ব্লাউজের নয়, টপের সঙ্গে পড়ুন শাড়ি
পুজো মানেই মেয়েদের সাজগোজ নিয়ে একটা বাড়তি ভাবনা চলে আসে। মানে, পুজোতে নতুন কিছু করে দেখাতেই হবে। কিন্তু ঠিক কী পরব? সে বিষয়টা পরিস্কার নয়। ড্রেস বা ওয়ান পিস এ বারের পুজোর ট্রেন্ড। এখন বা সাবেক— সাদা রং চিরকালই খুব কনটেম্পোরারি। প্যাস্টেল শেড বা প্রিন্ট প্যাচ করে ড্রেস পরা যেতে পারে। টিনএজারেরা যেমন নি লেংথ পরতে পারে আবার চল্লিশোর্ধ যাঁরা, তাঁরাও বিলো নি লেংথ, ফ্লোর লেংথ পরতে পারেন। ড্রেস প্যাটার্নে লুজ ফিটেডেরই এখন চল। তবে ট্রেন্ড হলেও মানাচ্ছে না এমন কিছু পরবেন না।
সাহসী লুক
পুজোতে একটু সেক্সি লুক কে না চায়! সে রকম সাহসী হতে চাইলে ব্যাকলেস বা হল্টার কাট ড্রেস পরতে পারেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন তা আপনার ব্যাক্তিত্বকে ছাপিয়ে না যায়। আপনার ওজন, উচ্চতা, গায়ের রং সবকিছুর সঙ্গে যায়, এমন পোশাকই বাছবেন।
বডি স্ট্রাকচার
নিজের শরীরের কোনটা পজিটিভ প্রোফাইল, কোন বিষয়টা নেগেটিভ, সেই বুঝে ড্রেস বাছুন। এমন একটা ড্রেস পরলেন যাতে নিজের দেহের গঠনই বদলে গেল হুবহু। এমন হলে সেই পোশাক না বাছাই ভাল।
আরও পড়ুন: পার্লারে আর নয়, এ সব উপায়ে চুলে হাইলাইট করুন নিজেই
ফ্যাব্রিক
প্যাচপেচে গরমে কলকাতায় দুর্গাপুজো হয়। তাই খাদি বা জামদানির নরম কাপড়ে শাড়ি বা ড্রেস বাছুন। পুজোয় বাঙালি-অবাঙালি অনেকেই শাড়ি পরেন। সে ক্ষেত্রে কটন, খাদি, হ্যান্ডলুমের শাড়ি পরতে পারেন। আজকাল নরম জামদানি আর নরম তসর খুব উঠেছে। এ ছাড়াও এ বার হান্ড্রেড ফিফটি কাউন্টের জামদানি শাড়ি খুব জনপ্রিয়।
মোটিফ
এখন প্রিন্টে যেমন নানা মোটিফের চল, তেমনই শাড়িতেও সেই ধারা আসছে। আমি প্রিন্টিংয়ে যেমন সাদা খাদির উপর মৌমাছি, ফড়িং, চশমা, বেবি প্রিন্ট বা জামদানি মোটিফের প্রিন্ট আমরাও রাখছি। তবে বেশি উজ্জ্বল রং পরবেন না। সলিড কালারের শাড়ি পরুন, সঙ্গে সরু এক চিলতে পার। লুকটাই বদলে যাবে। হ্যান্ড ওয়ার্ক বা এমব্রয়ডারি কাজ সকলেই পছন্দ করছেন। তবে সেটা সিল্ক না হয়ে খাদি বা কটনের উপর হলে আরামদায়ক হয়।
শাড়ি ড্রেপিং
এ বার পুজোয় পেটিকোট ছাড়া শাড়ি পরুন! চমকাবেন না। জিনস, জেগিনস দিয়ে শাড়ি পরে দেখুন আপনার স্টাইল স্টেটমেন্টাই বদলে যাবে। শাড়ির সঙ্গে বুট পরতে পারেন। কোমরে বেল্ট পরতে পারেন। আঁচল ঘুরিয়ে কোমরে গুঁজে দিলেন। কে বলেছে শাড়ির আঁচল কাঁধেই রাখতে হবে? সবাই শাড়ির সঙ্গে গয়না পরেন। ধরুন, আপনি একেবারেই গয়না পরলেন না। হাতে লেদারের উপর হ্যান্ড এমব্রয়ডারি করা ব্যাগ নিলেন। চমক আপনার ভাবনাতেই আছে। সে ভাবেই সাজান নিজেকে।
আরও পড়ুন: পুজোর সময় এই ক’টি নিয়ম মেনে চলুন, কাজল-আইলাইনার স্মাজ করবে না কিছুতেই
ব্লাউজ
শাড়িকে একঘেয়ে ব্লাউজের মধ্যে দিয়ে আর দেখার দরকার নেই। ক্রপ টপের সঙ্গে শাড়ি পরা অভ্যেস করুন। সেখানে ক্রপ টপ ইন্দো ওয়েস্টার্ন বা ওয়েস্টার্ন লুকে। এখানেও যদি ব্যাকলেস, নুডল স্ট্র্যাপ, পিঠখোলা শুধু নট বা হল্টার ক্রপ টপ পরতে পারেন তাতে জমে যাবে অষ্টমী বা নবমীর শারদ রাত। আবার এই ক্রপ টপ পালাজো জিনস বা হট প্যান্টের সঙ্গে টিম আপ করতে পারেন। এখন এক পোশাকের টিমিং আপে অন্য লুক দেওয়ার চল। সেই ধারা পুজোতেও থাকুক।
এখন পিঠে কাজ করা বিভিন্ন মোটিভের ব্লাউজের প্যাটার্ন খুব ছড়িয়েছে। তবে না বুঝে পিঠে কাজ করা বা আঁকা ঢাউস কিছু পরে বসবেন না। সেটা কিন্তু আপনার ব্যাক্তিত্বকে নষ্ট করবে। ফ্যাশনের আগে মনে রাখবেন, অনেক অর্থের বিনিময় পোশাক কিনলেই হলো না। কম দামেও নিজের স্টাইল তৈরি করুন। আরেক জন পরছেন বলেই আমাকেও পরতে হবে এই জায়গা থেকে সরে আসুন।
গয়না
এখন কাগজের গয়না, কড়ির গয়না, বড় লকেটের গয়নার চল। ছোট হালকা গয়নাও কিন্তু আপনার সম্মোহন জাগিয়ে তুলতে পারে। কলকাতায় পকেটসই দামে প্রচুর গয়না কিনতে পাওয়া যায়, সেগুলো পরুন। গলায় ভারী কিছু পরলে কানে খুব হালকা পরুন বা পরবেন না। আবার কানে ভারী দুল পুলে শুধু দুলই পরুন। সব ভারী গয়নার সঙ্গে ভারী কাঞ্জিভরম পরে ফেললেই তা কিন্তু ফ্যাশন নয়। বরং রেবনোর আগে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখুন নিজেকে কেমন দেখাচ্ছে। বরং খুব হালকা সাজের মাঝে কেবল মাত্র একটা বড় আংটি পরেও আলাদা হয়ে উঠতে পারেন।
মূল কী কী মনে রাখবেন
পিঠে চর্বি থাকলে ব্যাকলেস নয়।
পেটে চর্বি হলে প্যারালাল আর অ্যাসেমেট্রিক টপ পরুন।
বড় আয়নায় পুরো সাজ দেখে তবেই বাইরে বেরোবেন।
পা সরু হলে ও শরীরের নীচের ভাগ উপরের ভাগের তুলনায় খাটো হলে লুজ ফিটেড পরুন। কোমর থেকে ফ্রিল দেওয়া কিছু পরুন।
পিঠে চর্বি থাকলে ব্যাকলেস নয়।
পেটে চর্বি হলে প্যারালাল আর অ্যাসেমেট্রিক টপ পরুন।
বড় আয়নায় পুরো সাজ দেখে তবেই বাইরে বেরোবেন।
পা সরু হলে ও শরীরের নীচের ভাগ উপরের ভাগের তুলনায় খাটো হলে লুজ ফিটেড পরুন। কোমর থেকে ফ্রিল দেওয়া কিছু পরুন।
ছবি : প্রতিবেদক