বহু যুগ আগে ডাকাতেরা মা কালীর পুজো করেই তবেই বেরোত। বলতে গেলে ডাকাতদের একমাত্র অধিষ্ঠাত্রী দেবী ছিলেন মা কালী। এমনই এক ডাকাত কালী আছেন হুগলি জেলার পাণ্ডুয়ার শিমলাগড়ে।
কথিত, আনুমানিক ৫০০ বছরের পুরনো এই শিমলাগড়ের মা কালী। বর্তমানে যেখানে এই পুজো করা হয়, সেই জায়গাটি আগে ঘন জঙ্গল ও জলাভূমিতে পূর্ণ ছিল। এখানেই ছিল এক শ্মশানও।
সেই সময়ে মানুষ ওই অঞ্চলে যেতে ভয় পেত। লোকমুখে শোনা যায়, এক কাপালিকের তালপাতার ছাউনি দেওয়া এক ঘর ছিল সেখানে। পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে মা কালীর সাধনা করতেন তিনি।
কথিত, ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ঘন জঙ্গলে এই মন্দিরে কালীকে তুষ্ট করতে নরবলি দিত ডাকাতেরা। বাংলার কুখ্যাত ডাকাত, রঘু ডাকাতও এক সময়ে এখানে মা কালীর আরাধনা করেছেন বলে জানা যায়।
আবার কেউ কেউ বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সৈন্য চলাচলের জন্য এই মন্দির সংলগ্ন রাস্তার মেরামত করা হয়।
এর পর থেকেই মানুষ ভয় কাটিয়ে এই মন্দিরে যেতে সাহস পান। আস্তে আস্তে এই মন্দিরের গুরুত্ব বাড়তে থাকে এবং আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষের সমাগম শুরু হয়।
এখানে কালীকে দক্ষিণা কালী হিসাবে পুজো করা হয়। শোনা যায়, অনেক আগে এক তান্ত্রিক নরবলির পরে ছিন্নবিচ্ছিন্ন মাথাটি দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন এই মন্দিরে।
তার পর থেকেই এখানে ছাগবলির প্রথা শুরু। এই মন্দিরে প্রতিদিন নিত্যপুজোর আয়োজন করা হয়। বিশেষত কালীপুজোর দিন এই মন্দির জুড়ে অগণিত ভক্তের ভিড় জমে।
দেবীকে ১০৮ রকমের ভোগ নিবেদন করা হয়। মনস্কামনা পূরণে অনেকে মন্দির সংলগ্ন এক গাছে ঢিল বেঁধে যান।
প্রথমে এই মন্দিরটি মাটির ছিল। পরবর্তীতে সংস্কার করে একটি পাকা গাঁথনির বড় মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয় মা কালীকে। এখানে পাথরের মূর্তিতে দেবীকে পুজো করা হয়। প্রতি বছর পুজোর আগে রং করা হয় মূর্তিটি। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ