আকাশের মুখ যতই গোমড়া থাকুক, ক্যালেন্ডার মেনে বাঙালির মনে জাঁকিয়ে বসেছে শরৎ! আপামর বাঙালি এই আশায় বুক বাঁধছে, কালো মেঘের ধূসর শেড সরে যাবে, দেখা মিলবে ঘন নীল আকাশের। প্রকৃতি অনিশ্চিত, কিন্ত সাজগোজের ব্যাপারে ‘নো কম্প্রোমাইজ’। আধুনিক ট্রেন্ড মেনে আবহাওয়া অনু্যায়ী জামাকাপড় বাছছে সবাই।
পুজোর মধ্যেও এখন প্যাচপেচে গরম থাকে, তাই পুজোতে দিনের বেলায় সবার পছন্দ সুতির পোশাক। নানা ধরনের কাট ও ডিজাইনে কাপড়ের উৎকর্ষতায় দিন ফিরেছে সুতির। সুতি সম্পর্কে চলতি ধারণা ভেঙে দিয়েছে ‘সোহাগ’। সোহাগ হল এক বেসরকারি সোসাইটি-র একটি ‘ওম্যান এম্পাওয়ারমেন্ট প্রজেক্ট’ যেখানে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা তফসিলি জাতি ও উপজাতি শ্রেণির মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের ‘সোহাগ’-এ অন্তর্ভুক্ত করে, তাঁদের উপার্জনের ব্যবস্থা করা হয়।
যে কোনও উৎসব, সে পুজো হোক বা পার্টি থেকে বিয়ে বাড়ি— সুতির পোশাক বাজিমাত করতে পারে অনায়াসে। ‘সোহাগ’-এ সুতির উন্নত মানের খাদি, মলমল, কলমকারি, অজরখ, ইক্বত, সম্বলপুরি, জুট, লিনেন, তেলিয়া এমনকি গামছা দিয়েও তৈরি হচ্ছে অভিনব সমস্ত ডিজাইন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রয়েছে জাম্প সুট কিন্ত একটু অন্য ভাবে; উইথ এ টুইস্ট— ‘ধুতি জাম্পস্যুট’ বা বাংলার নিজস্ব খেশের তৈরি ওয়ান শোল্ডার/ অফ শোল্ডার ড্রেস এবং স্ট্রেট প্যান্ট! কাঞ্জিভরমের জৌলুস কমিয়ে দিতে পারে খেশের এই জাম্প সুট।
ষষ্ঠীর সকালে সকলেই হালকা রং পছন্দ করেন। পরুন পিচ, দুধসাদা, বেজ, অলিভ, পেস্তা সবুজ এ সব মোলায়েম শেডের টপ, স্মার্ট কাট কুর্তি, নি লেংথ ড্রেস। সঙ্গে থাকছে ডাব্বু-বাগরু, পেজলি, ইন্ডিগো, এবং সলিড কালারেরও বিভিন্ন কাটের ড্রেস, ধতি প্যান্ট, স্কার্ট। টপ ও কুর্তির সাজকে আর একটু আকর্ষণীয় করতে পরা যেতে পারে সোহাগের অভিনব জ্যাকেট। এ বার জ্যাকেট আর কুর্তা যে কোনও পোশাককে হার মানাবে। রয়েছে ডাবল লেয়ার জ্যাকেট— এক দিকে প্রিন্ট, অন্য দিকে চেক বা সেলফ ওয়ার্ক সুতি। আছে প্রিন্টেড সুতির শ্রাগ! বৃষ্টির পুজোয় বেশ লাগবে।
আরও পড়ুন: গায়ত্রী দেবী, উত্তমকুমার ও রণবীর সিংহের সাজেই বাজিমাত করুন এ বার
রাতের জন্য থাকছে সম্বলপুরি, ইক্কত এর সঙ্গে হ্যান্ডলুম সুতির মিশেলে ‘সোহাগ’-এর মৌলিক কাটের দুর্দান্ত সমস্ত পোশাক। সপ্তমীতে যদিও শাড়িই সেরা, তবুও অনেকেই আজকাল পছন্দ করছেন ফিউশন পোশাক পরতে। সবেকিয়ানা মাথায় রেখে সোহাগ বানিয়েছে সেল্ফ এমব্রয়ডারি, কাঁথা কাজের ফুল লেংথ ড্রেস যাতে থাকছে বাহারি হাতা ও গলার কাট। ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় খেশের তৈরি সোহাগের বিভিন্ন কাটের কাফতান! নিজেকে অন্য ভাবে সাজাতে রুপোর গয়না দিয়ে কাফতান পড়লে ভিড়ের মাঝে সব থেকে আলাদা ভাবে চোখে পড়া যাবে , সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই!
অষ্টমীর সকালটা বরাদ্দ শুধুমাত্র শাড়ির জন্য। সেই শাড়ির সাজকেই আরও নজরকাড়া করতে সোহাগ বানিয়েছে সময়োপযোগী নতুন ধরনের ব্লাউজ! শার্ট কলার, হল্টার নেক, বেল স্লিভ , ফ্রিল দেওয়া বা অন্যান্য কম্বিনেশনের ব্লাউজ। আর একটু সাহসী হলে ব্লাউজের পরিবর্তে পরতে পারেন দারুণ সব ক্রপ টপ বা ক্রপ শার্ট! শাড়ির সাজ নতুন মাত্রা পাবে শাড়ির ওপর লম্বা জ্যাকেট পড়লে ! অষ্টমীর সন্ধ্যার জন্য এক্কেবারে পারফেক্ট এই লং জ্যাকেট। আছে প্যাচ ওয়ার্ক ও একরঙা জ্যাকেট।
নবমীর সকাল হোক বাহারি স্কার্টের! কলার দেওয়া ফুল স্লিভ শার্টের সঙ্গে ফুল ফ্লেয়ার অজরাখ বর্ডার খাদি কাপড়ের স্কার্ট পরে হয়ে উঠতে পারেন শো স্টপার! প্যাচ ওয়ার্ক করা লং স্কার্ট সোহাগের অভিনব সংযোজন! এ ছাড়া আছে ডাবল লেয়ার স্কার্ট, গামছা স্কার্ট ইত্যাদি! সবথেকে জমকালো জামাটি তোলা থাকে নবমীর জন্য! মেরুন, ঘনও নীল, সর্ষে রং এবং অফ হোয়াইটে বুটিদার কাপড়ের অসাধারণ সব গাউন নবমীর সন্ধের জন্য পারফেক্ট!
আরও পড়ুন: পুরুষ-মনে আলো জ্বালুন সিকুইনের হাত ধরে! পুজোর ফ্যাশনে রাখুন এটাও
ছোট বলে কী ফ্যাশন থেকে বাদ?
মোটেও না। ছোটদের ত্বকের জন্য সুতির জুড়ি নেই! তাই ছোটদের পছন্দ অনুযায়ী সোহাগ বানিয়েছে অনবদ্য সব পোশাক। রয়েছে হাঁটু অবধি আধুনিক জামা, হট প্যান্ট, পেনসিল স্কার্ট, শর্ট স্কার্ট, টপ, কুর্তা, ধুতি প্যান্ট, জাম্প সুট, ডাংরি ইত্যাদি।
মানানসই গয়না ছাড়া পুজোর সাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কাপড়ের তৈরি গয়না আজকাল ‘ইন’। কলমকারি ও বিভিন্ন প্রিন্টের কাপড় দিয়ে তৈরি গলা ও কানের নজরকাড়া বাহারি সেট ও হাতের আভরণ সোহাগে বানানো হচ্ছে। আর আছে স্লিং ব্যাগ ও এনভেলপ ব্যাগ! এথনিক রুচিসম্পন্ন নকশা, উৎকৃষ্ট কাপড় ও ন্যায্য মূল্য— এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে ‘সোহাগ’-এর পোশাকগুলি তৈরি করা হয়।