সিমসা মাতা
পাহাড়ে ঘেরা ছবির মতো গ্রাম। নাম তার দারো। সেখানেই মন্দির আলো করে থাকেন সিমসা মাতা। দেবীর বরে নাকি সন্তানহীনার কোল আলো করে আসে ফুটফুটে ছেলে বা মেয়ে। এমনটাই বিশ্বাস স্থানীয় মানুষের। লোকের মুখে মুখে যে বিশ্বাস ছড়িয়ে গিয়েছে দেশ জুড়ে।
হিমাচল প্রদেশের পাহাড়িয়া গ্রামের এই মন্দিরের রীতি ভারী অদ্ভুত। নিঃসন্তান কোনও মহিলা সন্তান পেতে চাইলে তাঁকে নবরাত্রির এক রাতে এসে ঘুমোতে হবে মন্দিরে। এটাই এখানকার দেবী আরাধনার নিয়ম। সিমসা মাতার বরে স্বপ্ন পাবেন তিনি। তাতেই থাকবে আগামীর বার্তা।
হরিয়ানা ও চণ্ডীগড়ের অসংখ্য নারীর ভিড় লেগেই থাকে মন্দিরে। আরও দূর দূর থেকেও আসেন সন্তানকামীরা। নবরাত্রির সময়ে এখানে তিল ধারণের জায়গা মেলা ভার। তবু মা সিমসার কাছে সন্তানলাভের বর পেতে সেই সময়টাই যে ভরসা!
সিমসা মাতা মন্দির
নবরাত্রির সময়ে এই মন্দিরে পালিত হয় বিশেষ উৎসব, যাকে বলা হয় সলিন্দরা। এ কথার অর্থ হল স্বপ্ন পাওয়া। এই সময়েই সন্তান লাভের আশায় মন্দিরে শুয়ে থাকেন নিঃসন্তান মহিলারা। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এক রাত্রি এ ভাবে দেবীর আরাধনা করলেই স্বপ্ন পান তাঁরা। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবীর আশীর্বাদে এর পরেই কোলে আসে সন্তান।
পূন্যার্থীদের বিশ্বাস, কোনও মহিলা যদি স্বপ্নে দেখেন আম, তা হলে তাঁর পুত্র সন্তান হয়। কেউ আবার যদি স্বপ্নে দেখেন ঢেঁড়স, তবে তিনি কন্যা সন্তানের জননী হন। তবে কারও স্বপ্নে যদি আসে কাঠ বা পাথরের দৃশ্য, তবে কপাল মন্দ। সারা জীবন নিঃসন্তান থাকতে হবে তাঁকে। স্বপ্নে এ ভাবে নিঃসন্তান হওয়ার ইঙ্গিত পেয়েও মন্দির থেকে যদি সেই নারী সরে না যান, তাঁর শরীরে নাকি লাল লাল দাগ হয়ে যায়!
সন্তান বড় আকাঙ্ক্ষার ধন। নবরাত্রিতে স্বপ্ন পাওয়ার টানে তাই নানা প্রান্ত থেকে হিমাচলের ছোট্ট গ্রামে ভিড় জমান অগণিত মানুষ। সিমসা মাতার উপর অগাধ বিশ্বাসে মন্দির চত্বরে রাতভর শুয়ে থাকেন লাখ লাখ দর্শনার্থী।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।