আজ কৌশিকী অমাবস্যা। ভাদ্র মাসের এই অমাবস্যা পালিত হয় কৌশিকী অমাবস্যা হিসেবে। কথিত আছে, আজকের দিনেই জন্ম হয়ে ছিল দেবীর নব রূপের এক রূপ দেবী কৌশিকীর। তাই এই দিন পালিত হয় কৌশিকী অমাবস্যা রূপে। আজকের দিনে দেবী কালী পূজিত হন বিশেষ সমারোহের সঙ্গে।
কালীর কথা উঠলেই প্রথম আমাদের মাথায় আসে সতী পীঠের এক পীঠ তারাপীঠের কথা। তারাপীঠে এই দিন পালিত হয় বিশেষ ধুমধামের সঙ্গে। কথিত আছে, এই দিনেই নাকি তারাপীঠ শ্মশান চত্বরে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা। তাই এই অমাবস্যায় মা পূজিত হন বিশেষ রূপে। তবে শুধু মন্দির নয়, মায়ায় মেতে ওঠে শ্মশান চত্বরও। কী কী বিশেষ ব্যবস্থা থাকে জানাচ্ছেন মন্দিরের সেবাইত শ্যামাচরণ চক্রবর্তী।
তিনি জানালেন, আলোয় সেজে উঠেছে মন্দির চত্বর। ফুলের মালায় বিশেষ ভাবে সাজানো হয়েছে দেবীকে। প্রতি দিনের মতো গর্ভ গৃহ থেকে বার করে স্নান করানো হবে মাতৃ মূর্তি। রাত ন’টার পর সেই মূর্তি দেখতে যেতে পারবেন সাধারণ মানুষ।
চমক রয়েছে দেবীর ভোগেও। দুপুরে এবং সন্ধে বেলা রয়েছে আলাদা আলাদা ভোগ। দুপুরে রয়েছে অন্ন ভোগের ব্যবস্থা। মেনুতে রয়েছে পোলাও, পাঁচ রকম ভাজা, ইলিশ, শোল সমেত পাঁচ রকমের মাছ, তরকারি, মিষ্টি নিয়ে মোট ৫১ রকমের পদ। আবার রাতে রয়েছে শীতল ভোগের ব্যবস্থা। তাতে থাকবে লুচি, ভাজা, মিষ্টি, মোহন ভোগ ইত্যাদি।
মন্দির চত্বরে ভক্ত সমাগম ধুমধাম থাকলেও নিশ্চুপ থাকে শশ্মান ঘাট। এ যেন এক অন্য জগৎ। মায়ের আদরের ভক্তরা এখানে মেতে ওঠে আরাধনায়। তন্ত্র সাধনা চলে সারা রাত ধরে। অঘোর বাবা এবং তান্ত্রিকদের মন্ত্র উচ্চারণে তৈরি হয় এক মায়াবী ভয়ার্ত পরিবেশের। ধুনি জ্বালিয়ে ধ্যান মগ্ন থাকেন তান্ত্রিকেরা। শত্রু নিবারণ যজ্ঞ থেকে কালা যাদু চর্চা হয় সব কিছুরই।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।