জানেন কি, একটা দারুণ ঘটনা ঘটছে চলেছে আজ বাদে কালই?
পাঁচ-দশ বছরও নয়, দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর বাদে এবার বিশ্বকর্মা পুজোয় বিরল চার রাজযোগ ঘটতে চলেছে!
পৌরাণিক কাহিনতে কথিত আছে, ভগবান ব্রহ্মা যখন মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেন, তখন এই ধরিত্রীকে সাজানো ও সুন্দর করার দায়িত্ব ভগবান বিশ্বকর্মাকে দেওয়া হয়েছিল।
হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, ভগবান বিশ্বকর্মাকে দেবতাদের প্রাসাদের স্থপতিও বলা হয়। তাই ভগবান বিশ্বকর্মাকে বিশ্বের প্রথম ইঞ্জিনিয়র মনে করা হয়। মহাবিশ্বের স্রষ্টা ভগবান ব্রহ্মার সপ্তম পুত্র ভগবান বিশ্বকর্মার হিন্দু ধর্মে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজো প্রতি বছর ভাদ্র সংক্রান্তির দিনে পালিত হয়। সাধারণত, প্রতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো উদযাপন করা হয়। কিন্তু এ বছর পঞ্জিকা মতে ১৮ সেপ্টেম্বরও বিশ্বকর্মা পুজো পালিত হবে। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ বছর বিশ্বকর্মা পুজোর শুভ সময় কখন এবং কোন বিশেষ কাকতালীয় ঘটনা ঘটছে, তা জানাচ্ছে আনন্দবাজার অনলাইন।
পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, ভগবান বিশ্বকর্মা ভগবান বিষ্ণুর নির্দেশে মহাবিশ্বের স্রষ্টা ব্রহ্মার দ্বারা জন্মগ্রহণ করেন। ভগবান বিষ্ণুর যখন দ্বারকা নগরীতে একটি বাড়ির প্রয়োজন হয়, তখন সেটি ভগবান বিশ্বকর্মা তৈরি করেছিলেন। একইসঙ্গে, এ বছরের বিশ্বকর্মা পুজোয় সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ, অমৃত যোগের মতো অনেকগুলি শুভ যোগও তৈরি হচ্ছে। এই যোগে ভগবান বিশ্বকর্মার আরাধনা করলে ব্যবসায় লাভ ও বৃদ্ধির প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়।
৫০ বছর পর এমনটা বিরল ঘটনা!
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, ৫০ বছর পর বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে এমন একটা শুভ যোগ তৈরি হচ্ছে, যা বিশ্বকর্মা পুজোর গুরুত্বকে এ বছর আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জ্যোতিষীর মতে, এবার ৫০ বছর পর বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ, অমৃত সিদ্ধি যোগ, দ্বিপুষ্কর যোগ ও ব্রহ্ম যোগ--- এই ৪ যোগ তৈরি হচ্ছে। এই যোগগুলি খুবই বিরল ও শুভ রাজযোগ। ওই দিন যদি ভগবান বিশ্বকর্মার আরাধনা করা হয়, তাহলে ব্যবসা, নির্মাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যাঁরা যা-যা সমস্যায় ভুগছেন তা অবশ্যই দূর হবে।
এবার বিশ্বকর্মা পুজোর শুভ সময় 'পঞ্চাঙ্গ' অনুসারে, ১৭ সেপ্টেম্বর এই পুজো উদযাপিত হবে। ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা ৪৪ মিনিট থেকে শুরু হচ্ছে পুজোর শুভ সময়। এই শুভ সময় থাকবে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। ওই সময় সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ হতে চলেছে। তাই ভক্তরা এই সময়রীতি মেনে পুজো করলে শুভ ফল পেতেই পারেন।
বিশ্বকর্মা পুজোর উপকরণ নিন সুপারি, রোলি, চন্দন, হলুদ, লবঙ্গ, মৌলি, কাঠের টুকরো, হলুদ কাপড়, মাটির পাত্র, এলাচ, সুগন্ধি, পবিত্র সুতো, জল ভর্তি নারকেল, পাত্র, রক্ষাসূত্র, আম কাঠ, ফুল। এছাড়া কর্পূর, দেশি ঘি, অক্ষত, ধূপ ও ভগবান বিশ্বকর্মার ছবি বা মূর্তির আয়োজন রাখাও আবশ্যিক।
তাহলে কালকেই ৪ বিরল রাজযোগের আশীর্বাদ নিতে বসে পড়ুন বিশ্বকর্মা পুজোয়। মনে রাখবেন, এমন বিরল দিন কিন্তু আপনার দোরগোড়ায় ৫০ বছর বাদে এল!
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।