পুজোর সকাল মানেই লুচি
একটা সময় ছিল, যখন বনেদি বাঙালি পুরুষের সাজ মানেই গিলে করা পাঞ্জাবি! সে সাবেক বাঙালিয়ানা যত হারাচ্ছে, কদর হারাচ্ছে গিলে করা পাঞ্জাবিও। গিলে করা মানে কুঁচকে নেওয়া। আসলে গিলে বা গিলা হল এক রকম বড়সড় লতাগাছ, যার চ্যাপ্টা, গোল, লালচে রঙের গিলেফল দিয়ে পাঞ্জাবি কুঁচিয়ে নেওয়ার রেওয়াজ ছিল এককালে। আজ সেই গাছ বিশেষ দেখা যায় না। আর গিলেফলের নাম এমন হলেও, তা গিলে ফেলা বা খাওয়ার চেষ্টা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। এ দিকে, পুজোর পাতে নাকি পড়তে চলেছে গিলে কোফতা!
মহামতি জন কবে বলে গিয়েছেন, মানুষ সর্বভূক। আর সেই মানুষ যদি বাঙালি হয়, তা হলে তাঁরা খানিক পেটুকও বটে। দুধ না পেলে অন্তত ঘোলেই স্বাদ মেটাতে চাইবেন। অতএব, গিলে খেতে না পারলেও অন্তত চিবিয়ে খাওয়ার জন্য গিলে ফলের আদলে এক রকম আলুর কোফতার পদ উদ্ভাবন করে ফেলেছেন তাঁরা! গত শতকের জনপ্রিয় এই পদের রন্ধনপ্রণালী খুবই সরল। রান্নাও হয়ে যাবে চটজলদি।
আলুর গিলে কোফতা
শারদীয়া প্রভাতে, প্রসন্নচিত্তে খুব তাড়াতাড়ি অল্প জলের ছিটে দিয়ে মিহি করে বাটা লঙ্কা, আদা, নারকেলের সঙ্গে কাগজি লেবুর রস, আধ তোলা নুন, গুঁড়ো গরম মশলা আর গোলমরিচ মিশিয়ে মশলা তৈরি করে নিতে হবে। পাশাপাশি কিছু সেদ্ধ আলুর খোসা ছাড়িয়ে চটকে বাটা-মশলার সঙ্গে মেখে নিয়ে গিলের মত চ্যাপটা গড়ন দিতে হবে। এ ভাবে ডজনখানেক কোফতা বানালেই চলবে। তার পরে ছটাকখানেক বেসনে অল্প নুন মিশিয়ে জল দিয়ে একটু ঘন করে ফেটিয়ে নেবেন। গোলা বেসনে ভাল করে কোফতা চুবিয়ে সাদা তেলের কড়ায় কোফতা ছেড়ে খুন্তি দিয়ে উল্টেপাল্টে মিনিট দেড়েক ভাজলেই তৈরি আলুর গিলে কোফতা। পুজোর সকালে গরম গরম ফুলকো লুচির সঙ্গে আলুর গিলে কোফতা পরিবেশন করে জিতে নিন পরিবারের সকলের মন।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের অংশ।