হাওড়ার খলিশানী গ্রামের জাগ্রত দেবী বুড়িমা। যে কোনও বিপদে মানুষ ছুটে আসেন দূরদূরান্ত থেকে অভিভাবিকাসম এই দেবীর কাছে মানত করতে।
তাঁর কাছে নিষ্ঠাভরে করা কোনও মনস্কামনা ব্যর্থ হয় না কখনও। মানুষের বিশ্বাস, বুড়িমা কোনও পীড়িত, বিপদগ্রস্তকে খালি হাতে ফেরান না।
বুড়িমার এই মন্দির খুঁজে পাবেন খুব সহজে। ১৬ নং জাতীয় সড়কের পাশে খলিশানী কালীতলা স্টপেজের পশ্চিম দিকে একটু এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে বিখ্যাত এই মন্দির। জনশ্রুতি বলে, মন্দিরটি চারশো বছরেরও বেশি পুরোনো।
সেখানে কঠিন ব্যাধি সারিয়ে তোলার মানত করতে ভিড় জমান কত মানুষ! কথিত যে মায়ের আশীর্বাদেই সেরে যায় অনেক শক্ত ব্যাধি। বুড়িমার মন্দিরে মনস্কামনা পূর্ণ হয় আট থেকে আশি সবার। আর তাই তাঁর মহিমা ছড়িয়ে পড়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে।
খলিশানী ও তার আশপাশের সকল গ্রামের মানুষেরা নিজেদের পরিবারের বা কর্মক্ষেত্রে যে কোনও শুভ কাজের আগে সবার প্রথম মায়ের পুজো দিয়ে যান। বহু কালীপুজো আশেপাশে হলেও সব পুজোর আয়োজকরা প্রথমে বুড়িমার কাছে পুজো দেন। তবেই নিজেদের পুজোগুলি করে থাকেন।
আমতার জগৎপুর গ্রামে দেবীর ঘট প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্য। পরে দেবীর স্বপ্নাদেশ মেনে গৌরী নদীর তীরে শ্মশানের মধ্যে কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করে তাঁর পুজো শুরু করেন তিনি।
তখন ঘন জঙ্গলের মধ্যে বসতি ছিল না। শুধু ছিল হাড়হিম করা ডাকাতদের আখড়া, যার ঐতিহ্য এখনও বয়ে নিয়ে চলেছে এই মন্দির।
আদ্যাশক্তি হিসাবে পূজিতা দেবী কালীর জনপ্রিয় এই রূপ মাতৃ আরাধনার এক জাগ্রত নিদর্শন।