আবার নজরে সারা আলি খান! তাঁর হলদে টপে কোনও নতুনত্ব না থাকলেও পা খোলা ছেঁড়া জিনসের উষ্ণতা সকলের নজর কেড়েছে। শুধু সারা নন, লেডি গাগা থেকে ক্যাটরিনা কইফ বা অনুষ্কা শর্মা, ছবি প্রোমোশন হোক বা ককটেল পার্টি- রিপডজিনসের নানা কাটে ঝড় তুলছেন গোটা ফ্যাশন দুনিয়ায়।
এই ফ্যাশন স্টেটমেন্টকে নব্বইয়ের ফ্যাশনের কামব্যাক হিসেবে দেখছেন মুম্বইয়ের স্টাইলিস্ট আনাহিতা স্রফ আদজানিয়া। কথায় কথায় তিনি মনে করিয়ে দিলেন, নব্বইয়ের দশকে পপ গায়িকা শাকিরার খয়েরি রঙা রিপড জিনসে বেলি ডান্সের কথা। কিংবা খালি গায়ে, ছেঁড়া জিনসে তারুণ্যের অ্যাংগ্রি ইমেজের কথা। “নিয়মভাঙার নেশায় পাগল হোয়াটসঅ্যাপ প্রজন্মকেও তাই সবচেয়ে বেশি টানছে রিপড জিনস-ই,” বলছেন ডেনিম ক্লাবের সদস্য অশোক মলহোত্র। কারণ ভিন্ন ধারার লুক আনতে ইদানীং যে কোনও বয়সের মানুষ রিপড জিনস ছাড়া আর কিছুর কথা ভাবতেই পারছেন না।
অশোক বলেন, ‘‘ট্রাভেল করার সময় এক কাপ কফির চুমুক যতটা আরামদায়ক, ঠিক ততটাই আরাম লাগে রিপড জিনস পরলে।’’
আরও পড়ুন: উৎসবের সেলিব্রেশনে লাগুক রামধনুর ছোঁয়া
ফ্যাশন ডিজাইনার অভিষেক দত্ত বলছেন, ‘‘এখন গ্রাঞ্জ লুক-এর চল। সুতো বার করা ছেঁড়া ছেঁড়া পোশাকই এই লুকের প্রথম কথা।’’ যাদবপুরের অন্বেষা দত্তের কথায়, ‘‘আমাদের মতো কলেজপড়ুয়াদের পকেটের কথা চিন্তা করেই ফ্যাশন করতে হয়। পুরনো জিনসই তাই কাটাছেঁড়া করে রিপড জিনস বানিয়ে নিয়েছি,’’ শুধু অন্বেষাই নন, হাইরাইজ-এর ট্যাব-পাগল এই প্রজন্মের স্টেটাসে রিপড জিনসই এখন ‘ট্রেন্ডিং’। সদ্যচাকরির জগতে পা রাখা স্নেহা শর্মা বললেন, “এই করোনার সময়ে অফিস স্যালারি কেটেছে। চার দিকে ইকনমির যা হাল তাতে যদি পুরনো জিনসে কাঁচি চালিয়ে নতুন লুক আনা যায়, তার চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না, তাই বোধহয় এ বছর পুজোয় এর এত চাহিদা।’’
অভিষেক বলছেন “লেমন ইয়েলো, ফুশিয়া, পার্পেল রংগুলোর সঙ্গে অ্যাসিড ওয়াশ কালো, সাদা বা নীল রিপড জিনসের যুগলবন্দি পাল্টে দিতে পারে আপনার ব্যক্তিত্বকে।”
পুরনো জিনসই কাটাছেঁড়া করে রিপড জিনস বানিয়ে নিয়েছেন অনেকেই।
আর একটু সেক্স অ্যাপিল বাড়িয়ে তুলতে চাইলে স্কিনফিট কালো রিপড জিনস পরতে পারেন। তবে ফ্যাশন করার জন্য কিছু না জেনেশুনে রিপড জিনস পরে ফেললে চলবে না। এই ধরনের পোশাক স্থান-কাল-পাত্র বুঝে পরা উচিত,” পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। প্রেসিডেন্সির নয়নিকা যেমন জানালেন, প্রথম রিপড জিনস পরার দিনে বাবা-মা কেউই তাঁর সঙ্গে বাইরে যেতে চাননি।
ডিজাইনার আদজানিয়া বলছেন ছেঁড়া জিনস পরলে এক ধরনের অ্যাংগ্রি হার্ড লুক চলে আসে। এ ক্ষেত্রে কোনও উৎসব বা অনুষ্ঠানে রিপড জিনস পরলে সঙ্গে পরুন এথনিক কুর্তা। আর ছেলেরা পরতে পারেন ক্যাজুয়াল টি শার্ট।
আরও পড়ুন: পায়ে পায়ে মিডি প্রেম!
এ বছর পুজোয় পাতাসহ ফুলেল নকশা, সিকোয়েন্সের কাজ ইত্যাদি বেশি দেখা যাচ্ছে। জিনসের কাটা জায়গাটার ফাঁকটা বেশি বড় হলে সুতো রেখে দেওয়া হচ্ছে অথবা অন্য রঙের বাড়তি একটা কাপড় লাগিয়ে করা হচ্ছে বিশেষ নকশা। কেউ কেউ আবার সম্পূর্ণ ছকভাঙা হয়ে উঠতে হাঁটু থেকে কেটে বাদ রাখছেন কাপড়ের অংশ।
এ বার পুজোয় তাই বরং চাইলে বয়ফ্রেন্ড বদলান। জিনস নয়!