একেবারে কুচকুচে কালো রঙের কেক। নাম ব্রুকলিন ব্ল্যাকআউট কেক। প্রস্তুতকারকের নাম এবিনজার। অদ্ভুত এই কেকের নামের সঙ্গে জুড়ে আছে ইতিহাস। বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস।
তখন বিশ্বযুদ্ধ চরমে পৌঁছেছে। এই সময়ে আমেরিকার ব্রুকলিন শহরের কয়েক জন বাসিন্দা ঠিক করলেন, তাঁরা ব্ল্যাকআউট ঘটাবেন শহর জুড়ে। অর্থাৎ সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হবে। অন্ধকার করে দেওয়া হবে গোটা শহর।
উদ্দেশ্য, নিজেদের নৌবাহিনীকে রক্ষা করা। শহরের সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হলে জার্মান যুদ্ধবিমান বা সাবমেরিন বুঝতে পারবে না, কোথায় শহর শেষ হয়েছে আর জল শুরু হয়েছে। তা হলেই আর নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে বোমা ফেলা যাবে না।
শহরের অধিকাংশ মানুষ রাজি হলেন বটে, কিন্তু অন্ধকার বলতে কতটা অন্ধকার— তা সবাইকে বোঝানো মুশকিল হয়ে পড়ল।
কেউ হয়তো ছোট আলো জ্বেলে রাখলেন বাড়িতে, কেউ বা রাস্তায় আলো দিয়ে রাখলেন। তাতে লাভের লাভ কিছুই হওয়ার নয়।
কিন্তু ব্রুকলিনবাসীকে বোঝানো দরকার, কতটা অন্ধকার দরকার। কিছু স্বেচ্ছাসেবী এগিয়ে এলেন। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাবেন, কতটা অন্ধকার চাই। কিন্তু হাতের কাছে একটা ‘রেফারেন্স’ থাকলে ভাল।
আর তাতেই এগিয়ে এলেন আর এক জন। এবিনজার বেকারির মালিক। বানিয়ে ফেললেন কুচকুচে কালো কেক। নাম দেওয়া হল ‘ব্ল্যাকআউট কেক’।
স্বেচ্ছাসেবকরাও সবাইকে বলতে শুরু করলেন, এবিনজারের দোকানের ব্ল্যাকআউট কেকের মতো অন্ধকার চাই। ব্রুকলিনে নেমে এল ব্ল্যাকআউট। বাঁচল নৌবাহিনী।
এহেন ঐতিহাসিক কেকটি অবশ্য আজ আর পাওয়া যায় না। এবিনজার বেকারি সত্তরের দশকে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে।
তবে শহরে ব্ল্যাকআউট কেক নামে অন্য দোকানের কেক পাওয়া যায়। সেগুলিও সুস্বাদু। তবে আদি যুগের কেক নয়। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।