বছর কয়েক ধরেই প্রোটিন ডায়েটে ভরসা করতে শুরু করেছে তরুণ প্রজন্ম। বিশেষ করে পুজোর আগে মেদ ঝরানোর জন্য যেসব ডায়েট জনপ্রিয়, প্রোটিন ডায়েট তাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তবে শুধু মেদ ঝরানোই নয়, শরীরের শক্তি বজায় রাখার জন্যও খাবারে পুষ্টির পরিমাণ অটুট রাখা জরুরি। আর সে কাজে আপনার প্রধান সহায় হয়ে উঠতে পারে এই প্রোটিন ডায়েট। কিন্তু প্রোটিন মানেই কি শুধু মাছ-মাংস-ডিম বা সয়াবিনের চেনা ছবি? পুষ্টিবিদরা কিন্তু মোটেই তা বলেন না। বরং প্রতিদিন নামমাত্র খরচেই এক বিপুল পরিমাণ পুষ্টি রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়।
পুষ্টিবিদ সৌরভী সিংহর মতে, “মাছ-মাংস-ডিম বা সয়াবিনের সব কাজ করতে পারে বিভিন্ন রকমের ডাল। বিশেষ করে মুসুর ডাল তো প্রোটিনের খনি। মুসুর ডালের জলেরও নানা গুণ। পেটের সমস্যা মেটানো, শরীরে শক্তি আনা, বিপাকজাত সমস্যা মেটানো-সহ এই জল নিজেও কিছুটা প্রোটিনের জোগান দেয়। এমনিতেই আমাদের দেশে খুব সাধারণ খাবার বলতেও ডাল-ভাত বা ডাল-রুটিকেই ধরা হয়। সঙ্গে টুকটাক কিছু সব্জি বা শাক খেলেও শরীরের প্রয়োজনীয় খনিজ ও ভিটামিন সবই মেলে। বাড়ির খুদে সদস্য বা আদরের পোষ্যকেও প্রোটিন দিতে চাইলে স্রেফ ডাল-ভাত বা খিচুড়িতে আস্থা রাখতে পারেন।
আরও পড়ুন: রোজ পাতে মিষ্টি-চকোলেট? ‘সুইট টুথ’-এ লাগাম টানবেন কী ভাবে
ঠিক কী কী কারণে ডালকে এতটা গুরুত্ব দেন পুষ্টিবিদরা, আর কেমন করে রান্না করলে এই ডালই জোগাবে বেশি খাদ্যগুণ?
• সাধারণত সব প্রাণিজ প্রোটিনেই কিছুমাত্রায় ফ্যাট থাকে। ডালের প্রথম গুণ, এতে প্রোটিনের মাত্রা বেশি হলেও ফ্যাটের পরিমাণ খুব কম। তাই রোগা হতে মাছ-মাংসের চেয়ে বেশি কাজে আসবে ডাল।
• ডাল থেকে মেলে ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ফোলেট ইত্যাদি খনিজ। তাই প্রোটিনের জোগান দেওয়া ছাড়াও নানা খাদ্যগুণ রয়েছে এতে।
• এই উদ্ভিজ্জ প্রোটিন প্রাণীজ প্রোটিনের মতো একই রকম কার্যকর, অথচ তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেকটাই কম। অনেক সময় হাই-প্রোটিন ডায়েট থেকে শরীরে নানা সমস্যা দেখা যায়। ক্লান্তি, পেটের সমস্যা, বিপাকে গোলযোগ তো বটেই, এছাড়া প্রয়োজনের তুলনায় বেশি প্রোটিন স্নায়ুর অসুখও ডেকে আনতে পারে। কিন্তু ডালের বেলায় সে সমস্যা প্রায় নেই বললেই চলে।
আরও পড়ুন:গরম জামা রোদে দেওয়া মানেই পুজো আসছে
চেনা ডালের স্বাদ সবসময় ভাল না লাগলে এক-আধ দিন স্বাদ বদলাতে রাজমা, কাবলি ছোলা ব্যবহার করতে পারেন।
• বেশি উপকার পেতে চাইলে সারা রাত ডাল ভিজিয়ে রেখে দিন। সম্ভব হলে দু'বার জল পালটে দিতে পারেন। জিরে, রসুন, ধনে, আদা ইত্যাদি মশলা সহযোগে ডাল রান্না করুন। শরীরে ভাল ফ্যাটের জোগান দিতে যোগ করুন খানিকটা দেশি ঘি। তবে তা পরিমাণে অল্প হওয়াই স্বাস্থ্যকর।
• চেনা ডালের স্বাদ সবসময় ভাল না লাগলে এক-আধ দিন স্বাদ বদলাতে রাজমা, কাবলি ছোলা ব্যবহার করতে পারেন। এদেরও প্রোটিন জোগানোর ক্ষমতা বেশ ভাল।
• ইউরিক অ্যাসিড থাকলে ডাল খাওয়া নিয়ে অনেকের নানা ধন্দ থাকে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিন।