অন্দরসজ্জার বেশ কিছু পরামর্শ দেব আজ, যাতে খুব সহজ হবে আপনার বাড়ির অন্দরসজ্জা নিজের প্ল্যানেই করে ফেলা।
১. অন্দরসজ্জার নানান বই রয়েছে। এছাড়াও ইন্টারনেটে অন্দরসজ্জার হাজার হাজার ছবি এবং ভিডিও রয়েছে। আপনার বাড়ির মতো করে ছবিগুলোকে সাজিয়ে নিন। দরকারে কিছুটা এদিক ওদিক করা যেতে পারে। ঘরের একটা ফার্নিচার প্ল্যান বানিয়ে নিতে হবে। এবার সেই মতো করে আসবাবের প্লেসমেন্ট বসাতে হবে।
২. এবার বিভিন্ন কাজের জন্যে লেবার কিংবা কন্ট্রাক্টরদের খোঁজ করুন। প্রতিদিনের হিসেবে বা চুক্তিতে কাজটা করিয়ে নিতে পারেন। প্রতিদিনের হিসেব হলে যদি ঠিকঠাক মতো এগজিকিউশন করতে পারেন তবে লাভবান হবেন। কাজের চুক্তির ক্ষেত্রে সামান্য বেশি খরচ হলেও চিন্তা অনেকটা কম থাকে। তবে দুটো ক্ষেত্রেই আপনাকে সচেতন হয়ে কাজ করিয়ে নিতে হবে। মিস্ত্রী হ্যান্ডলিং বেশ টাফ জব।
৩. মেটিরিয়ালের জন্য মিস্ত্রী বা কন্ট্রাক্টরের কাছ থেকে লিস্ট নিয়ে নিন। ভাল মিস্ত্রী হলে পারফেক্ট রিকোয়ারমেন্ট দেবেন। প্রাথমিক ভাবে লিস্ট অনুযায়ী অনেকটা জিনিস একসঙ্গে কিনে নিন। যাতে ক্যারিং কস্ট কম হয়। ভাল মিস্ত্রী বা কন্ট্রাক্ট্র ওয়েস্টেজ কম করাবে্ন।
আরও পড়ুন: দক্ষিণের জানলা যেন একমুঠো খোলা হাওয়া
৪. প্লাইয়ের জন্য সেন্ট্রাল এভেনিউর সারিবদ্ধ দোকান রয়েছে, পাড়ার দোকানও রয়েছে। সমস্ত দোকানে নেট দামের উপরে ছাড় দেয়। একটু দেখে নেবেন অন্য দোকানে। প্লাই চিনতে শিখতে হবে। পাইন ব্লকবোর্ড ভাল। ওয়াটারপ্রুফ প্লাই মেরিন কোয়ালিটির হলে ভাল।
৫. সমস্ত রকম হার্ডওয়্যার, কিচেন ক্যাবিনেটের স্টিলের ট্রে, ড্রয়ারের চ্যানেল, ইত্যাদি সমস্ত কিছুই কলকাতার চাঁদনি চক মার্কেটে পাইকারি দামে পাওয়া যায়। ওয়াল পেপার, ম্যাট্রেস, সিন্থেটিক ফ্লোরিং, সিন্থেটিক ঘাস, ডেকরেটিভ ওয়াল প্যানেল, পর্দা, এ সমস্তই চাঁদনি চকের আশেপাশে পাওয়া যায়। সুতরাং শহরের অন্দরসজ্জার আঁতুড়ঘর বলতে গেলে চাঁদনি চকের নাম প্রথমেই আসবে।
৬. মেঝের জন্যে মার্বেল চেনা খুব দরকার। মার্বেলের ভেইনস মিলিয়ে নিতে হয়। সেক্ষেত্রে ঘরের মাপ নিয়ে সেই মাপ অনুযায়ী মার্বেলের দোকানে পাশাপাশি মার্বেল বিছিয়ে একটা পেন বা মোম রং দিয়ে নাম্বারিং করে নিতে হবে। যাতে পরে অসুবিধে না হয়।
৭. কলকাতার এজরা স্ট্রিটে পাওয়া যায় ইলেক্ট্রিকের সমস্ত জিনিসপত্র। অনেকটা কম হয় এখানে। পাইকারি দামে পাবেন। এমনকি শ্যাল্ডেলিয়ার, ওয়াল ব্রাকেট, স্পট লাইট, এ সমস্তও অনেকটা কম দামে পাওয়া যায় এখানে।
আরও পড়ুন: পুরনোকে আসবাবে নতুন স্বাদ অ্যান্টিক অন্দরসজ্জা
৮. অনেকেই পুরনো ফার্নিচার নতুন ফ্ল্যাটে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই খুব একটা কাজে লাগে না। বরং পুরনো ফার্নিচার ভাঙাচুর করে সেগুলো নতুন ফার্নিচার বানানোর সময় কাজে লাগাতে গেলে উল্টে খরচ হয়ে যায় বেশি। কারণ, লেবার খরচ এতে বেশি লাগে।
৯. মোটামুটি কাঠের কাজের জন্যে সমস্ত মেটিরিয়ালের ৩৫-৪০% লাগে লেবার খরচ। রঙের কাজে লেবার খরচ মেটিরিয়ালের থেকে বেশি হয়।
১০. আপনার বাড়ির অন্দরসজ্জার কাজ আপনি দাঁড়িয়ে থেকেই করে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে একটু বিচক্ষণতার প্রয়োজন হয়। সব চাইতে বড় কথা, সামান্য ইগো থাকলেও চলবে না। একজন কন্ট্রাক্টর এমন কি একজন লেবারও জানবেন এই বিষয়ে পারদর্শী। তাঁদের উপর ভরসা রাখতে হবে। তবে আসল কাজ হচ্ছে, একজন সঠিক লেবার বা কন্ট্রাক্টরকে খুঁজে বার করা।