পূর্ণিমার চাঁদ, শঙ্খ ধ্বনিকে সাক্ষী রেখে মা লক্ষ্মী সাদা প্যাঁচার পিঠে চড়ে আগমন করেন ধরাধামে, আশ্বিনের শেষে ঠিক কোজাগরী তিথিতে। তবে এই পুজোর বেশ কিছু নিয়ম নিষ্ঠা রয়েছে।
কথিত আছে, মা লক্ষ্মী বড়ই চঞ্চলা। তাঁকে স্থিত রাখতে হলে অবশ্যই সব নিয়ম পালন করতে হয় পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে। তা হলেই তাঁর কৃপায় ভরে ওঠে সংসার এবং সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে আমাদের জীবন।
পৌষ সংক্রান্তি, চৈত্র সংক্রান্তি, এমনকি দীপাবলিতেও মা লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়ে থাকে অনেক বাড়িতে। এ ছাড়া প্রত্যেক বৃহস্পতিবার নিয়ম করে লক্ষ্মী পুজো করা হয় প্রায় সব বাড়িতেই।
এই বছর কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো ৯ অক্টোবর, রবিবার। পূর্ণিমা তিথি ৮ অক্টোবর, শনিবার রাত ৩ টে ২৯ মিনিট থেকে ৯ অক্টোবর রাত ২ টো ২৫ মিনিট পর্যন্ত। ঘট পুজো, পটের ঠাকুর অথবা মূর্তি এনে পুজো করা হয়।
সাদা ফুল নয়, লাল, হলুদ, গোলাপি রঙের ফুল ব্যবহার করা হয় লক্ষ্মী পুজোয়। তবে লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয় শ্বেতপদ্ম ও শ্বেত চন্দন দিয়ে।
দোরে দোরে মা লক্ষ্মীর পায়ের আলপনা দেওয়া আবশ্যিক। আলপনায় আঁকা হয় মা লক্ষ্মীর পদ চিহ্ন। লক্ষ্মী দেবীর ১০৮ নাম জপ করা শুভ বলে মনে করা হয় এবং লক্ষ্মী পাঁচালি পড়া আবশ্যিক।
আসনে সাদা বা কালো কাপড় এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে ব্যবহার করুন লাল অথবা গোলাপি রঙের আসন। শ্রী লক্ষ্মী অধিক শব্দ পছন্দ করেন না। তাই ঢাক, ঢোল, কাঁসর, ঘন্টা এ ধরনের বাদ্যি বাজানো যায় না। মা লক্ষ্মীর ঘটের সামনে কড়ি রেখে পুজো করা হয়।
এই পুজোর অন্য একটি রীতি হল, পুজো শেষ হওয়ার পর সারা রাত পাশা খেলা হয়।
লক্ষ্মী পুজোয় তুলে রাখা চাল থেকে অন্য কাওকে চাল দিতে নেই।
এবার আসা যাক প্রসাদ প্রসঙ্গে। জানা যায়, পুজোর পর ঠাকুর ঘর বা মন্দিরের দক্ষিণ দিকে প্রসাদ অর্পণ করা হয়। ফল প্রসাদের পাশাপাশি চিড়ে এবং নারকেল লক্ষ্মী পুজোয় আবশ্যিক৷ বাড়ির তৈরি নারকেল, খই ইত্যাদির নাড়ু দেওয়া হয় নৈবেদ্য হিসাবে।
একটি বিশেষ বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। লক্ষ্মী পুজোয় তুলসি পাতা নৈব নৈব চ। পৌরাণিক কাহিনি থেকে জানা যায়, তুলসির সঙ্গে শালগ্রাম শিলার বিবাহ হয়। আবার নারায়ণের প্রতিভূ শালগ্রাম শিলা। অন্যদিকে শ্রী লক্ষ্মীও বিষ্ণুপত্নী। তাই এই পুজোয় তুলসির ব্যবহার হয় না।