পুজোর ছুটি বলতে এখন বোঝায় মহালয়া থেকে জগদ্ধাত্রী পুজো! হ্যাঁ, এর ভিতরে বেসরকারি অফিসে সব পুজোর ছুটি না থাকলেও বর্তমানে রাজ্য সরকার পুজোর উৎসবে প্রায় সব ছুটিই দিয়ে থাকে।
আবার ইদানীং বেশির ভাগ 'কর্পোরেট' অফিসে শনি-রবিবার ছুটি থাকে। বছর জুড়ে পাঁচ দিনের কাজের সপ্তাহ।
ফলে অনেক পুজোর ছুটি শুক্রবার অথবা সোমবার পড়লে রাজ্য সরকারি অফিসগুলির মতো কর্পোরেট অফিসের কর্মীরাও টানা তিন দিন ছুটি উপভোগ করে থাকেন। আর ভ্রমণপিপাসু বাঙালি তাই এ বছরের পুজোর ছুটির ঘন্টা বাজতে না বাজতেই পরের বছরের পুজো মরশুমের ছুটির হিসেব কষতে বসে পড়ছে মুঠোফোনে নানান সমাজমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়ে!
লক্ষ্য সেই এক ও অদ্বিতীয়, পুজোর ছুটিতে বেড়াতে বেরিয়ে পড়া পরিবার নিয়ে! দূরে বা কাছেপিঠে। আর সেই গন্তব্য তো নির্ভর করছে উৎসবের অক্টোবর-নভেম্বর বা বাংলা আশ্বিন-কার্তিক মাসে কোন পুজোর ছুটি কোন তারিখ, কোন দিনে পড়ছে তার উপরই। তাই না?
তা হলে আসুন, এক বছর আগেই দেখে নেওয়া যাক, ২০২৪ সালে, অর্থাৎ বাংলা ১৪৩১ বঙ্গাব্দে মহালয়া, দুর্গাপুজো, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো, ভাইফোঁটা এমনকি জগদ্ধাত্রী পুজোও কবে পড়ছে।
সেই আগাম পুজো ক্যালেন্ডার দেখে আপনিও এক বছর আগেই কষে ফেলুন, পরের বছরের পুজোর ছুটিতে সপরিবারে বাইরে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা।
মহালয়া – ২ অক্টোবর ২০২৪। বাংলা ১৫ আশ্বিন ১৪৩১। বুধবার। যদিও ওই একই দিন গান্ধী জয়ন্তী বলে রাজ্য সরকারি অফিসের কর্মীরা একটা বাড়তি দিন ছুটি থেকে বঞ্চিত হবেন। মহালয়া – ২ অক্টোবর ২০২৪। বাংলা ১৫ আশ্বিন ১৪৩১। বুধবার। যদিও ওই একই দিন গান্ধী জয়ন্তী বলে রাজ্য সরকারি অফিসের কর্মীরা একটা বাড়তি দিন ছুটি থেকে বঞ্চিত হবেন।
আবার গান্ধী জয়ন্তী উপলক্ষে এন.আই. ধারায় গোটা দেশে সব প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকায় মহালয়ায় যাঁদের ছুটি থাকে না, তাঁরাও আগামী বছর মহালয়ার দিন ছুটির মেজাজে প্রয়াত পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করতে যেতে পারবেন। অফিস যাওয়ার তাড়া থাকবে না।
শারদীয়া দুর্গাপুজো – ৯-১৩ অক্টোবর ২০২৪। বাংলা ২২-২৬ আশ্বিন ১৪৩১। বুধবার থেকে রবিবার। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বাদে অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও কর্পোরেট অফিস মহাষষ্ঠী অবধি খোলা থাকলেও আগামী বছর রাজ্য সরকারি অফিসগুলিতে ৭ অক্টোবর, সোমবার, মহাচতুর্থী থেকেই পুজোর ছুটি পড়ে যাওয়ার ঘোষণা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে তার আগের দু'দিনও, শনি ও রবিবার রাজ্য সরকারি অফিসগুলিতে সপ্তাহান্তের ছুটি থাকায় কার্যত ৫ অক্টোবর থেকেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আগামী বছর দুর্গাপুজোর ছুটি বলাই যায়।
কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো – ১৬ অক্টোবর ২০২৪। বাংলা ২৯ আশ্বিন ১৪৩১। বুধবার। অন্যান্য সব কর্ম প্রতিষ্ঠান বাদে কেবল পশ্চিমবঙ্গ সরকারি অফিসগুলোয় আগামী বছরে শারদোৎসবের ছুটি এদিনই ফুরোবে।
অর্থাৎ আপনি রাজ্য সরকারি অফিসের চাকুরে হলে আগামী বছর ৫-১৬ অক্টোবর, টানা ১২ দিনের পুজোর ছুটিতে পরিবার নিয়ে বেশ বড় মাপের একটা লম্বা বেড়ানোর পরিকল্পনা এ বছর থেকেই কষা শুরু করতেই পারেন! কী বলেন?
কালীপুজো – ৩১ অক্টোবর ২০২৪। বাংলা ১৪ কার্তিক ১৪৩১। বৃহস্পতিবার। অর্থাৎ আগামী বছর কালীপুজোর ছুটিরও তাৎপর্য আছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্য সরকারি অফিসগুলোর মতো ইদানিং প্রচুর সংখ্যক 'কর্পোরেট' অফিসেও প্রত্যেক শনি-রবিবার ছুটি থাকে।
সে কারণে, কোনও রাজ্য সরকারি এবং কর্পোরেট অফিসের চাকুরে যদি আগামী বছর কালীপুজোর পরের দিন অর্থাৎ ১ নভেম্বর শুক্রবার একটা 'সি.এল.' বা 'ক্যাজুয়াল লিভ'-এর আবেদন করে ছুটি নিয়ে নেন, সেক্ষেত্রে তাঁর আগামী বছরের ৩১ অক্টোবর-৩ নভেম্বর, টানা চারদিন ছুটি হয়ে যাবে কালীপুজোর সময়ে। ফলে একটা ছোটখাটো বা মাঝারি দূরত্বের গন্তব্যে পুজোর ছুটির 'ট্যুর' ২০২৪-এর কালীপুজোতেও সেরে ফেলতেই পারেন ভ্রমণবিলাসী বাঙালিরা।
ভাইফোঁটা – আগামী বছর ভাইফোঁটা দু'দিন। ৩-৪ নভেম্বর ২০২৪। বাংলা ১৭-১৮ কার্তিক ১৪৩১। রবি ও সোমবার।
এক্ষেত্রে স্বভাবতই রবিবার সার্বিক ছুটির দিন পড়ায় অধিকাংশ 'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা' উচ্চারণ করে মঙ্গল কামনা করবেন বেশিরভাগ বোনেরা।
জগদ্ধাত্রী পুজো – ১০ নভেম্বর ২০২৪। ২৪ কার্তিক ১৪৩১। রবিবার। মা দুর্গার আরেক রূপ জগদ্ধাত্রী ঠাকুর।
সাধারণত কার্তিক মাসের শুক্লা নবমীতে পূজিত হন। জগদ্ধাত্রী পুজোয় একমাত্র রাজ্য সরকারি অফিসগুলো ছাড়া কোথাও ছুটি থাকে না। কিন্তু ২০২৪-এ জগদ্ধাত্রী পুজো রবিবার পড়ায় নির্বিশেষে সবার ছুটি আগামী বছর জগদ্ধাত্রী পুজোতেও!