জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই মাথায় আসে চন্দননগর এবং তার আলোকসজ্জার কথা। গলি থেকে রাজপথ, পুজোর কয়েকটা দিন আলোর জোয়ারে সেজে ওঠে সবকিছুই। তবে জানেন কি, এই আলোর রোশনাইয়ের মাঝেই বন্ধ থাকে সেখানকার ঘর-গৃহস্থালির আলো!
লোডশেডিং নাকি? না, একেবারেই তা নয়। এর নেপথ্যেও রয়েছে একাধিক যুক্তি। আসলে জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগর আলোয় মুড়ে থাকলেও বেশ কিছু সময় অন্ধকারে থাকেন এলাকাবাসী। রাস্তায় আলো জ্বললেও ঘরগুলিতে থাকে না কোনও বৈদ্যুতিক সংযোগ।
চন্দননগরের এই রীতি আসলে বেশ পুরনো। এখনও দশমীর দিন সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুতের সরবারহ।
দেবী প্রতিমার উচ্চতা অত্যন্ত সুবিশাল হওয়ার কারণে শোভাযাত্রার জন্য মণ্ডপ থেকে যখন দেবীকে বের করে আনা হয়, সেই সময়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়েও একাধিক অঘটন ঘটার সম্ভাবনা থেকেই যায়। দুর্ঘটনা এড়াতেই এই পদক্ষেপ করা হয়ে থাকে।
গলির মোড় থেকে মূল রাস্তা অবধি প্রতিমাকে নিয়ে আসা পর্যন্ত বন্ধ থাকে আলো। সন্ধের পর শোভাযাত্রা শুরু হলে আবারও স্বাভাবিক করে দেওয়া হয় বৈদ্যুতিক সরবরাহ।
আনুমানিক কতক্ষণ বন্ধ বিচ্ছিন্ন থাকে এই সংযোগ? বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে সকাল প্রায় ১০টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিদ্যুৎবিহীন থাকে জনজীবন। এর মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন ফোনের চার্জ দিয়ে রাখা কিংবা পর্যাপ্ত জলের জোগান, সবটাই সেরে ফেলেন স্থানীয় মানুষেরা।
দশমীর সারারাত শোভাযাত্রার পর একাদশীর সকালে নিজ নিজ মণ্ডপে ফিরে আসেন দেবী প্রতিমারা।
তবে একাদশীর দিন চন্দননগরের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ওইদিন নাকি দিনভর সমস্ত দোকানপাট-সহ জলের সরবরাহ, সবই বন্ধ থাকে। যদিও সময়ের হাত ধরে সবকিছু পরিস্থিতির সঙ্গেই খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এলাকাবাসীরা। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।