ইদানীং অর্গ্যানিক কটন বা লিনেনের পোশাকের চাহিদা তৈরি হয়েছে। ছবি সৌজন্য: সোশ্যাল মিডিয়া।
করোনার দাপটে বদলে যাওয়া জীবনযাপনে সচেতনতার ভাগটা যে খানিক বেড়েছে- চার পাশে তাকালেই তার প্রমাণ মিলছে। করোনা-সচেতনতার পাশাপাশি তাতে জায়গা করে নিচ্ছে পরিবেশ সচেতনতাও। পরিবেশবান্ধব পোশাক বা সাজের উপকরণ বেছে নেওয়াটা ইদানীং বাড়ছিলই। লকডাউনের দিনগুলোয় ঘরবন্দি জীবন সে প্রবণতাকে উস্কে দিয়েছে আরও খানিক। আর পুজোর সাজেও তাই নিশ্চিত জায়গা করে নিতে চলেছে পরিবেশ-সচেতনতা।
অন্যান্য বার এত দিনে কলকাতা চষে ফেলে পুজোর শপিং পৌঁছে যায় শেষ ধাপে। এ বছর করোনাসুরের দাপটে সে সব মাটি। কেনাকাটা যদিও বা হচ্ছে অল্পস্বল্প, তারও বেশির ভাগটাই অনলাইনে। আর সেই অনলাইন শপিং-এর সাইটে চোখ রাখলেই বদলটা চোখে পড়ছে। কমবয়সী প্রজন্মের পছন্দে ঢুকে পড়ে ‘ইকো ফ্রেন্ডলি ফ্যাশন’ এখন ক্রমশই ট্রেন্ডিং।
ডিজাইনারেরা বলছেন, পোশাকে পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের পাশাপাশি উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয় এড়ানো, ক্ষতিকর রাসায়নিক যুক্ত কাঁচামাল ব্যবহার না করা, বর্জ্য পদার্থ পুনর্ব্যবহারের মতো ব্যবস্থা গড়ে দিচ্ছে পরিবেশ সচেতন ফ্যাশনের ধারা। তা প্রচলিত করে তুলতে ক্রেতাদেরও পরিবেশবান্ধব পোশাকের চাহিদা তৈরির পাশাপাশি অল্পদিনে জামাকাপড় বাতিল না করা বা বাতিল জামাকাপড় নানা উপায়ে কাজে লাগানো অর্থাৎ ‘স্লো ফ্যাশন’-এ মানিয়ে নিতে হবে। অনলাইন শপিং সাইট বা ইন্টারনেটে জামাকাপড় রিসাইক্লিং সংক্রান্ত অজস্র ভিডিয়োই তার প্রমাণ।
আরও পড়ুন: পুজোর সাজে সঙ্গী থাকুক হাতে বোনা এই সব শাড়ি
পুজোর সাজেও অর্গ্যানিক কটন,পাঞ্জাবি ও অন্যান্য পোশাক প্রাধান্য পাবে।
ইদানীং অর্গ্যানিক কটন বা লিনেনের পোশাকের চাহিদা তৈরি হয়েছে। এই দু’টিই উদ্ভিজ্জ ফাইবার থেকে তৈরি এবং পরিবেশবান্ধব। পরিবেশবান্ধব উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বিশেষ ভাবে তৈরি সিল্ক, উল, পুনর্ব্যবহৃত পলিয়েস্টার বা নাইলনের মতো উপকরণও। সে সব কিনছেনও ক্রেতারা। ইন্টারনেটের সৌজন্যে বড় শহরগুলোতে তো বটেই, ছোট শহর বা শহরতলিতে ক্রমশ পরিচিতি বাড়ছে পরিবেশবান্ধব ফ্যাশনের।
আরও পড়ুন: কাঠ-সেরামিকের এই সব গয়নায় বাজিমাত পুজোর ফ্যাশনে
পুজোর সাজেও যে পরিবেশ সচেতন ফ্যাশনের চাহিদা তৈরি হবে, তা বোঝা কঠিন নয়। ডিজাইনার চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরা বলেন, “ক্রমশ পরিবেশ, প্রকৃতি বা জলবায়ু যে চেহারা নিচ্ছে, তাতে নিজেদের বাঁচার স্বার্থেই এখন পরিবেশ বাঁচানো জরুরি। আর তাই দেরিতে হলেও সচেতনতা বাড়ছে এবং ফ্যাশনেও জায়গা করে নিচ্ছে। তাই পুজোর সাজেও অর্গ্যানিক কটন বা লিনেনের শাড়ি, পাঞ্জাবি ও অন্যান্য পোশাক প্রাধান্য পাবে। এমনিতেও এখন করোনা পরিস্থিতিতে বাইরে থেকে ঘুরে এসেই পোশাক কেচে নেওয়াটা জরুরি। পুজোয় বেরলেও তা-ই করতে হবে। তাই নিয়মিত ধোয়াধুয়িতেও সহজে নষ্ট হবে না, রং ফিকে হয়ে যাবে না, এমন ফ্যাব্রিক বেছে নেওয়াটাই ভাল। সে ক্ষেত্রেও সুতি বা লিনেন উপযোগী। আর পুজোর সাজের রঙে প্যাস্টেল শেড বাছলে উজ্জ্বলও দেখাবে, রংগুলো তাড়াতাড়ি ফিকে হওয়ার আশঙ্কা কম।”