প্রতীকী চিত্র
দশমীর দিন উমা বিদায় নেন পিত্রালয় থেকে। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে পাড়ি দেন মর্ত্য থেকে কৈলাসে। বিদায়বেলায় যখন মণ্ডপে পড়ে থাকে শুধু শূন্যতা আর সন্ধ্যাবাতি, বুকের ভিতর হু হু করে আট থেকে আশির। বিসর্জন সেরে বাড়ি ফিরে ঘিরে থাকে একরাশ মনখারাপ। এ সময়টায় মিষ্টিমুখে সেই ক্ষতেই যেন প্রলেপ পড়ে কিছুটা।
বাঙালির উৎসব থেকে সমাগম মিষ্টি ছাড়া কবেই বা হয়েছে! যুগ যুগ ধরে কত রকমের খাবারের আসর বসল। তবু মিষ্টির কোনও বিকল্প হল না তার কাছে। সময়ের সঙ্গে বাড়িতে তৈরি মিষ্টির একাধিপত্যে ভাগ বসিয়েছে দোকান থেকে আনা মিষ্টি। কিন্তু এ বার যদি দশমীর সন্ধেয় ফিরে আসে বাড়িতে তৈরি সেই পুরনো স্বাদ? নিজের হাতে তৈরি মিষ্টিতে তাক লাগিয়ে দিন পরিবারের সকলের। তাতেই বরং কাটুক মনখারাপ। তারই জন্য রইল ঘরোয়া কিছু মিষ্টির রেসিপি।
কাটারিভোগ
কী কী লাগবে
চমচম: ৪টি (রস ঝরিয়ে নেওয়া)
গরুর দুধ: ১ লিটার
গুঁড়ো দুধ: ১ কাপ
ঘি: ১ টেবিল চামচ
চিনি: ৩ টেবিল চামচ
কেওড়া জল: ১ চা চামচ
খোয়া ক্ষীর: ১ কাপ
কী ভাবে বানাবেন
দুধ জ্বাল দিয়ে দুই কাপ মতো করে নিন।
গরম করার পাত্রে ঘি ঢেলে তাতে গুঁড়ো দুধ দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন।
এ বার দুধ, কেওড়া জল, চিনি দিয়ে কিছু ক্ষণ ফোটান।
ক্রিমের মতো অল্প শক্ত হয়ে এলে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন।
বেলন দিয়ে এ বার মোটা রুটির মতো বেলে নিন।
এ বার এই মিশ্রণ চমচমগুলোর উপর কোটিংয়ের মতো লাগিয়ে নিন।
৪-৫ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন।
ফ্রিজ থেকে বার করে খোয়া ক্ষীর ছড়িয়ে নিন।
পছন্দমতো মোটা স্লাইস করে কেটে উপরে জাফরান, পেস্তাকুচি সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
মালাই চপ
উপকরণ
দুধ: দেড় লিটার
চিনি: ১ কাপ
গুঁড়ো দুধ: ১ কাপ
বেকিং পাউডার: আধা চা-চামচ
ঘি: ১ টেবিল চামচ
ডিম: ১টা
এলাচ: ২টো
কীভাবে বানাবেন?
দেড় লিটার দুধ থেকে ১ লিটার জ্বাল দিয়ে ঘন করে ১ কাপ করে রাখুন।
গুঁড়ো দুধ, বেকিং পাউডার, ঘি, ডিম ভাল ভাবে মেখে ১০ মিনিট রেখে দিন।
এ বার ছোট ছোট বল করে একটু চেপে মালাই মিষ্টির মতো লম্বা আকারে তৈরি করুন।
বাকি দুধে চিনি ও এলাচ দিয়ে আঁচে বসান।
ফুটতে শুরু করলেই মালাই চপগুলো দিয়ে ১০ মিনিট অল্প আঁচে রান্না করুন।
মিষ্টি ফুলে উঠলে ঘন দুধ বা মালাই ঢেলে দিন। আরও কয়েক মিনিট আঁচে রেখে নামিয়ে নিন।
পাউরুটির হালুয়া
উপকরণ
পাউরুটি: ৮ টুকরো
আমন্ড: ১০-১২টি
কাজু: ১০-১২টি
পেস্তা: প্রয়োজনমতো
কিশমিশ: ৫-৬টি (কুচি করে কাটা)
দুধ: ২৫০ মিলিলিটার
চিনি: ১ কাপ
গুঁড়ো দুধ: আধ কাপ
ঘি: ২ চা চামচ
গোলাপজল: প্রয়োজন মতো
চকোলেট চিপস: এক মুঠো
কী ভাবে বানাবেন?
পাউরুটি ছোট ছোট টুকরো করে নিন।
কাজু, পেস্তা, আমন্ড, কিশমিশ সব এক জায়গায় করে নিন।
পাত্রে সামান্য ঘি, দুধ ও গুঁড়ো দুধ ভাল করে মিশিয়ে, চিনি দিয়ে পাউরুটির টুকরোগুলি তাতে দিন।
দুধ শুকিয়ে এলে আগে থেকে ভেজে রাখা বাদাম এবং গোলাপজল দিয়ে নামিয়ে নিন।
ঠান্ডা হয়ে এলে এর উপরে চকোলেট চিপসগুলিও ছড়িয়ে দিতে পারেন।
এবার পরিবেশন করুন পাউরুটির হালুয়া।
সন্দেশ
উপকরণ
ছানা: দেড় কাপ
আইসিং সুগার: ২ টেবিল চামচ
এলাচ গুঁড়ো: সিকি চা-চামচ
কনডেন্সড মিল্ক: ৩ টেবিল চামচ
ঘি: ১ টেবিল চামচ
কী ভাবে বানাবেন?
ছানা, আইসিং সুগার, এলাচ গুঁড়া একসঙ্গে মেশান।
একটি প্যানে অল্প আঁচে ছানা ও কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে নাড়ুন।
লক্ষ রাখবেন, যেন সাদা রং থাকে, বাদামি না হয়।
একটি প্লেটে ঘি ব্রাশ করে তাতে মিশ্রণ ঢেলে চার কোনা করে জমিয়ে নিন।
ঠান্ডা হলে সন্দেশ আকারে কেটে নিন।
গোলাপজাম
উপকরণ
গুঁড়ো দুধ: ১ কাপ
সুজি: দেড় টেবিল চামচ
ময়দা: ২ টেবিল চামচ
বেকিং সোডা: আধ চা-চামচ
ঘি: ২ টেবিল চামচ
ডিম: ১টি
শিরার জন্য:
চিনি ১ কাপ
জল: ১ কাপ
এলাচ গুঁড়ো: সামান্য
লেবুর রস: ১ চা-চামচ
ভাজার জন্য: তেল
কী ভাবে বানাবেন?
গুঁড়ো দুধ, সুজি, ময়দা, বেকিং সোডা একসঙ্গে মিশিয়ে ঘি ও ডিম দিয়ে ভাল ভাবে হাত দিয়ে মেশান।
এ বার ছোট ছোট বল তৈরি করুন।
প্যানে তেল গরম করে বলগুলি তেলে ছেড়ে দিন।
সোনালি রং না হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
চিনির শিরায় এর পরে ভাজা বলগুলি ঢেলে দিন।
১ ঘণ্টা শিরায় ডুবিয়ে রাখুন।
এই প্রতিবেদনটি আনন্দ উৎসব ফিচারের একটি অংশ।