পুরাণে মহালক্ষ্মীকে আদিশক্তি ভগবতী দেবী মনে করা হয়। তাঁর কৃপাতেই মানুষ ধনদৌলত থেকে সুখস্বাচ্ছন্দ্য এবং যশ-মান-প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদে দুর্ভাগ্য দূর হয়ে সৌভাগ্য ও ধনলাভ ঘটে। লক্ষ্মী ও অলক্ষ্মী দুই বোন। যে বাড়িতে শুদ্ধতা, পরিছন্নতা, শান্ত ও নম্র ভাব থাকে, সেখানে লক্ষ্মীর বসত।
আর যেখানে অশুদ্ধতা, অপরিষ্কার পরিবেশ, কলহ-বিবাদ, উগ্র মেজাজ ও হিংসা থাকে, সেখানে অলক্ষ্মীর বাস
মা লক্ষ্মীর কৃপার উপরে অর্থলাভ তো বটেই, সঙ্গে দাম্পত্যে মধুর সম্পর্ক ও সন্তানলাভও নির্ভর করে। দেবী লক্ষ্মীকে যে ভোগ দেওয়া হয়, তাতে খিচুড়ি এবং পায়েস অবশ্যই থাকে।
এছাড়া থাকে চিঁড়ে, ফলমূল এবং অন্যান্য উপকরণ। পুজোর শেষে ওই প্রসাদ সকলে গ্রহণ করেন। কিন্তু কেন খিচুড়ি বা পায়েস ছাড়া লক্ষ্মীর ভোগ অসম্পূর্ণ? এর উত্তর রয়েছে মহাকাব্যে।
রামায়ণের গল্প অনুযায়ী, রাবণ বধ করে রামচন্দ্র সীতা, লক্ষণ ও হনুমানকে সঙ্গে নিয়ে অযোধ্যায় প্রবেশ করেন।
তার পরে রাজ্যজুড়ে শুরু হয় সীতাকে নিয়ে গুঞ্জন। তাঁর চারিত্রিক শুদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
লক্ষ্মী পুজোর দিনে সীতা রাবণের ছবি এঁকে সখীদের রাবণ সম্পর্কে বোঝাচ্ছিলেন। সেই সময়ে রামচন্দ্র সেই ঘরে প্রবেশ করেন। প্রজাদের সন্দেহ দূর করতে তিনি সীতাকে মহর্ষি বাল্মীকির আশ্রমে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
লক্ষ্মী পুজোর দিনে আশ্রমে পাঠানোর পূর্বে রামচন্দ্র সীতাকে ‘এক পাক’ খাইয়েছিলেন। অর্থাৎ যে খাবার সব উপকরণ একত্র করে এক বারে রাঁধা হয়েছে।
এই ‘এক পাক’ই হল সেই পদ, যাকে আমরা এখন খিচুড়ি বলে জানি। লক্ষ্মীপুজোর দিনে এই ঘটনা ঘটেছিল বলেই মনে করা হয় মা লক্ষ্মীর পুজোয় খিচুড়ি নিবেদন আবশ্যিক।এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।