পুজো, শাড়ি এবং বঙ্গনারীর সম্পর্ক আসলে চিরন্তন, যাকে বলে জ্যামিতির স্বতঃসিদ্ধর মতো। শারদীয়ার দিনগুলোতে আর যাই পোশাক পরা হোক বা না হোক, শাড়ি থাকবেই। সে ঘরেই হোক বা বাইরে, ঘোরাঘুরিতেই হোক বা বাড়ির পুজোয়!
সপ্তমীতে মরাঠি কায়দায় জড়ানো শাড়িতে জমে যাবে নাচ। অষ্টমীর অঞ্জলি মানেই তো লাল-সাদা তাঁত, ঘরোয়া চালের ভরপুর বাঙালিয়ানা। নবমীর রাতে থাক লেহেঙ্গার ধাঁচে পরা জমকালো কাঞ্জিভরম।
কিন্তু শাড়ি পরার তো হরেক কায়দা আছে। এক একটা দিন এক এক রকম ভাবে পরুন না এক একটা শাড়ি। এ বছর মহালয়ার পরে পুজো আসতে গোটা একটা মাস। শাড়ি পরার নানা রকম স্টাইল শিখে ফেলতে সময়টা যথেষ্ট। বিশেষত, এ বছর যেখানে বেশির ভাগ সময়টাই কাটছে বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে। কী কী কায়দায় পরতে পারেন পুজোর শাড়ি?
বাঙালি বাড়ির ঘরোয়া চাল- সাবেক শাড়িতে সাজুন ভরপুর বাঙালিয়ানায়। লালপেড়ে গরদের শাড়ি মা-ঠাকুমার মতো ঘরোয়া চালে পরা। আলগোছে জড়ানো আঁচলের গিঁটে চাবির গোছা। ফিরে আসুক পুরনো দিনের আমেজ।
টানটান কুঁচি দেওয়া- সুতির হালকা শাড়িই হোক কিংবা জমকালো ভারী কাজের শাড়ি, ঠিকমতো ভাঁজে ভাঁজে পরা আঁচল-কুঁচিতে সামলানো সহজ, দেখায়ও বেশ।
খোলা আঁচল- সামলাতে অসুবিধা না হলে শাড়ি পরুন ভাঁজহীন খোলা আঁচলে। আঁচলে অনেকটা কাজ বা ডিজাইনে চোখ টানতে কিংবা ফুরফুরে মেজাজ সাজেই ফুটিয়ে তুলতে এটাই কিন্তু সেরা উপায়।
গুজরাতি ধাঁচে সামনে আঁচল- আঁচল জুড়ে ভরাট জরি বা যে কোনও ভারী কাজ থাকলে পরতে পারেন গুজরাতি ঢঙে। গলা দিয়ে ঘুরিয়ে সামনে আঁচল করে পরার এই কায়দায় আঁচলের মাপ রাখুন নিজের উচ্চতা ও সামলানোর সুবিধা অনুযায়ী।
মরাঠি মুলগি- মরাঠিদের শাড়ি পরার ধরন বা ভাঁজ-কুঁচির কায়দা অন্য রকম। একটু বড় মাপের শাড়িতে নিপুন ভাঁজে সাজতে পারলে আপনাকেও দারুণ দেখাবে কিন্তু।
ধুতি স্টাইলে- শাড়ি পরুন ধুতির মতো করে। সঙ্গে পেটিকোটের বদলে লেগিংস। সেই সঙ্গে নাচের প্ল্যানও থাকলে আপনিই হবেন নজরকাড়া।
লেহেঙ্গার কায়দায়- ভারী কাজের শাড়ি লেহেঙ্গার মতো করে পরলেও ভাল দেখায়। সামনে একটাই কুঁচিতে শাড়ি পরে আঁচল গলা দিয়ে ঘুরিয়ে সামনে নিয়ে আসুন। ব্যস! টেনে এনে কোমরেও আটকে নিতে পারেন।
বেল্টে ডিজাইনার- শাড়িতে একটু অন্য রকম ‘লুক’ আনতে টানটান শাড়ির উপর দিয়ে পরুন একটা জমকালো বেল্ট বা কোমরবন্ধ। বেল্ট থেকে ঝোলা চেন, ঘন্টা বা ঘুঙুরের টুংটাং-এ জানান দিন আপনার উপস্থিতি।
শাড়িতে রেট্রো- বলিউড নায়িকা মুমতাজের ছবির গানগুলো মনে পড়ে? নিখুঁত ভাঁজে সত্তরের দশক ফিরিয়ে আনবেন নাকি নতুন সিল্কে? জমে যাবে কিন্তু!
স্কার্ফের আদল- সামনে আঁচল দিয়ে শাড়ি পরুন। তবে আঁচলটা গলায় জড়ান স্কার্ফের মতো করে। সঙ্গে থাক জাঙ্ক জুয়েলারি। পাক্কা আধুনিকা!
প্রজাপতি সাজে- সরু করে বাড়তি ভাঁজ দিন আঁচল ও কুঁচিতে। স্লিম দেখাবে তো বটেই, উড়ে বেড়াবেন রঙিন প্রজাপতির মতোই।
জলপরীর কায়দায়- শাড়িতে কুচির নীচের অংশটা ছড়িয়ে দিন মৎস্যকন্যার আদলে। বাড়তি ক’টা ভাঁজ আর নীচের দিকটা পিন দিয়ে আটকে দিলেই কেল্লাফতে! ছবি সৌজন্য: সোশ্যাল মিডিয়া। তা হলে? শিখে ফেলুন ঝটপট। পুজোর শাড়িগুলো পরতে হবে তো!