ঝড়জলের রাতে যখন গোটা রাজ্য ঘুমিয়ে, জেগে রয়েছেন একদল ‘মানুষ’। তাও আবার নির্জলা উপবাস রেখে। সবটাই নাকি ঈশ্বরকে তুষ্ট করার জন্য। ভাবছেন তো আবার কোন দেবতার পুজো? আসলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের দিনগুলোতে মানুষ যাতে নিরাপদে থাকেন, তার জন্য একাধিক জায়গায় বিশেষ বিশেষ দেবতার পুজো করার প্রথা রয়েছে। এ দিন তেলঙ্গানাতেও দেখা গেল এমনই দৃশ্য। মানুষ যাতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পান, তার জন্য ঈশ্বরের আরাধনায় মগ্ন হলেন সেই স্থানের রূপান্তরকারী সম্প্রদায়। ২৪ ঘণ্টার জন্য নির্জলা উপবাস, সেই সঙ্গে সারা রাত জেগে এই বিশেষ পুজো অর্চনায় মন দিলেন তাঁরা।
পরিসংখ্যান বলছে ভদ্রদ্রি কোথাগুদেম জেলার অঞ্চলটি প্রতি বছর ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার কারণে অভাবনীয় ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। দুর্যোগের দিনে সবথেকে বেশি মাসুল গুণতে হয় ভদ্রচলম শহরের স্থানীয় নাগরিকদের। পাশাপাশি খারাপ আবহাওয়ার দরুণ দক্ষিণের ‘অযোধ্যা’ নামে পরিচিত সীতারামচন্দ্র স্বামীর দর্শনের জন্য আসা ভক্তদেরও থাকে বিপদের সম্ভাবনা।
রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের মানুষেরা মনে করেন, এই পুজো মানুষের রক্ষা এবং নিরাপত্তার স্বার্থেই। বলা বাহুল্য, এর সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন স্থানীয়রাও। তাঁদের মতে এটি একটি দারুণ উদ্যোগ। কোনও মূর্তিপুজো নয়, তাঁদের দেবতা রয়েছেন তাঁদের মধ্যেই। সম্প্রদায়ের একজনকে সাজানো হয়েছিল দেবী মাতঙ্গীরূপে। পরনে সবুজ শাড়ি, গলায় মালা। একটি রুপোর পাত্রে দুধ বহন করে গোদাবরী নদীতে নিবেদন করে পুজো সমাপ্ত করেছিলেন তাঁরা।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।