অক্টোবরের শেষ দিনে কালীপুজো। ইতিমধ্যেই হাওয়ায় হালকা হিমেল পরশ। বঙ্গদেশে আসলে হেমন্ত বেশ ক্ষণস্থায়ী।
শরৎ থেকে এক লাফে শীত শুরু হয়ে যাবে নভেম্বরের শেষ দিকেই। শীতকাল। বহু বাঙালির প্রিয় ঋতু।
ভাইফোঁটা আর জগদ্ধাত্রী পুজো মেটার সঙ্গে সঙ্গেই যার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন বহু বাঙালি। আর এই শীতপ্রেমীদের শীতের মজা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয় কমলালেবু। দুপুরবেলা নরম রোদ গায়ে মেখে এই লেবু খাওয়ার মজাই যে আলাদা!
কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি, রঙের কারণেই কি এই লেবুর নাম কমলালেবু? মানে, ইংরেজিতে অরেঞ্জ রঙের বলেই কি এই লেবুর নাম অরেঞ্জ? নাকি উল্টোটা, মানে ফলে থেকেই রঙের নামকরণ? প্রশ্নের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে লম্বা ইতিহাস।
অরেঞ্জ একটি ইংরেজি শব্দ। কিন্তু ‘অরেঞ্জ’ নামের ফলটি মোটেই ইংরেজি ভাষায় কথা বলাদের দেশে আগে পাওয়া যায়নি। তা হলে? ইতিহাসের মজাটা সেখানেই।
কমলালেবু ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ার আগে সে দেশে ‘অরেঞ্জ’ বলে কোনও রং ছিল না। যা ছিল, তা হল হলুদ-লাল বা শুধু লাল। এই বলেই ডাকা হত রংটিকে।
এ বার আসা যাক ভাষা প্রসঙ্গে। বুৎপত্তিগত ভাবে ইয়েলো এবং রেড, দু’টিই হল প্রোটে-ইন্দো-ইউরোপিয়ান শব্দ। আর ‘অরেঞ্জ’ এসেছে সংস্কৃত থেকে। কমলালেবু গাছকে সংস্কৃত ভাষায় বলা হল নারাং। সেখান থেকেই এই শব্দের উৎপত্তি।
ভারতীয় এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা নারাং নিয়ে পৌঁছন মধ্য এশিয়ার নানা জায়গায়। সংস্কৃত নারাং বদলে আরবি ভাষায় হয়ে যায় নারাঞ্জ। এর পরে মধ্য এশিয়ার মুসলিম শাসকরা পৌঁছে যান ইতালি, স্পেনে।
মধ্যযুগে এই সব দেশের দক্ষিণ ভাগে আরবের থেকে আসা মানুষের হাত ধরে ঢুকে পড়ে কমলালেবুও। পোঁতা হয় এই গাছের বীজ। বাড়তে থাকে লেবুর চাষ। নারাঞ্জ থেকেই তৈরি হয় ইংরেজির নতুন শব্দ অরেঞ্জ।