Durga Puja 2019 Ananda Utsav 2019 Pujo Porikroma Durga Puja Celebration

পুরনো রীতিতে পুজোর ঢাকে কাঠি গাড়ুই গ্রামে

২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে গাড়ুই গ্রামের মাঝামাঝি রয়েছে দুর্গা মন্দির।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৮:২৪
Share:

রীতি মেনে আসানসোলের গাড়ুই গ্রামে শুরু হয়ে গেল দুর্গাপুজো। সোমবার সকাল থেকেই গ্রামে সাজ-সাজ রব। আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই দুর্গামন্দিরে উপস্থিত হয়ে আচার মেনে পুজোর বারি আনার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বাসিন্দারা জানালেন, এ দিন থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় মন্দিরে পুজো হবে। দশমীর সকালে ঘট বিসর্জনের পরে শেষ হবে পুজো।

Advertisement

২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে গাড়ুই গ্রামের মাঝামাঝি রয়েছে দুর্গা মন্দির। বাসিন্দারা জানান, কে বা কারা কবে এই পুজো শুরু করেছিলেন তার কোনও প্রামাণ্য তথ্য কারও কাছে নেই। তবে কথিত আছে, এই পুজোর বয়স কমপক্ষে সাতশো বছর। মন্দিরের পুরোহিত বিপদতারণ চট্টোপাধ্যায় জানান, গ্রামের শেষ প্রান্তে খড়ের একটি আটচালা মন্দিরে পুজো শুরু হয়েছিল। প্রায় তিনশো বছর আগে গ্রামের দুই বিত্তশালী বাসিন্দা উদয় মুখোপাধ্যায় ও মুরলীধর চট্টোপাধ্যায় গ্রামের মাঝখানে দুর্গামন্দির নির্মাণের জন্য জমি দান করেন। পরবর্তীকালে খড়ের আটচালা থেকে পুজোটি পাকাপাকি ভাবে বর্তমান মন্দিরে চলে আসে। পুজোর দিনগুলিতে এখানে চাঁদের হাট বসে। তিনি আরও জানান, প্রাচীন রীতি মেনে আজও জীতাষ্টমীর পরের দিন থেকে এখানে পুজো শুরু হয়। এই রীতিটিকে বলা হয় কৃষ্ণনবম্যাদি কল্পারম্ভ। এ দিন থেকে প্রতিদিন সকালে মন্দিরে চণ্ডীপাঠ হবে। সন্ধ্যায় হবে আরতি। এ দিন সকালে দেখা গেল, গ্রামের বাসিন্দারা দল বেঁধে ঢাক ও কাঁসর বাজিয়ে পাশের একটি পুকুর থেকে বারি এনে মন্দিরে রেখে পুজো শুরু করলেন।

বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সন্ধিপুজো শেষ হওয়ার পরে মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত মানুষজন হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে থাকেন। কারও মুখে কোনও শব্দ থাকে না। এ ভাবে কিছুক্ষণ সময় কাটার পরে প্রতিমার হাত থেকে ফুল বা ফল কিছু একটা গড়িয়ে মাটিতে পড়ে। তার পরে ছাগ বলি দিয়ে পুজো শেষ হয়। গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এই মুহূর্তটি দেখার জন্য মন্দির চত্বরে গোটা গ্রাম ভেঙে পড়ে। ওই গ্রামে আরও তিনটি পুজো হয়। তবে এই আদি পুজো বসার পরেই বাকি পুজোগুলি শুরু হয়। গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা দক্ষিণারঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা বংশ পরম্পরায় এই পুজোর সঙ্গেই জড়িয়ে আছি। পূর্বপুরুষেরাও এই পুজো শুরুর ইতিহাস জানাতে পারেননি।’’

Advertisement

নাই বা জানা গেলে ইতিহাস। তাতে কিছু যায় আসে না বলে জানালেন গৌর মুখোপাধ্যায়, নীরোদ চট্টোপাধ্যায়, শচীন চট্টোপাধ্যায়রা। তাঁরা বলেন, ‘‘বছরের এই কয়েকটা দিনের অপেক্ষাতেই আমরা থাকি। পুজো শুরু হয়ে গেলে সময় কেমন কেটে যায় বুঝতেও পারি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement