পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরলে এক বার অন্তত উত্তর কলকাতায় ঢুঁ তো মারতেই হয়। আর উত্তর কলকাতা মানেই বাগবাজার সার্বজনীনের লাইন।
তবে শুধু তো ঠাকুর দেখলেই হবে না। সঙ্গে যে পেট পুজোটাও জরুরি। তাই এই প্রতিবেদনে আপনাদের জন্য রইল বাগবাজারের কিছু খাবার দোকানের হদিশ।
পটলার কচুরি: আপনি যদি তেলেভাজা খেতে ভালবাসেন তা হলে বাগবাজার আপনার জন্য স্বর্গ। স্বয়ং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যদি কোনও দিন নাটকের শো করতে বাগবাজার যেতেন, তা হলে তেলেভাজাই খেতেন। তবে অনেক তেলেভাজার দোকানের মধ্যে কিন্তু নিজ গুণে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে পটলার দোকান। কচুরি, তেলেভাজা বা ধোঁকার স্বাদ কিন্তু একেবারে আলাদা।
নীলাচল: বাগবাজারে গিয়ে যদি সন্ধেবেলা মনটা খুব ফাস্ট ফুড খেতে চায়? তা হলে কিন্তু আপনার ঠিকানা হতে পারে নীলাচল। রোল থেকে চাউমিন, ফিস ওরলি, ফিস বাটার ফ্রাই সহ আরও নানা খাবার পেয়ে যাবেন এখানে। এরা কিন্তু মাছের কচুরিও করে।
ব্রো’স কাবাব: পুজোর সন্ধেবেলা ডায়েট খাবার খেতে কার আর ভাল লাগে বলুন! কিন্তু লাগাম ছাড়া খেলে আবার মুশকিল। সে ক্ষেত্রে চেখে দেখতে পারেন কাবাব। বাগবাজারে ক্ষুদিরাম মূর্তির ঠিক সামনেই পেয়ে যাবেন ব্রো’স কাবাব। কম দামে ভাল খাবার খেতে চাইলে চলে আসুন এখানে। সঙ্গে কিন্তু থাকে নানা মাছের তন্দুরিও।
গণশার মাছের কচুরি: কচুরির কথাই যখন উঠল, তখন মাছের কচুরির কথা না বললে নয়! বাগবাজার ক্ষুদিরাম মূর্তির পাশের গলিতে কিছুক্ষণ পায়ে হেঁটে এগোলেই চোখে পড়ে পাল ইটিং হাউস। যদিও স্থানীয়রা এটি গণেশদার দোকান বলেই জানেন। মাছের কচুরির সঙ্গে কষা আলুর দম, আপনার মন জিতে নিতে বাধ্য।
লাল্টু কেবিন: বাগবাজার সার্বজনীনের পুজো দেখে বেরিয়ে বাগবাজার ঘাটের দিকে পা বাড়ালে একটু এগোলেই বাঁ হাতে দেখতে পাবেন লাল্টু কেবিন। ফাস্ট ফুড থেকে মোমো তো আছেই। তবে এই দোকানের মূল আকর্ষণ কিন্তু ভাইরাল ভাপা চিকেন। ফয়েল প্যাকে মুড়ে ভাপে রান্না করা এই মাংস খেলে আপনার মন ভাল হতে বাধ্য।
নবীন চন্দ্র দাশ: শেষ পাতে একটু মিষ্টি না হলে যেন কিছুতেই ব্যাপারটা জমতে চায় না। বিশেষ করে জায়গাটা যদি হয় রসগোল্লার জন্মস্থান তা হলে তো মিষ্টি খেতেই হবে। তাই শেষ পাতে মিষ্টি মুখ করতে চলে আসুন রাজবল্লভ পাড়ার মোড়ে নবীন চন্দ্র দাসের মিষ্টির দোকানে। রসগোল্লা এবং দই সহযোগে শেষ করুন খাওয়াদাওয়া।
অনির’স ফাস্ট: ফুড চাইলে চলে আসতে পারেন বাগবাজার স্ট্রিটের মুখে এই দোকানে। লাচ্চা পরোটায় বানানো রোল থেকে, বিরিয়ানি, কাবাব চাইনিজ খাবার পাবেন আরও অনেক কিছুই।
ভোলানাথ কেবিন: গিরিশ অ্যাভিনিউতে ঠিক গিরিশ ঘোষের বাড়ির কাছেই এই দোকান। চপ কাটলেট পছন্দ করলে ঢুঁ মারুন এই দোকানে। শেষে চা। ব্যস, পুজোর সন্ধ্যা জমে ক্ষীর।
দ্বারিক গ্র্যান্ড সন্স: মিষ্টির দোকানের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত হল এই দোকান। লট চমচম থেকে দই, মনোহরা সন্দেশ, কমলা ভোগ কী নেই। চাইলে নোনতা মুখ করতে পারবেন। এখানকার রাধাবল্লভীর স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো।
এ তো গেল নাম করা দোকানের কথা। এ ছাড়াও কিন্তু বাগবাজার স্ট্রিটে রয়েছে খাবার দোকানের ছড়াছড়ি। তবে একটি জিনিস, যার জন্য বাগবাজার বিখ্যাত তা হল— চপ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিরামিষ থেকে আমিষ রয়েছে হরেক রকম চপের দোকান এখানে। ইচ্ছা করলে চেখে দেখতে পারেন কিন্তু। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।