হিন্দু পঞ্জিকা মতে, প্রতি বছর কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে পালিত হয় ধনতেরস। দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে এই দিন পুজো পান কুবেরও।
আগে বাংলায় এই উৎসব উদযাপনের তেমন চল না থাকলেও ইদানীং বহু বাঙালিই ধনতেরস পালন করেন। শুধু লক্ষ্মী বা কুবের নয়, এই দিনে পুজো করা হয় বিষ্ণুর আর এক রূপ ধন্বন্তরিকেও।
প্রচলিত বিশ্বাস বলে, এই ধনতেরসের দিনে কিছু নির্দিষ্ট মিষ্টি বাড়িতে বানালে সুখসমৃদ্ধি আসে খুব তাড়াতাড়ি। কথিত, লাড্ডু, হালুয়া ও পঞ্চামৃত বানিয়ে দেবী ধনলক্ষ্মীকে অর্পণ সৌভাগ্য লাভ হয়।
আবার অনেকের মতে, ধন্বন্তরীকে হলুদ ও কুবেরকে সাদা মিষ্টি অর্পণ করলে ঘরে সুখ-সমৃদ্ধি ফিরে আসে।
সব মিলিয়ে কয়েকটি মিষ্টি আছে তালিকায়, যা ধনতেরসের দিনে বানানো শুভ বলেই মনে করা হয়। জেনে নিন, সেগুলি কী কী।
হালুয়া: হালুয়া উত্তর ও পূর্ব ভারতের খুব জনপ্রিয় একটি মিষ্টি পদ, যা বিশেষ করে ধনতেরসের দিনে বানানো হয়ে থাকে। গমের আটা,ঘি, দুধ এবং চিনি সহযোগে তৈরি হয় এই হালুয়া। এই মিষ্টিকে দীর্ঘায়ুর প্রতীক মনে করা হয়। তা ছাড়া বাড়িতে হালুয়া তৈরি করলে সংসার সুখের হয় বলে মনে করেন অনেকে।
বাতাসা: সাদা বাতাসা দেবী লক্ষ্মীর খুব একটি প্রিয় মিষ্টি। তাই পুজোর সময়ে মিষ্টির তালিকায় অবশ্যই বাতাসা রাখতে হবে।
পঞ্চামৃত: দুধ, দই, ঘি, মধু, চিনি– এই পাঁচ রকমের জিনিস দিয়ে তৈরি হয় পঞ্চামৃত। এই ৫টি জিনিসের রয়েছে নিজস্ব তাৎপর্য। যেমন ঘি হল শক্তির প্রতীক, মধু ঐক্যের, দুধ বিশুদ্ধতা এবং ধার্মিকতার, চিনি সুখের, এবং দই সমৃদ্ধির প্রতীক।
লাড্ডু: ধনতেরসের লক্ষ্মীপুজোয় লক্ষ্মীর সঙ্গে গণেশেরও পুজো হয়। লাড্ডু যেহেতু গণেশের প্রিয় মিষ্টি, তাই তা বানিয়েও পুজোয় দিতে পারেন। এতে লক্ষ্মী-গণেশের বিশেষ আশীর্বাদ মেলে।
নৈবেদ্য: বিশেষত মহারাষ্ট্রে এই নৈবেদ্য মা লক্ষ্মীকে অর্পণ করা হয়। গুড়ের সঙ্গে শুকনো ধনে বীজ মিশিয়ে তৈরি হয় এই নৈবেদ্য। দেবীকে তা নিবেদন করলে সুখ,সমৃদ্ধি প্রভৃতি ফিরে আসে। এ ছাড়াও আর্থিক অবস্থার উন্নতি, পরিবারে শান্তি, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু লাভ হয়। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।