ফ্রেমবন্দি সুভিক্ষা ও টিনা
পুজোর আবহের সঙ্গেই যেন ভেসে এল নতুন দিগন্তের রেখা। গতে বাঁধা সমাজের চিরাচরিত ধারণাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নজির গড়লেন দুই কন্যা। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন তাঁরা। যাঁদের হাত ধরে এক হয়ে গেল ভারত-বাংলাদেশের মানচিত্র।
ভারতীয় দণ্ডবিধির মান্যতা দিলেও এখনও সমাজে এখনও ছুঁৎমার্গ রয়েছে সমকামিতা নিয়ে। সেই রক্ষণশীল ধ্যান-ধারণাকে এক লহমায় ফুৎকারে উড়িয়ে দিলেন সুভিক্ষা সুব্রমণি এবং টিনা দাস। নেটদুনিয়ার হাত ধরে যার সাক্ষী রইল গোটা বিশ্ব।
তামিলনাড়ুতে প্রথাসম্মত ভাবে তামিল ব্রাহ্মণের আচার নির্দেশ মেনে দু’জন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন ভারতের সুভিক্ষা এবং বাংলাদেশের টিনা। যদিও বর্তমানে দু’জনেই থাকেন কানাডায়। একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ হল দু’জনের। সেই থেকে ভাল লাগা, বন্ধুত্ব এবং অবশেষে প্রেম। ছয় বছর প্রণয়ের পরে তাঁদের সম্পর্ক পরিণতি পেল।
ফ্রেমবন্দি সুভিক্ষা ও টিনা
সুভিক্ষার ইচ্ছে ভারতে বিয়ে করার। হলও তাই। যদিও প্রাথমিক স্তরে সুভিক্ষার পরিবার বেশ চিন্তায় ছিল। সামাজিক বিদ্বেষ, পাড়া-পড়শির কথা, আরও কত কী! যদিও সেই সব কিছু সরিয়ে সুষ্ঠু ভাবেই বিয়ে সম্পন্ন হল তাঁদের। পুরোহিত নিয়ে সমস্যা হয়েছিল বৈকি! কিন্তু পরে সেই সমস্যাও মিটে যায়। অন্য দিকে ভারতে প্রথম বার এলেন টিনা। সুভিক্ষার পরিবারের সকলের উপস্থিতি, আপ্যায়ন, ও আদরে নিজেদের আনন্দ ভাগ করে নিলেন তিনি। সেই সঙ্গেই দুই দেশ মিলেমিশে একাকার রামধনুর রঙে।
সংস্কারমুক্ত মনের উপরে ভর করেই সমাজের সব রকম চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে পরিবারের সম্মতি নিয়ে বিয়ে সারলেন তাঁরা। চলে গেলেন মধুচন্দ্রিমায়। আশা করা যায়, তাঁদের দেখানো পথ ধরে ঠিক এই ভাবেই সমস্ত বাধা বিপত্তি কাটিয়ে উঠে রামধনুর রঙে নিজেদের রাঙিয়ে তুলতে পারবেন সমকামীরা।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের অংশ।