পুজোর সময়ে আমি খিচুড়ি-লাবড়া ছাড়া চলে না।
দুর্গাপুজো মানেই আমার কাছে প্যান্ডেলে বসে ভোগের খিচুড়ি খাওয়া। তবে প্রত্যেকটা পুজোর স্মৃতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে বাবা। বাবার সঙ্গে ভোগ খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমি কোনও দিনই ভুলব না। এখন সারা বছর কাটে নানা রকম ডায়েট করে। কিন্তু পুজোর সময়ে আমি খিচুড়ি-লাবড়া ছাড়া চলে না। ভাবলেই জিভে জল চলে আসে!
ছোটবেলায় অঞ্জলি দিতাম নিয়ম করে। কিন্তু যখন ছোট পরদায় কাজ করা শুরু করলাম, খুব কম ছুটি পেতাম। তাই পুজোর সময়ে ঘুমিয়ে কাটাতাম। অষ্টমীর সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি করতাম বলে বাবা টেনে তুলত, অঞ্জলি দেওয়ানোর জন্য। খুব ঝামেলা করে হয়তো যেতাম। শর্ত ছিল, তারপর বাবার সঙ্গে পুজোর ভোগ খাব। সেই স্মৃতি আমার এত প্রিয়, যে পুজোর খাওয়াদাওয়া মানেই আমার কাছে ভোগের খিচুড়ি হয়ে গিয়েছে।
পুজোর খাওয়াদাওয়া মানেই আমার কাছে ভোগের খিচুড়ি হয়ে গিয়েছে।
ভোগের খিচুড়ির স্বাদই আলাদা। অন্য কোনও সময়ে এই স্বাদ পাওয়া যায় না। তাও আমি চেষ্টা করি মাঝেমাঝে। যদি কাছাকাছা কিছু বানানো যায়।
উপকরণ
গোবিন্দ ভোগ চাল ১ কেজি
মুগডাল ১ কেজি
নারকেল কোরা: ১ টা
ছোট করে কেটে তেলে ভেজে নেওয়া নারকেল: ১/২ খানা
জিরে গুঁড়ো: ১ চা চামচ
ধনে গুঁড়ো: ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়ো: ১ চা চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো: ১ চা চামচ
কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো: ১ চামচ
নুন: স্বাদমতো
চিনি: ২ চা চামচ
ঘি: ১ চা চামচ
সর্ষের তেল: ২ টেবিল চামচ
গোটা জিরে: ১ চা চামচ
তেজপাতা: ২টো
এলাচ: ৪টে
দারচিনি: ১টা কাঠি
শুকনো লঙ্কা: ২টো
কাঁচা লঙ্কা: ২টো
টোমেটো: ১টা
প্রণালী
প্রথমে শুকনো কড়াইয়ে ডাল নেড়ে নিতে হবে। তারপর হাঁড়িতে জল ফুটতে দিন।
ডাল ধুয়ে ফুটন্ত জলে ছাড়ুন। ৫-৭ মিনিট পরে চাল দিন।
দু’টো এলাচ ও দু’টুকরো দারচিনি দিন।
নারকেল কোরা, ঘি ও তেল দিয়ে ভেজে নিন।
হয়ে গেলে তাতে চাল ডালের মিশ্রণে দিয়ে দিন। নুন দিন। মাঝে মাঝে নাড়তে থাকুন।
ভাজা নারকেলের টুকরোও দিয়ে দিন এ বার। কাঁচা লঙ্কাও যোগ করুন।
অন্য একটা কড়াইয়ে সর্ষের তেল ও ঘি দিন। তাতে গোটা জিরে, তেজপাতা, এলাচ, দারচিনি, শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। শেষে চিনি দিন। চিনি লাল হলে পর তাতে টোমেটো দিয়ে দিন কেটে।
সামান্য নুন দিয়ে ঢেকে রাখুন। এ বার একটা বাটিতে জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো সামান্য জল দিয়ে গুলে টমেটোতে দিন। খুব ভাল করে মশলাটা কষান। তেল যখন ছা়ড়লে মশলাটা ঢেলে দিন চাল ডালের মিশ্রণে।
চাল ডাল পুরো সেদ্ধ হলে তবেই মশলা দেবেন। তার আগে নয়। এ বার ভাল করে নাড়ুন। সব মিশে গেলে গ্যাস বন্ধ করুন। ঘি ছড়িয়ে দিয়ে ঢেকে রাখুন কিছুক্ষণ। তারপর পরিবেশন করুন।