ঈশ্বর কোনও বিশেষ ধর্মের নয়, কারও একারও নয়। ভক্তি থাকলে তিনি আসেন সর্ব-ধর্ম-বর্ণ সমন্বয়ে সকল মানুষের কাছে।
তারই প্রমাণ পুরুলিয়ার চরণপাহাড়ি কালী। সাত দশক পেরিয়ে রীতি মেনে আজও এখানে সর্বধর্ম সমন্বয়ে পূজিত হয়ে আসছেন মা কালী।
তখন ব্রিটিশ শাসনকাল। পুরুলিয়ার পুঞ্চায় ইংরেজরা একটি পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি করেন। সেখানকার অফিসার ছিলেন এক ধর্মপ্রাণ মুসলিম, জিটি লতিফ।
ফাঁড়ি থেকে কিছুটা এগিয়ে জঙ্গলে ঘেরা দুর্গম পাহাড়ি এলাকা। জনমনিষ্যি নেই বললেই চলে।
দুর্গম হওয়ার কারণে এখানে নাকি খুব কম মানুষ আসতেন। বেশির ভাগ তান্ত্রিকরাই আসতেন তন্ত্র সাধনা করতে।
ওসি এক দিন সেই এলাকা ঘুরে দেখতে গেলেন। হঠাৎই পাথরের গায়ে দেবীর পায়ের ছাপ দেখেন। এর পরেই তিনি স্বপ্নাদেশ পান।
তারপর থেকেই এখানে পুজো শুরু করেন ওই পুলিশ অফিসার। শোনা যায়, যেহেতু মায়ের পায়ের ছাপ এই পাহাড়ি অঞ্চলে পড়েছিল, তাই এলাকাটির নাম হয় চরণপাহাড়ি।
চরণপাহাড়ি কালীর মন্দিরটি উঁচু এক টিলার উপরে। দূর-দূরান্ত থেকে আজও বহু ভক্ত আসেন মায়ের আরাধনা করতে।
দীপান্বিতা অমাবস্যায় উপচে পড়ে ভিড়। ৭৭-৭৮ বছর হয়ে গেল। শুধু হিন্দুরা নন, সম্প্রীতির আবহে আজও সকল ধর্মের মানুষ মায়ের পুজোর আয়োজন করেন। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।