এ বারের পুজো অতিমারি কালে। তবু মা আসছেন বলে কথা। কী করে আর অশুভ শক্তি কড়া নাড়বে দরজায়? চারটে দিন অন্তত সব ভাল হবে। সবাইকে যথাসম্ভব সতর্ক থাকতেও বলছেন কোয়েল মল্লিক- “কোথা থেকে যে সংক্রমণ আসবে! নিজে ভুক্তভোগী তো। একটু কিছু হলেই ভয়ে কেঁপেঝেঁপে একশা!”
মল্লিকবাড়িতে অবশ্য মা দুর্গা আসবেন আচার মেনেই। এ বছর করোনা পরিস্থিতিতে পুজোয় যোগ দেবেন শুধু পরিবারের সদস্যরাই। অন্যান্য বছর আমন্ত্রিত থাকেন বাইরের বহু মানুষ। “বিশ্বাস করুন, খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু সকলের মঙ্গলের কথা ভেবে এটুকু তো করতেই হবে,” বলছেন নায়িকা।
তবে বাকি সবটুকুই থাকছে প্রতি বছরের মতো। ভবানীপুরে পুজোর চার দিন এক ছাদের নীচে চার প্রজন্ম। চার দিন নিরামিষ। রকমারি মিষ্টি। দশমীর বিসর্জনের পরে পাঁঠার মাংসের ঘুঘনি দিয়ে আমিষ দাঁতে কাটা। বদলাবে না কিচ্ছুই।
পুজো এলেই কোয়েল যেন ফিরে যান সেই ছোট্টবেলায়- “মনে পড়ে, ছোট বেলায় দালানে ঠাকুর তৈরি হত। আর আমি মাথা খেয়ে ফেলতাম সবার, ‘কবে ঠাকুর তৈরি শেষ হবে’ বলে বলে। ঠাকুর গড়া শেষ না হলে যে পুজোই হবে না!”
এ বছরটায় বেশি করে মনে পড়ছে ফেলে আসা পুজোর দিনগুলো। বললেন, “এই তো, গত বছরও দালান ভর্তি লোক। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরেই পুজোর কাজে ব্যস্ততা। আশা রাখি, মা দুর্গার আশীর্বাদে আগামী বছর আবার সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
ব্যস্ত অভিনেত্রীই পুজোর দিনগুলোয় মল্লিকবাড়ির আদুরে মেয়ে। “বিয়ের আগেও পুজোর শাড়ি, জামা-কাপড়, গয়না মা গুছিয়ে দিতেন। এখনও তা-ই। না হলেই আমি শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউজ হাতড়াই। একবার সেলাই করে ছোড়দির ব্লাউজ পড়ে নিয়েছিলাম!” হেসে ফেলেন পর্দার দুষ্টুমিষ্টি নায়িকা।
এ বছর পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে তাঁর অভিনীত ছবি, সৌকর্য ঘোষালের ‘রক্ত রহস্য’। ওটিটি নয়, বড় পর্দাতেই। এ ছবিতে কোয়েল ‘স্বর্ণজা- সাধাসিধে, ভীষণ সরল মনের এক মেয়ে। জীবনের হাজার ঘাত প্রতিঘাত যাকে বদলাতে পারে না একটুও।
স্বর্ণজা তাই মুগ্ধ করে, তৃপ্তি দেয়। “এমন মেয়ে আজকাল কোটিতেও মেলে না! আমি কিন্তু নিজেই স্বর্ণজার প্রেমে পড়ে গিয়েছি!” বলছেন বাস্তবের কোয়েল।
সেই ছোট থেকেই এটা বিশ্বাস করেন কোয়েল- মা আসছেন মানেই অশুভের বিনাশ, শুভ শক্তির জয়। মা সবার স্বপ্ন পূরণ করতেই আসছেন। এই অনুভূতিটা নিজের মন থেকে মুছতেও দেননি কোনও দিনই।
“আচ্ছা, দুগ্গা মায়ের কাছে এ বছর সবার সুস্থতা কামনার পাশাপাশি তো চাইতেই পারি বাস্তবেও ‘স্বর্ণজা’ হয়ে উঠতে? ওই রকম সরল, ভাল মনের মালকিন হতে! এমন প্রার্থনা দেবী মা শুনবেন না? প্রশ্ন কোয়েলের। একাধারে মা-মেয়ে-স্ত্রী হিসেবে, গ্ল্যামারের আলো ঘিরে থাকা টলিউড-কন্যে হিসেবেও। তথ্য সহায়তাঃ উপালী মুখোপাধ্যায়।