আটা না সুজি - স্বাস্থ্যের জন্য কোনটা ভাল? বাঙালির হেঁশেলে সমানতালে পাল্লা দিয়ে চলা এই দুই উপকরণ নিয়ে আলোচনা ও বাকবিতণ্ডার শেষ নেই। উৎসবের মরসুমে এমনিই খাওয়াদাওয়ায় লাগাম থাকে না। তাই পুজোর পরে নিয়মে ফিরে কীসে কতটা পুষ্টিগুণ, কোনটাই বা ক্ষতিকর– সে দিকে নজর রাখা জরুরি।
স্বাস্থ্য সচেতন বাঙালিদের কেউ কেউ মনে করেন, আটা বা সুজির কোনওটিই স্বাস্থ্যকর নয়। আবার আবার কারও কারও মতে, ময়দার থেকে আটা ভাল।
কেউ কেউ মনে করেন, বাচ্চাদের খাবারের উপকরণ হিসেবে সুজির বিকল্প নেই। শিশু থেকে আবালবৃদ্ধবণিতা– ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে সুজি থাকে এক নম্বরে। কিন্তু কোনটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী? জেনে নিন বিশদে।
সাধারণত দূরুম গম থেকে তৈরি হয় সুজি । দুরুম একটি শক্ত গম, যা উপমা, রাভা, ইডলি, হালুয়ার মতো জনপ্রিয় খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। পাস্তা তৈরির প্রাথমিক উপাদানও সুজি।
সুজির ১০০ গ্রামে ৩৫০ থেকে ৩৬০ ক্যালরি, ৭২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১২ গ্রাম প্রোটিন এবং এক গ্রাম ফ্যাট থাকে। আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার-এর পাশাপাশি থায়ামিন ও নিয়াসিন-এর মতো ভিটামিন বি-ও রয়েছে এতে।
কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকায় সুজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শক্তি। প্রাতরাশে, শরীরচর্চা কিংবা খেলাধুলোর অনুশীলনের আগে তাই সুজি একটি আদর্শ খাবার।
সুজির মাঝারি গ্লাইসেমিক সূচক রয়েছে যা শরীরে শর্করার পরিমাণ ময়দার থেকে তুলনায় অনেক কম বৃদ্ধি করে। প্রোটিন মাঝামাঝি হওয়ায় পেশির শক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। সুজি হালকা খাবার আর তাই তাড়াতাড়ি হজম হয়।
অন্য দিকে আটা গমের দানা থেকে তৈরি। রুটি, চাপাটি, পরোটা– আটা দিয়ে তৈরি করা যায় সবই। আটার ১০০ গ্রামে ৩৫০ গ্রাম ক্যালরি, ৭১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১২ থেকে ১৩ গ্রাম প্রোটিন, এবং ২ গ্রাম ফ্যাট।
মূল পার্থক্য হল আটা সম্পূর্ণ গম দিয়ে তৈরি হওয়ায় সুজির চেয়ে এতে বেশি ফাইবার থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন খনিজ, যেমন আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি রয়েছে আটায়।
আটা হজমে সাহায্য করে, খিদে মেটায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সাহায্য করে ওজন নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া রক্ত সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণ করে আটা।