প্রতীকী চিত্র
পিতৃপক্ষ শেষ হয়ে দেবীপক্ষের শুরুর দিনটি হল মহালয়া। এ দিন অনেকেই গঙ্গাস্নান সেরে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে পিণ্ডদান করে তর্পণ করেন। ‘মহালয়া’ কথাটির অর্থ মহৎ আলয়। একটি মত বলে, এর অর্থ প্রেতের আলয়। শাস্ত্র মতে এ দিন প্রয়াত আত্মারা মর্তে আসেন বলে মনে করা হয়।
মহা+আলয় জুড়ে এই শব্দ। সন্ধির নিয়ম মেনে শব্দটি সে ক্ষেত্রে হওয়ার কথা ছিল ‘মহালয়’। তা হলে ‘মহালয়া’ কেন? এর কোনও ব্যাকরণগত ব্যাখ্যা নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্ধকার পেরিয়ে দেবীপক্ষের শুভ সূচনা হয় বলে শব্দটিকে স্ত্রীলিঙ্গ করে ‘মহালয়া’ বলা হয়।
এই দিনটিকে ঘিরে নানা পৌরাণিক কাহিনি থাকলেও মহাভারতের সঙ্গে মহালয়ার নিবিড় যোগ রয়েছে। মহাকাব্য অনুসারে, মহাভারতের যুদ্ধে মৃত্যুর পরে স্বর্গে কর্ণকে খাদ্য হিসেবে স্বর্ণ ও ধনরত্ন দেওয়া হয়েছিল। কর্ণ তখন দেবরাজ ইন্দ্রকে প্রশ্ন করেন যে, কেন তাঁকে খাদ্যের বদলে এ সব দেওয়া হয়েছে। ইন্দ্র জানান, কর্ণ চিরকাল ধনরত্ন ও স্বর্ণ দান করে এসেছেন, কিন্তু পূর্বপুরুষদের কখনও জল, খাদ্য দেননি। তাই তাঁকেও খাদ্যের বদলে এ সবই দেওয়া হয়েছে।
কর্ণ জানান, তিনি তাঁর পুর্বপুরুষদের বিষয়ে অবগত ছিলেন না। সে কারণেই তাঁকে আবার ১৫ দিনের জন্য মর্ত্যে পাঠানো হয়। ফিরে এসে কর্ণ পিতৃপুরুষের উদ্দেশে পিণ্ডদান করেন। সেই থেকেই নাকি এই বিশেষ দিনে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে জল দেওয়ার এই রীতি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।