দেখেশুনে বেসিন কিনুন।
অন্দরসজ্জায় বেসিনের ব্যবহার বহু দিনের। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বেশ সাজিয়ে গুছিয়েও নেওয়া যায় বেসিনকে। সে দিনের চিরাচরিত বেসিনের ছবি থেকে আমাদের আজকের ভাবনার বেসিনের ছবি যে অনেকটাই আলাদা হবে, সে তো স্বাভাবিক। শুধু তাই নয়, একটা সময় শুধু সিরামিক, তার পর স্টিলের বেসিনের চল ছিল। আজকের দিনের বেসিনের অনেক ভ্যারাইটিও বেরিয়েছে।
বেসিন কোথায় লাগাবেন তার উপরে নির্ভর করছে কী রকমের বেসিন লাগাবেন বা কী ডিজাইনের বেসিন লাগাবেন। বেসিন সাধারণত দু’ধরনের হয়, প্যাডেস্টাইল কিংবা স্ট্যান্ড এবং ক্যাবিনেট বেসিন। এ ছাড়াও শুধুমাত্র বেসিন টপ পাওয়া যায়, যেটা গ্রানাইট, মার্বেল, কাঠ কিংবা অন্য কিছুর উপরে সেট করে দেওয়া যায়।
বাথরুমের বেসিনের ক্ষেত্রে স্ট্যান্ড বেসিন লাগানোর দরকার পরে না। বরং বেসিনটা মার্বেল বা গ্রানাইট টপের উপরে বসালেই চলে। বেসিনের সঙ্গে সঙ্গে বেসিন টপের আশেপাশে যদি একটু জায়গা পাওয়া যায়, তা হলে বেশ ভালই হয়। অনেক কিছু দরকারি জিনিসপত্র রাখতে কাজে লাগে। বাথরুমের বেসিনের উপরে একটা মিরর অবশ্যই যেন থাকে। নিত্য দিনের কাজের প্রয়োজনীয় জিনিস। মিররটা ডাইরেক্ট ওয়ালে না লাগিয়ে ফ্রেমিং করে কিংবা প্লাইয়ের উপরে সেট করে লাগানো দরকার। বেসিনের উপরের মিররটার ফ্রেমিং আকর্ষণীয় হলে দেখতে ভাল লাগে। মিররের চারপাশে, অর্থাৎ বেসিনের উপরের দিকের দেওয়ালে টাইলস কিংবা গ্রানাইট টাইলস দিয়ে সাজিয়ে তুলুন। বেসিনের উপরের মিরর এবং মিররের উপরে মিরর লাইটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মিরর লাইট থাকলে পুরুষ কিংবা নারী, দু’জনের প্রসাধনের ক্ষেত্রেই অত্যন্ত কাজের।
আরও পড়ুন: দেওয়ালের শোভা বাড়াতে ওয়ালপেপার ব্যবহারের নিয়ম জানেন?
বাথরুমের বেসিনের জন্য ক্যাবিনেট বেসিনও লাগানো যায়। দরকারি স্টোরেজের কাজে আসে। এখন ক্যাবিনেট বেসিন কিনতে পাওয়া যায়। সবচেয়ে ভাল হয় কাঠ বা প্লাই দিয়ে ক্যাবিনেট বেসিন বানিয়ে নিলে। তবে ক্যাবিনেট বানালে বাথরুমের শাওয়ার কিংবা স্নানের জলের ছিটে যাতে না পড়ে তার দূরত্বটার দিকে লক্ষ্য রেখে তবে বানাবেন।
ডাইনিং হলের বেসিন অবশ্যই ডেকরেটিভ হবে। বাকি ঘরের ডিজাইনের সঙ্গে মিলিয়ে বেসিনের প্ল্যাটফর্ম কিংবা ফ্রেমিংটাকে সাজিয়ে নেওয়া দরকার। দেওয়ালে থাকা পিলারের ফাঁকের ভাজটাকে বেসিনের ক্যাবিনেট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বেরিয়ে থাকা পিলার কিছুটা ঢাকা পড়ে যাবে।
ডাইনিং রুমে বেসিনে স্ট্যান্ড ব্যবহার করতেই পারেন। কিংবা ঘরের বাকি আসবাবপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে বেসিনের ক্যাবিনেটও বানিয়ে নেওয়া যায়। তবে ডাইনিং-এ বেসিন ইউনিটটা অবশ্যই দরকার। কেউ কেউ বাথরুমের বেসিনটাকে ডাইনিং বেসিন হিসেবে ব্যবহার করেন। আমার পরামর্শ হল, সেটা একদম করবেন না। একেবারেই হাইজিনিক নয় সেটা এবং দেখতেও দৃষ্টিকটু, সে যত সুন্দর আর পরিষ্কার বাথরুম হোক না কেন। বেসিনের জন্য ডাইনিং রুমে একান্তই জায়গা না থাকলে বারান্দার একটা দেওয়ালেও করতে পারেন বেসিন ইউনিট।
আরও পড়ুন: নকশাদার সোফায় জমুক পুজোর আড্ডা, সোফা কেনার আগে দেখে নিন এ সব টিপ্স
আগেকার দিনে বেসিন খুব বেশি মেটিরিয়ালের পাওয়া যেত না। সিরামিক বেসিনটাই জনপ্রিয় ছিল। আজকাল অনেক অপশন এসেছে। এখন সিরামিক বেসিনগুলোই অনেক স্মার্ট হয়েছে। গোল, চৌকো, আয়তক্ষেত্র, এমনকি ডিম্বাকৃতি সিরামিক বেসিনও পাওয়া যাচ্ছে। শুধু সিরামিক নয়, কাচ, কিংবা পোড়ামাটির ল্যাকার দেওয়া বেসিনও পাওয়া যাচ্ছে দোকানে। তামা কিংবা পিতলের মুখ চওড়া হাড়ি কিম্বা ছোট কড়াইকেও খুব সুন্দর করে বেসিন বানিয়ে দেওয়া যায়। অন্দরসজ্জায় পরীক্ষামূলক কাজের ক্ষেত্রে বেসিন অন্যতম উল্লেখযোগ্য।
(লেখক অন্দরসজ্জা বিশেষজ্ঞ)
ছবি সৌজন্য: পিক্সাবে।