মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টি পুজোর আনন্দে সত্যিই জল ঢালবে কি না সে বিতর্ক শিকেয় রেখে এখন সকলে ব্যস্ত কোন সময়ে কী রকম সাজে তাকে সবার চোখে সেরা দেখাবে। পুজোর তুঙ্গ মুহূর্তের সাজগোজ নিয়ে টিপস দিলেন টলিউডের কস্টিউম ডিজাইনার অয়ন হোড়।
নিত্য দিনই আমরা ‘বিলিতি ধরনে হাসি, বিলিতি ধরনে কাশি’। তবে পুজোর সময় খাঁটি বাঙালি হওয়ার জন্য মনটা আকুপাকু করে। তাই শর্টস বা বারমুডায় স্বচ্ছন্দ দামাল কিশোর পাজামা পাঞ্জাবি পরে লাজুক মুখে কোলাপুরি চপ্পল পায়ে প্যান্ডেলের দিকে পা বাড়ায়। জিনস ছাড়া চলে না এমন মেয়েরা দিব্য শাড়ির আঁচল সামলাতে সামলাতে কস্টিউম জুয়েলারিতে সজ্জিত হয়ে আলোর মতো আভা ছড়াচ্ছে।
আসলে পুজোর ক’টা দিনে কিশোর-কিশোরী থেকে তাদের দাদু-ঠাম্মা, সকলেরই পছন্দ ট্র্যাডিশনাল সাজসজ্জা। অনভ্যস্ত হলেও শাড়ি আর ধুতি পাঞ্জাবির ফ্যাশন এ বারেও ইন। তবে অনেক ছেলে ধুতির বদলে পাজামা কিংবা জিনসের সঙ্গে কুর্তা, একটু বেশি ফ্যাশন করতে হলে সঙ্গে স্টাইলিশ উড়নিও নিচ্ছেন। কানে স্টাড গলায় সরু চেন আর কমফর্টেবল স্নিকার কিংবা ফ্যাশনেবল চটি জুতো পরে প্যান্ডেল হপিং করে বেড়াতে পারেন অনায়াসে। পুজোর সাজে জিনস খুব মানানসই না হলেও অনেকে হাঁটাচলার সুবিধের জন্যে জিনস পতে চাইলে উজ্জ্বল রঙে প্রিন্টেড ফুলস্লিভস শার্ট পরলেও সবার মাঝে স্টাইলিশ হয়ে উঠতে পারবেন সহজেই। অষ্টমী অথবা নবমীর রাতে ডিজাইনার শেরওয়ানি দারুণ গর্জাস লুক দেবে। তবে যে পোশাকই বেছে নিন না কেন, উজ্জ্বল রং আর ফিটিংসের সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক ব্যাপারটাও মাথায় রাখতে হবে। বেশি রংচঙে আর টাইট পোশাক কিংবা মোটা সিন্থেটিক কাপড়ের পোশাক নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেরই এড়িয়ে চলা উচিত।
আরও পড়ুন: পুরুষ-মনে আলো জ্বালুন সিকুইনের হাত ধরে! পুজোর ফ্যাশনে রাখুন এটাও
কিশোরী থেকে তরুণী, সকলেই পুজোর একটা দিন শাড়ি পরতে চান। হালকা শাড়ির সঙ্গে ডিজাইনার ব্লাউজ আর একটু অন্য রকম ড্রেপিং করে শাড়ি পরে ভিড়ের মাঝে স্বতন্ত্র থাকা যায়। মরাঠিদের মতো করে কোঁচা আর কাছা দিয়ে, অথবা খাসি স্টাইলে দু’দিকের কাঁধে ব্রোচ লাগিয়ে শাড়ি পরলেও এক অন্য রকম স্টাইলে সুন্দর দেখাবে। তবে শুধু পোশাক পরলেই হল না, ঠিক ভাবে ক্যারি করতে না পারলে পুরো সাজই মাঠে মারা যাবে। বৃষ্টির সম্ভাবনায় অনেকে শাড়ি পরতে ইতস্তত করছেন। তাঁদের জানাচ্ছি, যদিও পুজোর সঙ্গে শিফন শাড়ি যায় না, তবু বৃষ্টি হলে ট্রাডিশনাল ডিজাইনার ব্লাউজের সঙ্গে শিফন শাড়ি পরতে পারেন অনায়াসে।
আরও পড়ুন: কাঞ্জিভরমের জৌলুস কমিয়ে এই পোশাকই হতে পারে পুজোর শো স্টপার!
এ বারে রংবেরঙের লং ড্রেস সকলেরই পছন্দ। সুন্দর ডিজাইন আর কমফর্টেবল এই পোশাকে অল্পবয়সী থেকে মাঝবয়সী সকলকেই দেখতে ভাল লাগে। এই ড্রেসের আর এক সুবিধে বড় ঝোলা পকেট। পার্স, মোবাইল সমেত টুকিটাকি অত্যাবশ্যকীয় জিনিস পকেটে পুরে স্লিং ব্যাগ ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়ানোয় মজা আছে। ঠাকুর দেখতে বেরলে সঙ্গে একটা ব্যাগ রাখতেই হয়। অন্য পোশাকের সঙ্গে স্লিং ব্যাগ গেলেও শাড়ির সঙ্গে মানানসই বটুয়া ব্যবহার করা যায় সহজেই। কস্টিউম জুয়েলারির ফ্যাশন এ বারে দারুণ চলছে। কড়ি, সুতো, জার্মান সিলভার সমেত নানান জিনিসের অভিনব ডিজাইনের কস্টিউম জুয়েলারির সঙ্গে শাড়ি বা ড্রেস দারুণ মানানসই। পুজোর দিনে মাঝবয়সী মহিলাদের শাঁখা পলা-সহ সোনালি গয়নার সাজও অভিজাত লুক দেয়। তাই রুচিশীল সেজে আনন্দে কাটান পুজোর বাকি দিনগুলো।