স্বাদে, গন্ধে যাকে বলে সাধের ভোজ!
বিরিয়ানির পাতে মাটন, চিকেন, ডিম তো ঢের হল! দশমীর ভোজে স্বাদ বদলের সাধ? পেটপুজো জমে যাক ইলিশ বিরিয়ানিতে! সঙ্গে ক্ষীর আইসক্রিম। পুজোর কলকাতায় টইটই সেরে ‘মেছো’ বিরিয়ানি আর ফিউশন মিষ্টির চমকদার যুগলবন্দি। স্বাদে, গন্ধে যাকে বলে সাধের ভোজ!
প্রতীকী ছবি।
ইলিশ বিরিয়ানি
উপকরণ:
পোলাও-এর চাল ১ কেজি (বাসমতি হতে পারে), ইলিশ মাছ (৮/১০ পিস কাটা। মাছের পিস খুব বেশি মোটা না হলেই ভাল), ধনে-জিরে গুঁড়ো ২চা চামচ করে, টকদই ১৫০ গ্রাম, রসুন-আদা বাটা ২চা চামচ করে, পেঁয়াজ, লঙ্কাবাটা আধ কাপ, জায়ফল-জয়িত্রী গোটা, গরম মশলা গুঁড়ো দেড় চা চামচ, ভেজানো আমন্ড বাটা ২ চা চামচ, নুন পরিমাণমতো, গাওয়া ঘি ৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ১০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল (সর্ষের তেল নয়), গোলাপ জল- ৪/৫ ফোঁটা, কেওড়া জল- ২/৩ ফোঁটা, পাতিলেবু ১টা, পাকা টমেটোর রস ২ কাপ।
প্রণালী:
প্রথমেই বলি, সাধারণত বিরিয়ানিতে মশলার আধিক্য বেশি থাকে। এখানে বিষয়টা আলাদা। ইলিশ বিরিয়ানিতে ইলিশেরই প্রাধান্য বেশি। মাছের গন্ধ এবং স্বাদ অটুট রাখতে রান্নার পদ্ধতিও তাই অন্য রকম। প্রথমে চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ইলিশও ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। একটা লেবুর রস, দু'কাপ পাকা টমেটোর রস এবং পরিমাণমতো নুন দিয়ে মাছ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এ বার ১০০ গ্রাম পেঁয়াজকুচি আলাদা ভেজে তুলে রাখুন। এই বিরিয়ানি প্রথম ধাপে সরাসরি আগুনে এবং দ্বিতীয় ধাপে ভাপে সেদ্ধ করে রাঁধতে হয়। চাল ভাল মতো ভিজে গেলে গাওয়া ঘি, পেঁয়াজকুচি ভাজা, ভেজানো আমন্ড বাটা, গোলাপ জল, কেওড়া জল, পাতিলেবুর রস এবং পাকা টমেটোর রস বাদে উপকরণে বলা বাকি মশলা দিয়ে প্রথম ধাপে সরাসরি আগুনের আঁচে রান্না করতে হবে। জল দিতে হবে খুব পরিমাণ মতো।
আর একটি পাত্রে লেবুর রস, টমেটোর রসে ভিজিয়ে রাখা ইলিশ মাছ সয়াবিন তেলে অল্প আঁচে ভেজে নিতে হবে। তবে কড়া ভাজা যেন না হয়। তাই ঢিমে আঁচে ভাজতে হবে। মাথায় রাখুন, প্রথম ধাপে চাল অর্ধেত সেদ্ধ হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপে সরাসরি আঁচে রান্না করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে তলা ভারী, ঢাকনাওয়ালা কোনও পাত্র বেছে নিতে পারেন। এ বার ঢাকনাওয়ালা পাত্রে সয়াবিন তেল গরম করে তার মধ্যে প্রথম ধাপে রান্না করা অর্ধেক সেদ্ধ ভাতের ৮০ শতাংশ ঢালতে হবে। তার উপরে ছড়িয়ে দিন ইলিশ মাছ ভাজার ৪০ শতাংশ। মাছের উপরে বাকি ২০ শতাংশ অর্ধেক সেদ্ধ চাল ছড়িয়ে দিন। এ বার উপরে গোলাপজল, কেওড়া জল, এবং ইলিশ-ভেজানো লেবুর রস এবং টমেটোর রস ছড়িয়ে দিন। তার পর দু’চামচ আমন্ড বাটা এবং ৫০ গ্রাম গাওয়া ঘি একসঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে ছড়িয়ে দিন। বাকি পেঁয়াজকুচি ভাজার অর্ধেকটা ছড়িয়ে দিতে হবে। বাকি অর্ধেকটা পরিবেশনের সময়ে দেবেন।
এ বার পাত্রের মুখ ভাল করে বন্ধ করে দিন। প্রথম ধাপে কতটুকু সেদ্ধ হয়েছে, সেটা বুঝে দ্বিতীয় ধাপে দমে রাখুন আধ ঘণ্টা। দ্বিতীয় ধাপে যেহেতু সরাসরি আঁচ লাগছে না, তাই আগুনের তাপ প্রয়োজন বুঝে দিতে হবে। এ ভাবে দমে রান্নার পর পরিবেশনের সময় ইলিশ মাছের তেলে ভাজা বাকি পেঁয়াজের কুচি উপরে ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন। দেখবেন, যেন মাছগুলো ভেঙে না যায়। ইলিশ বিরিয়ানির হাত ধরে দুই বাংলার বাঙালির মন মিলেমিশে এক হয়ে থাকুক, আজীবন।
প্রতীকী ছবি।
ক্ষীর আইসক্রিম
উপকরণ:
আমের স্বাদের ১ লিটার ক্ষীর আইসক্রিমের জন্য দুধ ১ লিটার, ছানা ২৫০ গ্রাম, কিশমিশ ১২০ গ্রাম, কাজু, পেস্তা বাদাম ১২০ গ্রাম, মাখন ৫০ গ্রাম, চিজ ৫০ গ্রাম, ওটস ৫০ গ্রাম, চিনি ৮০ গ্রাম, আমের রস ২৫০ মিলিগ্রাম, চিনাবাদাম ১৫০ গ্রাম, ডার্ক চকোলেট ১২০ গ্রাম, আম আইসক্রিম ৫০০ মিলিগ্রাম।
প্রণালী:
ভাল করে ধোয়া পাত্রে দুধ জ্বাল দিন। দুধ ঘন হলে ছানা, কিশমিশ, কাজু-পেস্তা বাদাম, অর্ধেক মাখন, ওটস, চিনি, চিনাবাদাম একসঙ্গে ঢেলে মাঝারি আঁচে ২০ মিনিট ফোটান। ওটস এবং চিনির কারণে দুধ ঘন হয়ে যাবে। তখন আমের রস দিতে হবে। আবারও ভাল করে জ্বাল দিন। এ বার অন্য একটি গোলাকার পাত্রে ঢেলে মিশ্রণটি পাখার নীচে ঠান্ডা হতে দিন। সম্পূর্ণ ঠান্ডা হলে তাতে ম্যাঙ্গো আইসক্রিম ঢেলে সম্পূর্ণটা ভাল করে মেশাতে হবে। এর পর পছন্দসই পাত্রে ঢেলে উপরে বাকি কিসমিস, বাদাম, পেস্তা, কাজু, মাখন, চিজ এবং ডার্ক চকলেট দিয়ে সাজিয়ে দিন। ডিপ ফ্রিজে ৩-৪ ঘণ্টা জমতে দিন। শেষ পাতে পরিবেশন করুন বাহারি সুস্বাদ।