মহা ধুমধামের সঙ্গে দেবীকে বিদায় জানানোর রীতি রয়েছে। বিশালাকার দেবীপ্রতিমা-সহ বাকি প্রতিমাকে ঠাকুরদালান থেকে বার করে দড়ি দিয়ে টেনে এনে ওই সামান্য পথ অতিক্রম করে পুকুর পর্যন্ত নিয়ে আসতে অনেকটা সময় লাগে। বাজি, পটকা, লোকের ভিড়, ধুনুচি নাচ, সিঁদুর খেলা— সব কিছু মিলিয়ে এই উৎসব অন্য মাত্রা পায়। অনেকটা মহারাষ্ট্রের গণপতি বিসর্জনের শোভাযাত্রার মতো ছবি তৈরি হয়। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা বা অরাজকতা চোখে পড়ে না। ইতিহাস-নির্ভর ৫০০ বছরের বেশি দিনের এই পুজোয় মণ্ডপ বা প্রতিমার কোনও পরিবর্তন নেই। নতুন কোনও বাড়তি আকর্ষণও নেই। প্রাচীন রীতিতেই, একই উপচারে পুজো হয়। তবু আকর্ষণ কমেনি এতটুকু।
ব্যক্তিত্বময়ী এই দেবীকে দেখলে সাহসের সঞ্চার হয় মনে। প্রতিটি নারীই তো কোনও না কোনও ভাবে দুর্গাই! দশ হাতের প্রকরণ আসলে শক্তির রূপক। নিরঞ্জনের দিন সিঁদুরের রঙে আরও রাঙা হয়ে ওঠা দেবীর মুখ যেন সারা বছরের জন্য সাহস আর শক্তির সঞ্চার ঘটায় সবার মনে। এই পুজো ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং উত্তরবঙ্গের স্বকীয়তার উজ্জ্বল পরিচয়।
(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)