বারোয়ারি পুজো মানেই সকলে হাতে হাত মিলিয়ার উৎসবের আয়োজন থেকে উদযাপন। সেকালের কলকাতায় কিন্তু তার চল ছিল না।
তখন শুধুই হত বাড়ির পুজো, আজকের দিনে যা বনেদি পুজো হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা হলে বারোয়ারি পুজোর এই প্রচলন হল কী ভাবে? তার এত বাড়বাড়ন্তই বা কেন? ইতিহাস ফিরে দেখল আনন্দ উৎসব।
বারো জন ইয়ার অর্থাৎ বারো জন বন্ধুর হাত ধরে পুজো। তার থেকেই নাম ‘বারোয়ারি’। জনশ্রুতি বলে, গুপ্তিপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দারা একবার দুর্গাপুজো দেখতে গ্রামের জমিদার বাড়িতে গিয়েছিলেন।
তখন নাকি জমিদারের অত্যন্ত দুর্ব্যবহারের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। অপমানিত হয়ে গ্রামে ফিরে তাঁরা ঠিক করেন, আর জমিদারবাড়ির পুজো দেখতে যাবেন না। বরং নিজেরাই পুজো করবেন।
গ্রামের ১২ জন তরুণ এগিয়ে আসেন। প্রায় ২৭০ বছর আগে তাঁরাই দুর্গাপুজোর বদলে শুরু করেছিলেন শ্রী শ্রী বিন্দ্যবাসিনী জগদ্ধাত্রী দেবীর পুজো।
প্রাচীন বাংলার চিত্রপটে সেই বারোয়ারি পুজোর জয়যাত্রা শুরু।
হুগলির গেজেট, বেঙ্গল গেজেট সহ দেশের সকল সেরা সংবাদমাধ্যমে নথিবদ্ধ রয়েছে এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
১৮২০ সালের দ্য ফ্রেণ্ডস অফ ইণ্ডিয়া সংবাদপত্রে সর্বপ্রথম বারোয়ারি পুজোর এই ইতিহাস প্রকাশিত হয়।
শাক্ত ও বৈষ্ণব ধারার এক অনবদ্য মিশেল ঘটেছে গুপ্তিপাড়ার এই প্রায় তিন শতাব্দী পুরনো পুজোয়।
যদিও নানা তথ্যসূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্যোক্তাদের আর্থিক অনটনের কারণে এই প্রাচীন পুজোর অবস্থা এখন বিপর্যস্ত।