২৭৫ বছরের পুরনো জানবাজারের রানী রাসমণি বাড়ির দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন রানীর শশুর প্রীতিরাম দাস ১৭৯০ সালে। পরবর্তী কালে ১৮৩৬ সালে এই পূজোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন রানী স্বয়ং। জানা যায় এইসময় রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগরের মতন মহান ব্যাক্তিত্বের আগমণ ঘটত এই বাড়ির দুর্গাপুজোয়। শিল্পী লালু চিত্রকরের নিপুণ শিল্পকর্মে একচালা বিশিষ্ট দেবী মূর্তি টি সম্পূর্ন ভাবে হাত দিয়ে গড়া হয় কোন ছাচে নয়। রানীর বাড়িতে দেবী তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা ও শোলার সাজে সজ্জিতা। প্রতিপদ থেকে বসে বোধন ।আটদিন ব্যাপী বোধনের পরে ষষ্ঠীর দিন হয় মায়ের চক্ষুদান। আগে সপ্তমী থেকে নবমী অবধি ছাগবলী র রীতি ছিল যা বর্তমানে লুপ্ত।
মাতৃভোগের উপাচার হিসেবে লুচি, বিভিন্ন ভাজা ও ঘরের তৈরী খাজা,গজা,প্যারা, প্রভৃতি মিষ্টি সাজিয়ে দেওয়া হয়। আগে সন্ধি পুজোয় ৪০ মণ চাল এর নৈবদ্য দেওয়া হত যদিও এখন ১মণ চালের নৈবদ্য দেওয়া হয়। এই আভিজাত্য পূর্ণ বাড়ির দুর্গা পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য এই যে এই বাড়িতে সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত চলে কুমারী পুজো। মাঝ গঙ্গায় জোড়া নৌকায় আগে বিসর্জন হলেও এখন বাহকের কাধে করে ই বাবুঘাটে মায়ের ভাসান হয় । শোনা যায় ১৮৬৪ সালে শ্রী রামকৃষ্ণ স্বয়ং সখি বেশে রানী রাসমণি র বাড়িতে দুর্গা পুজো করে যান।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।