300 year old Jagadhatri puja in Kalna

কালনার ৩০০ বছরের প্রাচীন জগদ্ধাত্রী পুজোয় দেবীর ভোগে থাকে হরেক রকম মাছ

তৎকালীন চন্দ্রপতি গোষ্ঠীর এক গৃহবধূ স্বপ্নাদেশ পান এবং বাড়ির কাছে পুকুরে দেবী জগদ্ধাত্রীর সাক্ষাৎ মেলে। এর পরেই সেই স্থানে হোগলাপাতার ছাউনি দিয়ে গড়া হয় মণ্ডপ। সেখানেই প্রথম দেবীর পুজো শুরু হয়।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

কালনা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ১১:৫৬
Share:

কালনার জগদ্ধাত্রী

বর্ধমানে কালনার ধাত্রীগ্রামে জগদ্ধাত্রী পূজিত হয়ে আসছেন দীর্ঘ ৩০০ বছর ধরে। কথিত, ধাত্রীমাতা জগদ্ধাত্রীর নামেই এই জায়গার নামকরণ। কালনার এই জগদ্ধাত্রীর কতখানি মাহাত্ম্য, তা এর থেকেই অনুমেয়। শোনা যায়, তিনশো বছর আগে নদিয়া জেলায় ব্রহ্মশাসন মহল্লা নামে এক জনপদ ছিল। সেখানকার চন্দ্রপতি গোষ্ঠীর এক পণ্ডিত সপরিবার ধাত্রীগ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন এক সময়ে। ধাত্রীগ্রামে শিক্ষার প্রসারে তিনি বেশ বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। কয়েকটি সংস্কৃত শিক্ষার গুরুকুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নিজের হাতে। সেখানে সংস্কৃত শিক্ষার পাঠ দেওয়া হতো। নবদ্বীপ থেকে সেই সময়ে পণ্ডিতরা এই টোলে এসে শিক্ষা দান করতেন।

Advertisement

শোনা যায়, সেই সময়েই তৎকালীন চন্দ্রপতি গোষ্ঠীর এক গৃহবধূ স্বপ্নাদেশ পান এবং বাড়ির কাছে পুকুরে দেবী জগদ্ধাত্রীর সাক্ষাৎ মেলে। এর পরেই সেই স্থানে হোগলাপাতার ছাউনি দিয়ে গড়া হয় মণ্ডপ। সেখানেই প্রথম দেবীর পুজো শুরু হয়। জগদ্ধাত্রীর এক অন্য রূপে পুজো শুরু হয় এখানে। দেবী ছিলেন নরসিংহ বাহনে। স্থানীয় মানুষ এই জগদ্ধাত্রীকে ধাত্রীদেবী হিসাবে পুজো করতে শুরু করেন তখন থেকেই।

বর্তমানে এলাকার বাসিন্দাদের মতে, এই দেবী খুবই জাগ্রত। অনেকে ধাত্রীগ্রাম নামকরণের নেপথ্যে দেবীর মাহাত্ম্যকেই কারণ হিসাবে দেখেন। প্রায় তিনশো বছরের প্রাচীন রীতি মেনে এখনও এই পুজো করা হয়। নবমীর দিন এখানে মাছের নানা পদ ভোগ হিসাবে মায়ের কাছে অর্পণ করা হয়। পরে মালশা করে সেই ভোগপ্রসাদ ভক্তদের বিতরণ করা হয়, যা নিতে ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

এই পুজোয় ভোগ হিসাবে দেওয়া হয় বাসমতি চালের খিচুড়ি, তেরো রকমের ভাজা, তরকারি, পায়েস-সহ মাছের নানা পদ। পুজোর কয়েক দিন ধরে গ্রামজুড়ে থাকে উৎসবের মেজাজ। আশপাশের প্রায় ২০ থেকে ২৫টি গ্রামের মানুষ অংশগ্রহণ করেন এই পুজোয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল সংগ্রহ করা হয় দরিদ্রসেবার উদ্দেশ্যে। অনেকে মন্দিরের পাশের পুকুর থেকে স্নান করে নিজেদের মনস্কামনা পূরণের জন্য দন্ডিও কেটে থাকেন।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement