঘোষ
আবহ সঙ্গীত : মৌজিশা চট্টোপাধ্যায়
কী ভাবে যাবেন : হাওড়ায় জি টি রোড দিয়ে সালকিয়া পৌঁছে চৌরাস্তার পরেই বাঁধাঘাট। সেখানেই এই পুজো।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।