ছোটদের ভাবনার জগৎ ঘন ঘন বদলায়। কেউ যদি পছন্দ করে বাংলার রূপকথার দত্যিদানো, কেউ আবার ভালবাসে হ্যারি পটার। কেউ গল্পের বই, কল্পনাবিলাস আবার কেউ মোবাইল গেম, কার্টুনে মত্ত। তাই তাদের ঘর সাজানোর সময়েও নজর রাখতে হয় ওদের পছন্দের দিকটা।
তাই ছোটদের ঘরের অন্দরসজ্জা করতে গেলে সময়ের মাপটা ঠিক ভাবে করা প্রয়োজন। যেমন ছোটদের জন্য আলাদা ঘর ওরা ব্যবহার করে একটা বয়সের পর থেকে। তখন থেকেই তাদের একটা নিজস্ব ভাবনার জগৎ তৈরি হয়। কোনও কোনও বাড়িতে অবশ্য ছোটদের ঘরের ব্যবহার খুব একটা নেই। তবে অনেক বাড়িতে প্রথম থেকেই একটি ঘর বরাদ্দ তাকে বাড়ির খুদে সদস্যের জন্য। চোদ্দো বা পনেরো বছরের পর থেকেই শিশুদের ভাবনায় পরিপক্বতা আসে। তখন তাদের জন্য বানানো ঘরকে আর এক বার সাজিয়ে তুলতে হয়।
তাই প্রথম থেকেই ভবিষ্যতের কাজ কমান। শিশুদের ঘর আজকাল আর পুরোপুরি শিশুদের মতো হওয়া উচিত নয়। বরং সেই ঘর প্রথম থেকেই খুব শিশুসুলভ করে তোলার দরকার নেই। বরং তার মানসিক পুষ্টি জোগানে অনেকটা সাহায্য করতে পারে দিতে পারে এমন ঘর তৈরি করুন তার জন্য।
আরও পড়ুন: কম খরচে ভোল বদলান রান্নাঘরের, রইল সহজ উপায়
খাটের মাপ সিঙ্গল খাটের মতোই হওয়া বাঞ্চনীয়। তবে অবশ্যই কম উচ্চতার। বাচ্চাদের বয়স কম হলে খাটের ধারে কাঠের একটা রেলিঙের মতো করে দিলে ভাল হয়, এতে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। পরে এই রেলিং খুলেও নেওয়া যায়। বক্সখাট হওয়াই দরকার এবং তাতে অবশ্যই ড্রয়ার সিস্টেম রাখুন। ড্রয়ারগুলো চালানোর জন্য যে সব চ্যানেল লাগানো হবে, সেগুলো যেন অবশ্যই ভাল মানের হয়। এতে শিশু নিজের প্রয়োজন মতো ড্রয়ার ব্যবহার করতে পারবে। খাটের এক পাশে, কিংবা সুযোগ থাকলে দু’পাশে দুটো প্রমাণ মাপের সাইড টেবিল রাখুন।
আরও পড়ুন: বাতিল প্লাস্টিকের বোতলেই ফলান সব্জি-মশলা! কোন গাছ কী ভাবে হবে?
খুব বড় মাপের ওয়ার্ডরোবের দরকার নেই। আপার ক্যাবিনেট তো একেবারেই নয়। শিশুর সুবিধার কথা মাথায় রেখে ওয়ার্ডরোবের নীচে ড্রয়ার রাখাটা ভাল। দেওয়ালে জায়গা থাকলে সেখানে ড্রেসিং টেবিল না থাকলে আলমারির পাল্লাতেই একটা আয়না লাগিয়ে নিতে পারেন।
ছোটদের ঘরকে ভরিয়ে দিন বিষয়ভিত্তিক কিছু ভাবনায়। এমন কিছু ভাবনা,যাতে বয়স বাড়ার সঙ্গে সেই ভাবনাটা শিশুর কাছে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক না হয়ে পড়ে। যেমন জলের নীচের জগৎ হতে পারে, কিংবা হতে পারে মহাকাশের অদ্ভুত রহস্য, হতে পারে গভীর জঙ্গল কিংবা এক নদী। হতে পারে পাহাড়। বিষয়ভিত্তিক কোনও ভাবনা শিশুর ঘরের দেওয়ালে ঠাঁই দিতে চাইলে শিল্পীকে দিয়ে আঁকিয়ে নিন দেওয়াল।
শিশুর ঘরের পর্দা হবে খুব সহজ-সরল। পর্দায় শিশুদের প্রিয় চরিত্র, কিংবা কার্টুন আঁকিয়ে নেওয়া যেতে পারে। যে হেতু পর্দা কিছু দিন পর পাল্টে দেওয়ার সুযোগ থাকে সে হেতু শিশুর বয়সের কথা মাথায় রেখে পর্দা লাগালেই ভাল। এই ঘরে বেশ অনেক পরিমানে আলো-বাতাস চলাচল করা প্রয়োজন। এ ছাড়াও পড়ার টেবিলে, বেডসাইড টেবিলে, খাটের হেডবোর্ডের কাছে ও আলমারির কাছে আলোর উপস্থিতি বাড়াতে হবে। পরিকল্পনা করে বানানো কোনও ঘরে বাস করলে শিশু নিজেও মনে মনে সুস্থ ও তরতাজা থাকবে।