India’s Step over Pakistan

বদলা নিতে বড় আকারের ধ্বংসলীলা চালাবে ভারতীয় ফৌজ! ‘বন্ধু’ রাশিয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিতে আতঙ্কে কাঁপছে পাকিস্তান

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার বদলা নিতে পাকিস্তানে ঢুকে ভারত যে বড় আকারের হামলা চালাতে পারে, এ বার তা স্পষ্ট করল রাশিয়া। নাগরিকদের তাই আপাতত পাক সফরে না যাওয়ার উপদেশনামা (অ্যাডভাইসরি) জারি করেছে মস্কোর দূতাবাস।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০২
Share:
০১ ১৯
Russia confirms India’s plan of revenge on Pakistan after Pahalgam massacre

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার বদলা নিতে ছক কষছে ভারত। সেই লক্ষ্যে লাগাতার মহড়ায় ব্যস্ত জল, স্থল ও বায়ুসেনা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লি যে বড় আকারের কিছু করতে চলেছে, এ বার তার ইঙ্গিত দিল রাশিয়া। শুধু তা-ই নয়, রুশ নাগরিকদের জন্য বিশেষ উপদেশনামা (অ্যাডভাইসরি) জারি করেছে ইসলামাবাদের মস্কো দূতাবাস।

০২ ১৯
Russia confirms India’s plan of revenge on Pakistan after Pahalgam massacre

ভারত-পাক সংঘাতের আবহে রুশ নাগরিকদের আপাতত পাকিস্তান যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছে মস্কো। চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল এই নিয়ে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে ক্রেমলিনের দূতাবাস। আগাগোড়া রুশ ভাষায় লেখা ওই উপদেশনামায় পাকভূমিতে থাকা নাগরিকদের দ্রুত দেশে ফেরার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
০৩ ১৯
Russia confirms India’s plan of revenge on Pakistan after Pahalgam massacre

রুশ দূতাবাসের উপদেশনামায় বলা হয়েছে, ‘‘ভারত-পাক সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটছে। দুই দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা ক্রমাগত যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে রুশ নাগরিকদের জন্য পাকিস্তান মোটেই সুরক্ষিত নয়। তাই তাঁদের সংশ্লিষ্ট দেশটিতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে।’’ উল্লেখ্য, এই ধরনের কোনও আদেশনামা জারি করেনি নয়াদিল্লির মস্কো দূতাবাস।

০৪ ১৯

গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার খবর প্রকাশ্যে আসতেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে শোকবার্তা পাঠান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ আরও মজবুত ও জোরদার করতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত। এই নৃশংস অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই। সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এবং অপরাধীরা তাদের প্রাপ্য শাস্তি পাবেই।’’

০৫ ১৯

প্রেসিডেন্ট পুতিনের পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপের দেশটির কুর্স্ক এলাকার ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির নেতা অভয়কুমার সিংহও পহেলগাঁও হামলার পর সরাসরি ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘ঐতিহাসিক ভাবে দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে। কাশ্মীরের ঘটনার জন্য সহানুভূতি প্রকাশ করছি। প্রয়োজনে আমরা যে কোনও সাহায্য করতে প্রস্তুত।’’

০৬ ১৯

পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া ৬৫ বছরের পুরনো সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করেছে নয়াদিল্লি। ঠিক তার পরেই ইসলামাবাদকে না জানিয়ে বিতস্তা (ঝিলম) নদীর জল ছাড়ার অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। ফলে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (পাকিস্তান অকুপায়েড কাশ্মীর বা পিওকে) বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হওয়ার খবর সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

০৭ ১৯

সংবাদমাধ্যমের খবরে এটাও বলা হয়েছে, বিতস্তার জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় পিওকেতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাণহানি এড়াতে আমজনতাকে নদীর ধার থেকে সরিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। পাকিস্তানের অভিযোগ, পূর্বঘোষণা ছাড়াই উরি বাঁধের জল ছাড়ে ভারত। ফলে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাওয়া যায়নি। নয়াদিল্লির এই পদক্ষেপকে ‘জল সন্ত্রাস’ বলে উল্লেখ করেছে ইসলামাবাদ।

০৮ ১৯

১৯৬০ সালে হওয়া সিন্ধু জলচুক্তির শর্ত অনুযায়ী, এত দিন পাক কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বাঁধের জল ছাড়ত ভারত। কিন্তু, নয়াদিল্লি চুক্তিটিকে স্থগিত করায় এর প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে গিয়েছে। বিশ্লেষকদের দাবি, বর্তমানে সিন্ধু এবং তার পাঁচটি উপনদীর উপর বাঁধ, জলাধার এবং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ থেকে শুরু করে যে কোনও রকমের প্রকল্পের কাজ চালাতে পারবে মোদী সরকার। এতে আগামী দিনে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে তীব্র জলসঙ্কট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

০৯ ১৯

মোদী সরকার সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করতেই ফুঁসে ওঠে ইসলামাবাদ। নদীর জল বন্ধ করলে তাকে যুদ্ধ হিসাবে দেখা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সরকার। পাকিস্তানের মন্ত্রী হানিফ আব্বাসি আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, ‘‘১৩০টা ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের দিকে তাক করা আছে। সেগুলির অবস্থান প্রায় কেউই জানেন না। জল নিয়ে খেলা করলে ভারতকে চরম পরিণাম ভোগ করতে হবে।’’

১০ ১৯

যদিও ইসলামাবাদের এই সমস্ত হুমকিকে মোটেই পাত্তা দিচ্ছে না ভারত। ২৭ এপ্রিল ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান‌ে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলা নিয়ে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসী আক্রমণের কঠোর জবাব দেবে ভারত। আমার বিশ্বাস পহেলগাঁওয়ের ঘটনা দেখে প্রত্যেক ভারতীয়ের রক্ত ফুটছে।’’ আতঙ্ক ছড়িয়ে ফের কাশ্মীরকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে ওই অনুষ্ঠানে স্পষ্ট করে দেন তিনি।

১১ ১৯

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এরই মধ্যে যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসকারী মহড়া চালিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর আরব সাগরে বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্তকে মোতায়েন করেছে নয়াদিল্লি। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের করাচি নৌঘাঁটির অদূরে ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায় ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ আইএনএস সুরত। সূত্রের খবর, আরব সাগরে পরমাণু হাতিয়ারে সজ্জিত অন্তত দু’টি ডুবোজাহাজ নামিয়েছে কেন্দ্র।

১২ ১৯

উল্লেখ্য, সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে উত্তেজনার আবহে নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অফ কন্ট্রোল বা এলওসি) সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে পাক ফৌজ। সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনা। পাশাপাশি, রাজস্থানের মরুভূমিতে যুদ্ধের মহড়া চালাচ্ছে ভারতীয় ট্যাঙ্ক বাহিনী। এ হেন শক্তি প্রদর্শনের একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করেছে সেনা। সেখানে ‘নির্ভীক’, ‘পরিশ্রমী’, ‘অপ্রতিরোধ্য’-এর মতো বিশেষণ ব্যবহার করা হয়েছে।

১৩ ১৯

জল ও স্থলবাহিনীর পাশাপাশি মহড়া চালাচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনাও। ওই যুদ্ধাভ্যাসের পোশাকি নাম ‘অপারেশন আক্রমণ’। ফরাসি সংস্থা দাসোঁ অ্যাভিয়েশনের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমানগুলিকে ধীরে ধীরে পশ্চিম সীমান্তে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। স্বল্প পাল্লার স্কাল্প ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যোদ্ধা পাইলটেরা গা ঘামিয়েছেন বলে বলে সূত্র মারফত খবর পাওয়া গিয়েছে।

১৪ ১৯

অন্য দিকে চুপ করে বসে নেই পাকিস্তানও। ভারতের থেকে প্রত্যাঘাতের আতঙ্কে সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় সেনাসংখ্যা বৃদ্ধি করেছে রাওয়ালপিন্ডি। পাশাপাশি, আমেরিকার তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। এই আবহে সুর চড়িয়ে পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির বলেছেন, ‘‘আমরা আত্মরক্ষা করতে জানি।’’ তবে ফের এক বার দ্বিজাতি তত্ত্বের কথা বলে ভারতে ধর্মীয় বিভাজন আনার চেষ্টা করেছেন তিনি।

১৫ ১৯

পহেলগাঁও হামলার পর রাশিয়ার মতোই খোলাখুলি ভাবে নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের দাবি, পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গিনিধনের ব্যাপারে ভারতকে একরকম সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। গত কয়েক দিন ধরে আমেরিকার একাধিক পদস্থ আধিকারিকের বয়ানে মিলেছে তাঁর ইঙ্গিত।

১৬ ১৯

এ ব্যাপারে প্রথমেই বলতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গাবার্ডের কথা। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার খবর মিলতেই এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন তিনি। সেখানে তুলসী লেখেন, ‘‘ইসলামীয় সন্ত্রাসীদের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করছি। এই জঘন্য ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বার করে শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাশে আছি।’’

১৭ ১৯

পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গি নিকেশের ব্যাপারে তুলসীর এই পোস্টকেই ‘গ্রিন সিগন্যাল’ বলে মনে করছেন দুনিয়ার তাবড় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা। গত ২৪ এপ্রিল হোয়াইট হাউসে ‘প্রেস ব্রিফিং’-এর সময় এ ব্যাপারে প্রশ্ন করতে গেলে এক পাক সাংবাদিককে মাঝপথেই থামিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। তাতে যে ইসলামাবাদের রক্তচাপ কয়েক গুণ বেড়েছে, তা বলাই বাহুল্য।

১৮ ১৯

এ ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ দ্বন্দ্বে মধ্যস্থতার কোনও আকাঙ্ক্ষাই যে তাঁর নেই, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তান নিজেরাই কোনও না কোনও ভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে।’’

১৯ ১৯

ট্রাম্প ও পুতিনের ‘সমর্থন’ মেলায় পাকিস্তানকে শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে নয়াদিল্লির কোনও বাধাই থাকছে না বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের একাংশের দাবি, ইসলামিক সন্ত্রাসবাদ দমনে ভবিষ্যতে আরও কাছাকাছি আসবে ভারত, আমেরিকা ও রাশিয়া। এই তিন দেশের সেনাকে যৌথ অভিযানেও যোগ দিতে দেখা যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁরা।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement