তাঁর রূপের জেল্লায় মুগ্ধ বহু, অভিনয়েও নজর কেড়েছেন অনেকের। সেই কাজেরই ব্যস্ততা সামলে রাজনন্দিনী সামিল আনন্দবাজার অনলাইনের পুজো শ্যুটে। পুজোর ক’দিনের নানা রকম সাজ। সঙ্গে চলল জমিয়ে আড্ডাও।
কোন সাজে শুরু পুজো? মায়ের বোধনের দিনে রাজনন্দিনীর বাছাই হালকা রঙের ফুলের নক্সা করা লিনেন ডিজিটাল প্রিন্টের শাড়ি। সঙ্গে মেরুন ব্লাউজ, রূপোর কুন্দনের গয়না। আলগোছে চোখের উপর একগোছা চুলে আনমনা সুন্দরী।
হাল্কা সাজ, তবু রাজকীয়। এই রূপ-লাবণ্য টিকিয়ে রাখার পিছনে নিশ্চয়ই বছরভরের কঠোর অধ্যবসায়। কিন্তু পুজোর চার দিন? হাসতে হাসতেই অকপট স্বীকারোক্তি— ‘‘বন্ধুদের সঙ্গে উল্টোপাল্টা খাওয়াদাওয়া তো রয়েছেই।’’
ষষ্ঠী না হয় হল! আর সপ্তমী? রাজনন্দিনীর অঙ্গে নীল রঙা বিশুদ্ধ কাঞ্জিভরম সিল্ক। সঙ্গে হাতা-কাটা ব্লাউজ ও ঝুমকো দুলের আভিজাত্য। সারা বছরের ব্যস্ততা সামলে এই সময়টুকুই তো নিজের জন্য, আপনজনের জন্যও। উৎসবের দিনেও মনের মতো সাজবে না কন্যে? তা-ও কি হয়!
সাম্প্রতিকতম ওয়েবসিরিজ ‘পায়েস’ মুক্তি পেয়েছে সদ্য। হাতে রয়েছে আরও বেশ কিছু কাজ। আত্মবিশ্বাসের ছাপও তাই স্পষ্ট। সেই আভাই কি ছড়িয়ে পড়ছে মুখের হাসিতে?
প্রেম নিয়ে প্রশ্ন সন্তর্পণে এড়িয়ে যেতে চাইছেন। কিন্তু প্রেমের গল্প ছাড়া পুজোর আড্ডা যে অসম্পূর্ণ! শেষমেশ অভিনেত্রী জানালেন, সময়ই নাকি নেই! আপাতত কাজ নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে, কাউকে ভাল লাগার অবকাশটুকুও নেই। প্রেম তো দূরের কথা। এ সবের ফাঁকেই সাজ বদলে অন্য শাড়ি।
অষ্টমীর সাজ— গোলাপি রঙের খাদি জর্জেট বেনারসী, সঙ্গে ঘিয়ে রঙের চেন দেওয়া থ্রি-কোয়ার্টার ব্লাউজ। রাজনন্দিনীর কাছে পুজোর সবচেয়ে প্রিয় এই দিনটাই। কারণ, সন্ধি-পুজো। মহিষাসুর বধের মাহেন্দ্রক্ষণ। সন্ধিপুজো নিয়ে স্মৃতিচারণে যেতেই উচ্ছ্বসিত চোখ-মুখ। রাজনন্দিনীর কথায়, ‘‘গত বছর প্রথম সন্ধিপুজো দেখি। বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলাম। এত সুন্দর করে হয় পুজোটা...’’
অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী দত্তের মেয়ে। মুখের আদলেও সেই মিল স্পষ্ট়, বিশেষত গালের টোলে। পাশ থেকে দেখলে যে কেউ মেয়েকে মা ভেবে বসতেই পারেন। বিশ্বাস হচ্ছে না? নিজের চোখেই দেখে নিন।
পুজোয় সকলেরই কোনও না কোনও অপেক্ষা থাকে। ইন্দ্রাণী-তনয়া থাকেন কীসের অপেক্ষায়? রাজনন্দিনীর কথায়, ‘‘আমাদের বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। প্রতি দিনই নিরামিষ রান্না। শুধু নবমীর দিন আমাদের বাড়িতে পাঁঠার মাংসের একটা অসাধারণ পদ হয়। মহালয়া থেকে তার জন্যই আমার পুজোর অপেক্ষা শুরু।’’
ইতিমধ্যেই বদলে গিয়েছে সাজ। নবমীর সাজে শাড়ির বদলে সিল্কের স্কার্ট ও জ্যাকেট। সোনালী রঙের লম্বা ঘেরওয়ালা স্কার্ট। সঙ্গে এমব্রয়ডারির ঘন কাজের জ্যাকেটে লাস্যময়ী। কে বলেছে লাস্যের রং লাল? রাজনন্দিনী কিন্তু ভুল প্রমাণ করেই ছাড়লেন!
শ্যুট শেষের পথে। চার দিনের চার রকমের সাজ সারা। এ বার পালা শেষ দিনের। বঙ্গতনয়ার দশমী কি লালপেড়ে সাদা শাড়ি ছাড়া চলে? তার সঙ্গে লাল টিপ ও সোনার গয়নার সাবেক সাজ। অনন্যা রাজনন্দিনী। সনাতনী সজ্জাতেও অভিনবত্বের ছোঁয়া খোলা চুলে গোঁজা গোলাপ ফুলে। সোনালী বুটির লাল হাতা-কাটা ব্লাউজে।
বোধন থেকে বরণ, নানা রূপে নানা সাজে অভিনেত্রী। চমক এল বিজয়ার সাজে। রাজনন্দিনীই, নাকি সাক্ষাৎ উমা? রূপসজ্জা: ভরত বাল্মিকী। স্থিরচিত্র: তথাগত ঘোষ। পোশাক: ইন্দ্রাণী-সর্বাণী বুটিক।