প্রতীকী চিত্র
আলোর উৎসব দীপাবলি। এ রাতে আলোর বর্ণমালার সেজে ওঠে চারপাশ। ঘরের কোণ থেকে রাস্তাঘাট, দোকানপাট আলোর ছটায় ঝলমল করে। আত্মীয়-বন্ধুরা আসে, সপরিবার মেতে ওঠা হয় খাওয়াদাওয়া, বাজি পোড়ানোর উদযাপনে। অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে জীবন।
কিন্তু আলোর উৎসবে শুধু কি নিজের ঘরদোর সাজিয়েই কি মানুষ থেমে থাকতে পারে? এ দিনটায় বাইরের পৃথিবীর মতো যদি দূর করা যায় অন্তরের অন্ধকার? তবে আলোয় ঝলমল করে ওঠে আপনার মনও। আর তা করতে আপনার মুশকিল আসান হতে পারে ধ্যান বা মেডিটেশন।
শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য ধ্যানের কোনও বিকল্প হয়না। মুনি-ঋষিদের কাল থেকেই ধ্যান সাধনার একটি অঙ্গ। ধ্যানে শুধু শরীর বা মন ভাল হয়, তা-ই নয়। মনে আসে প্রশান্তি, আসে স্থিরতা। বাড়ে মনোসংযোগ। স্থিরতা এসে সুন্দর হয়ে ওঠে জীবন।
দীপাবলিতে যখন সারা বাড়িতে মাটির প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বলে, তার আলোয় ধ্যানের মাধ্যমে বিকশিত হয় অন্তরাত্মা। ঘটে আত্মোপলব্ধি। ঘরের একটি শান্ত কোণে বসে তা করলে শান্তি আর ভালবাসা ঘিরে রাখে মনকে।
কী ভাবে ধ্যান করলে আপনার শরীর এবং মনের সহায়ক হতে পারে?
শুভম সিংহ, পিলাটেস এক্সপার্ট আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলে জানালেন বর্তমানে কাজের চাপ, মানসিক চাপ, দৈনন্দিন জীবন ব্যস্ততার চাপ সব মিলিয়ে আমাদের জীবন এখন খুব জটিল। মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য যোগা, ধ্যান, পিলাটেস, এই ধরণের শরীরচর্চা খুব দরকার। নিয়মিত ধ্যান বা শরীরচর্চা প্রতিদিন আধ ঘণ্টা করে, দেহ ও মনে সুস্থতা আনে। ধ্যানের কোন বিকল্প নেই মানসিক সুস্থতার ক্ষেত্রে। নির্দিষ্ট কোন স্থান সবসময় দরকার পড়েনা এসবের জন্য কিন্তু প্রতিদিন পনেরো মিনিট শরীরচর্চা বা ধ্যান মনে আনে প্রশান্তি।
সবার আগে ধ্যানের একটি রুটিন তৈরি করুন। এর মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের কিছু ব্যায়াম থাকতে পারে। সঙ্গে থাকতে পারে কোনও গান বা যন্ত্রসঙ্গীত শোনার অভ্যাস। ঘুমের জন্য বিভিন্ন লাইট মিউজিক রয়েছে, যা আপনাকে ধ্যান করতে সাহায্য করবে। সেগুলো শুনতে পারেন।
মনের বিভিন্ন ব্যায়াম হয়। যেমন মনোনিবেশ করার এক ধরনের ধ্যান, একমনে চুপ করে কিছু ভাবার ধ্যান। সারা দিনের বিভিন্ন ক্লান্তি দূর করে ঘুমোতে সাহায্য করে এই ধ্যান বা মেডিটেশন।
আলোর উৎসবের মরসুমে বিভিন্ন মেডিটেশন ল্যাম্প, দিওয়ালি লাইট পাওয়া যায় বাজারে। কুবেরের মূর্তি, যাঁকে ধন দেবতা হিসেবে মানা হয়, তাঁর সামনে এই বাতি জ্বালিয়ে বসে ধ্যান করলে মনসংযোগ ভাল হয়।
মোমবাতি বা প্রদীপের কোনও বিকল্প হয় না। মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালিয়ে আপনি জলে ভাসিয়ে দিন। তার নরম আলোর সামনে বসে ধ্যানমগ্ন হতেই পারেন। এতে মন হালকা হবে। অনেকটা এগিয়ে যাবেন আত্মোপলব্ধির পথে।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' প্রতিবেদনের অংশ।