প্রতীকী চিত্র
ঠাকুর দেখতে মেট্রোতেই চষে ফেলুন কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ, রইল গাইড ম্যাপ
কলকাতার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঠাকুর দেখার প্ল্যান? এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল পরিবহণ ব্যবস্থা কিন্তু শহরের মেট্রো। যানজট নেই, সময়ও লাগে কম। ফলে দূরত্ব যতই হোক, পৌঁছে যাওয়া যায় সহজেই।
ইদানীং পুজোর কলকাতায় চতুর্থী হতে না হতেই মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় শুরু হয়ে যায় দর্শনার্থীদের। ঠাকুর দেখতে বেরোলে লম্বা লাইন। পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে যানজটও। ফলে উত্তর থেকে দক্ষিণ হোক বা হাওড়া থেকে সল্টলেক– ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটে রাস্তাতেই। আর ঠিক এইখানেই মুশকিল আসান হয়ে বরাবরি বড় অবদান রেখেছে কলকাতা মেট্রো। যানজট এড়িয়ে কম সময়ে উত্তর-দক্ষিণ কলকাতার সংযোগের পথ হয়ে উঠেছে এই গণ-পরিবহণ। উত্তর থেকে দক্ষিণ– প্রতিটি স্টেশনেরই পাশে বা কাছে রয়েছে একাধিক জনপ্রিয় পুজোর মণ্ডপ। ফলে মেট্রোয় ভরসা রেখে বেরিয়ে পড়লে কলকাতার একাধিক বড় পুজো দেখা হয়ে যাবে সহজেই।
আসুন জেনে নেওয়া যাক, মেট্রোয় চেপে কোন কোন পুজো দেখে নেওয়া যাবে। ধরা যাক, শুরু করলেন দমদম থেকে। তার পর এগোন দক্ষিণমুখী।
দমদম
এই স্টেশনের কাছাকাছি রয়েছে দমদম পার্ক সর্বজনীন, সিঁথি সর্বজনীন এবং সিঁথির মোড়ের বন্ধুদল স্পোর্টিং ক্লাব।
বেলগাছিয়া:
পরের স্টেশন বেলগাছিয়ায় নামলে প্রায় অনেকগুলো বড় পুজোই দেখে নেওয়া যাবে। তালিকায় রয়েছে দমদম পার্ক ভারতচক্র, টালা প্রত্যয়, টালা বারোয়ারি। ভিড়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরও কিছুটা এগিয়ে গেলেই পৌঁছে যেতে পারেন শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে।
শ্যামবাজার:
এই স্টেশনে নেমেই হাঁটা পথেই রয়েছে শ্যাম স্কোয়ার, জগৎ মুখার্জি পার্ক, বাগবাজার সর্বজনীন, ফ্রেন্ডস্ ইউনিয়নের মতো বেশ কিছু বড় পুজো।
শোভাবাজার সুতানুটি:
উত্তর কলকাতার সেরা পুজোর তালিকায় অনেকগুলোই এই স্টেশনের কাছেপিঠে। শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোয় শুরু করে হেঁটে একে একে কুমোরটুলি পার্ক, কুমোরটুলি সর্বজনীন, আহিরীটোলা সর্বজনীন, বেনিয়াটোলা সর্বজনীন। এর পরে আর একটু এগোলে রয়েছে নলিন সরকার স্ট্রিট, গৌরীবাড়ি, তেলেঙ্গাবাগান,কাশী বোস লেন, করবাগান, হাতিবাগান নবীনপল্লি, সিকদার বাগানের মতো নামী পুজোর মণ্ডপ।
গিরিশ পার্ক:
উত্তর কলকাতার বেশ কিছু জনপ্রিয় পুজো দেখা যাবে এই স্টেশনে নেমেও। তালিকায় বিডন স্কোয়ার, সিমলা ব্যায়াম সমিতি, ৩৭ পল্লি, বিবেকানন্দ স্পোর্টিং, রবীন্দ্র কানন, পাথুরিয়াঘাটা ৫-এর পল্লি, চালতাবাগান ইত্যাদি।
মহাত্মা গান্ধী রোড:
এই স্টেশনে নেমেই পাবেন মহম্মদ আলি পার্কের পুজো। তা ছাড়াও আশপাশে রয়েছে কলেজ স্কোয়ার, শিয়ালদহ রেলওয়ে অ্যাথলেটিক ক্লাব ইত্যাদি।
সেন্ট্রাল:
এই স্টেশনের কাছাকাছি সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার। এ ছাড়াও দেখে নিতে পারেন সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, কাপালিটোলা ও লেবুতলা পার্কের পুজো।
উত্তরের পুজো দেখার পাট শেষ করে এ বার এগোন দক্ষিণের দিকে। দক্ষিণ কলকাতার পুজো পরিক্রমা শুরু হয় নেতাজি ভবন থেকে।
নেতাজি ভবন:
এই স্টেশনে নামলেই পরপর বেশ কিছু নামী পুজো। রয়েছে পদ্মপুকুর বারোয়ারি সমিতি, ভবানীপুর দুর্গোৎসব, ভবানীপুর ৭৫ পল্লি, হরিশ পার্ক, অগ্রদূত উদয় সঙ্ঘ, ৬৮ পল্লি, সঙ্ঘশ্রী ও সঙ্ঘমিত্র।
যতীন দাস পার্ক:
এই স্টেশনের কাছাকাছি সবচেয়ে বড় পুজো ম্যাডক্স স্কোয়ার। এ ছাড়াও রয়েছে ২৩ পল্লি, বকুল বাগান সর্বজনীন, ২১ পল্লি, আদি বালিগঞ্জ।
কালীঘাট:
বেশ কিছু জনপ্রিয় ঠাকুর দেখে নেওয়া যায় এই স্টেশনে নামলে। তালিকায় বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ, ৬৬ পল্লি, চেতলা অগ্রণী, দেশপ্রিয় পার্ক, বালিগঞ্জ কালচারাল, সমাজসেবী, ট্রায়াঙ্গুলার পার্ক, হিন্দুস্তান পার্ক, সিংহি পার্ক, একডালিয়া এভারগ্রিনের মতো পুজো।
রবীন্দ্র সরোবর:
পৌঁছে যেতে পারেন প্রথমে মুদিয়ালি ও শিবমন্দির। তার পরে ঘুরে আসা যায় সুরুচি সঙ্ঘ। আরও এগোতে চাইলে যেতে পারেন বেহালার দিকে।
মহানায়ক উত্তম কুমার বা টালিগঞ্জ:
বেহালার দিয়ে যাওয়ার অনেক বাস পাবেন এখান থেকে। একটু এগোলেই বেহালার কিছু জনপ্রিয় পুজো। এর পরে টালিগঞ্জে ফেরার পথে দেখে নিন হরিদেবপুর অজেয় সংহতি,বড়িশা ক্লাব, পল্লি উন্নয়ন সমিতি, ৪১ পল্লি।
গীতাঞ্জলি বা নাকতলা:
এই স্টেশনে নেমেই একটু হাঁটলেই এখানকার জনপ্রিয় পুজো নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।