আমাদের দেশে ডায়াবিটিসের প্রকোপ খুব বেশি। অনিয়মিত জীবনযাপনের ফলে ৩০ পেরতে না পেরতেই বহু মানুষ এর কবলে পড়েন। ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। বাড়ে সংক্রমণের আশঙ্কা। অন্য রোগও বাসা বাঁধতে শুরু করে অজান্তেই। প্রভাব পড়ে হৃদযন্ত্রে, কিডনিতে, যকৃতে।
লকডাউনে বাড়ি বসে একের পর এক চকোলেট বার সাবাড় করেছেন অনেকেই। বার বার চা-কফিও চলেছে। রসগোল্লা, কালাকাঁদ সহ নিত্যনতুন মিষ্টিও বানিয়েছেন প্রতিনিয়ত। আনলকেও বজায় রয়ে গিয়েছে সেই অভ্যাস। উৎসবের মরসুমে তা আরও বাড়তে পারে।
ডায়াবিটিসের সমস্যা না থাকলেও কিন্তু এই চিনি বা মিষ্টি বিপদ ডেকে আনছে। করোনা আবহে তাই রোজের মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস নিয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: ঠোঁট হবে নরম, ত্বক থেকে চুল ঝকঝকে, এই ভেষজেই কামাল পুজোয়
রোজকার খাবারে চিনির পরিমাণ কম থাকাই ভাল।
ডায়াবিটিসের মতো মারণ রোগকে রুখতে জীবন থেকে শর্করার পরিমাণ কমাতে হবে। তবেই সুস্থ থাকতে পারবেন আপনিও। এই প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী, দিনে পাঁচ গ্রামের বেশি চিনি খাওয়া উচিত নয়। কারণ চিনি কম খেলেই সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকার কথা। মিষ্টি বেশি খেলে বাড়বে ওজন। সে ক্ষেত্রে কো-মর্বিডিটি তৈরি হবে। কো-ভিড সংক্রমণ-সহ নানা রকম রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে।"
বিপদ সামলাতে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, এটাই হল আসল কথা। তার জন্য যা যা করা দরকার, করতে হবে সব। যেমন-
পুষ্টিবিজ্ঞানী সোমা চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, "চিনি যে কোনও আকারেই ক্ষতিকারক। চিনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খানিকটা হলেও কমিয়ে দেয়। চায়ের সঙ্গে সকালে দু চামচ চিনির থেকেও বেশি বিপজ্জনক লুকিয়ে থাকা চিনি। অর্থাৎ কেক-পেস্ট্রি-বিস্কুটের চিনি।সুগার ৬৩ রকমের। তাই মল্টোজ, ডেক্সট্রোজ বা যে কোনও ধরনের সুগার শরীরের মধ্যে বেশি পরিমাণে গেলেই তা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক।"
কেক-পেস্ট্রি-চকোলেট বা মিষ্টি বেশি পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাসে লাগাম টানুন আজই।
করোনা আবহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চিনি থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে সতর্ক করেছেন নুন এবং তেলের পরিমাণের বিষয়েও।
আরও পড়ুন: করোনাসুরকে হারাতে হবে, ‘ইমিউনিটি’ বাড়াতে কী কী খাবেন
সুবর্ণবাবুর মত, ‘‘এম্পটি ক্যালরি জমে ওজন বেড়ে গেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। তবে শুধু চিনি নয়। করোনো সহ যে কোনও সংক্রমণ ঠেকাতে চিনি, নুন, তেল-খাবারে এই তিনটির নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজর দিতে বলছেন সুবর্ণবাবু। চিনি খেলে বাড়ে ওজন, নুনে বাড়ে রক্তচাপ। হাইপারটেনশনের সমস্যা দেখা যায়। এই তিনটি উপাদানে নিয়ন্ত্রণ না আনলে শুধু করোনা নয়, পরবর্তীতে কার্ডিয়ো-ভাসকুলার ডিজিজের সম্ভাবনা রয়েছে।’’