কাফতানে খোলামেলা। এ বারের পুজোর থিম এটাই। টলিউড থেকে বলিউড কাফতানে দেখা গিয়েছে অনেক তারকাকেই। উষ্ণ অলস দুপুরে ঢিলেঢালা একটি পোশাকেই বাজিমাত করতে পারেন আপনি। কিন্তু এ বারের পুজোয় কাফতান কেন? কী বলছেন ডিজাইনার?
তুর্কি ‘কাপ টন’ থেকেই এই কাফতানের উৎপত্তি, যার মানে হল শরীর আবৃত রাখার বস্ত্র। সাধারণত সব পোশাক শরীরের আবরণ। কিন্তু কাফতান বেশ আলগোছে পরে নেওয়া যায়।
ব্যস্ত জীবনে সময়ের বড় অভাব। ফলে শরীরচর্চার সময় কমেছে। তাই বলে শরীরের গঠন বা খাঁজ নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলারও দরকার নেই।
কাফতানে শরীরের গঠন স্পষ্ট বোঝা যায় না। তাই যে কোনও মাপের, যে কোনও উচ্চতার জন্যই এই পোশাক আদর্শ। তাই এর ফলে এমনই জানালেন ডিজাইনার শুভা মিত্র।
শুভা ডিজাইন স্টুডিয়োর কর্ণধার শুভা মিত্রএবং পুনম মল্লিক এ বারের পুজোয় কাফতানকেই পছন্দের তালিকায় রেখেছেন। আরামদায়ক পোশাক, সহজেই কেচে ফেলা যায় এবং অর্গ্যানিক কটনের ব্যবহার অর্থাৎ পরিবেশবান্ধবও এই কাফতান ড্রেসগুলি জানান শুভা।
আরব বা পারস্য দেশের গরমে সেই জন্যই এই পোশাক বেছে নেন নারী-পুরুষ উভয়েই। ক্রান্তীয় অঞ্চলের বাসিন্দা হওয়ায়, এখানে বছরের মধ্যে ১০ মাসই বেশ গরম। তার মধ্যে এ বছরের পুজো নিউ নর্মাল, তাই এই জাতীয় পোশাক পরলে সবাই আরাম পাবেন।
খুব ফর্মাল না হলে, প্রিন্টেড ফ্লোর লেংথ কাফতান ড্রেস পরাই যেতে পারে৷ ফ্লোরাল প্রিন্টেও কাফতান মানাবে চমৎকার।
উচ্চতায় খাটো হলে যিনি কাফতান পরছেন, তাকে খানিকটা লম্বা দেখাবে এই পোশাকে, যদি তা সঠিক ফিটিংসে বানানো যায়। আবার উচ্চতা বেশি হলে একটু কমও দেখানো যেতে পারে এতে, জানালেন শুভা।
কাফতান বলতে যদিও পা পর্যন্ত লম্বা ঝুলের পোশাকই বোঝায়, কিন্তু ফ্যাশন জগতে এই পোশাকেও ছুরি-কাঁচি চালিয়ে কেতাদুরস্ত করা হয়েছে।
কাফতান নাইটি যেখানে অনেকটাই লম্বা হয়। সেখানে গোড়ালি বা হাঁটু অবধি করা হয়েছে এই পোশাক।
কাফতান যেহেতু লম্বা ঝুলের, বিশেষত হাতার দিকেও ঝুল থাকে, তাই হাতে অনেক গয়না পরার দরকার নেই। তবে কাফতানের হাতার ঝুল ছোট হলে, হাতে গলিয়ে নিতে পারেন ব্যাঙ্গল।
কলকাতার নামী ডিজাইনার অভিষেক দত্তের কথায়, ‘‘এ বারের পুজোয় কাফতান ইন, কারণ মানুষ করোনা লকডাউন সবমিলিয়ে ছুটির আমেজে রয়েছেন। পুজোতে বেরলেও খুব একটা দূরে যাবে না। এই পোশাকটা অসম্ভব আরামদায়ক, রিসর্ট ওয়্যারের জন্য পারফেক্ট।’’
ফ্লোর লেন্থ কাফতান ড্রেসের সঙ্গে নিতে পারেন ক্লাচ। পরতে পারেন মানানসই স্টিলেটো৷এই প্রসঙ্গে সাহানা বুটিকের কর্ণধার পারমিতা বলেন, পরিবেশবান্ধব ফ্যাশনে জোর দিচ্ছি আমরা। পোশাক যাতে আরামপ্রদ হয়, সেটা দেখাই ডিজাইনারের কাজ। কাফতান ড্রেস সেই কাজটাই করছে সহজে।
সমুদ্রের সৈকতে বা পুলসাইডে বাছতে পারেন কাফতান স্টাইলের শর্ট ড্রেস। ঘুরতে গিয়ে বা শপিংয়ে জিন্সের উপরে পরতে পারেন কাফতান টপ। তাহলে আর দেরি কীসের, বেছে নিন আপনার পছন্দসই কাফতান ড্রেস। (প্রথম ১১টি ছবি ডিজাইনার শুভা মিত্রের সৌজন্যে, অন্যগুলি ফাইল চিত্র, তথ্য সহায়তা-রোশনি কুহু চক্রবর্তী)