বাঁকুড়ার ক্ষ্যাপা কালী
পচিমবঙ্গের প্রায় প্রত্যেক জেলায় একটা না একটা ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো মিলবেই! সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি বাঁকুড়াও। এই জেলার সোনামুখী এক অতিপরিচিত জায়গা, যা কার্তিক পুজো এবং কালীপুজোর জন্য সমগ্র বাংলায় প্রসিদ্ধ। এখানেই আছেন বাঁকুড়ার বিখ্যাত শিকলবাঁধা ক্ষ্যাপা কালী। কেন এখানকার কালীর পায়ে শিকল পড়ানো থাকে, তার উত্তর খুঁজতে উল্টে দেখা যাক ইতিহাসের পাতা।
এই পুজো নাকি প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো। সে সময়ে বাঁকুড়া ছিল বন জঙ্গলে ঘেরা। কথিত, এক দিন তৎকালীন বাঁকুড়া জনপদের এক ছোট গ্রাম কুমোর পাড়ায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। বিপদে পড়ে গরিব কুমোররা মা কালীর কাছে কাতর অনুরোধ করে জানান, তাঁদের পাড়াকে রক্ষা করার জন্য। হঠাৎই কোনও এক অবিশ্বাস্য দৈবিক শক্তির জোরে আগুন আয়ত্তে এসে যায়। অবাক হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দেখেন, কালীমন্দিরের মায়ের চার হাতের মধ্যে উপরের দুই হাত কালো হয়ে গিয়েছে। ঠিক যেমনটা আগুনে পুড়ে গেলে হয়। তখন থেকেই বিশ্বাস, ক্ষ্যাপা মা নিজের হাতে এই আগুন নিভিয়েছিলেন। তাই আগুনের আঁচেই তাঁর হাত কালো হয়ে যায়। সেই থেকে বিশাল সমারোহে ক্ষ্যাপা কালীর পুজো শুরু।
তবে এই মা কালীকে 'ক্ষ্যাপা কালী' কেন বলে, তা নিয়ে আছে আর এক গল্প। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস, এই মা কালী খুবই শান্ত ও স্নিগ্ধ। কিন্তু মায়ের পুজোর কোনও ব্যাঘাত বা বিঘ্ন ঘটলে তিনি নাকি রেগে গিয়ে মন্দির ছেড়ে পালিয়ে যান। তাই পুজোর দিন থেকে মায়ের পিছনের পা শিকল দিয়ে বাঁধা থাকে। মায়ের প্রতিমা বিসর্জনের দিনে শিকল মায়ের পা থেকে খুলে নিয়ে তবেই বিসর্জন হয়।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ